এক ভিডিওয় এভাবেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে।
হাইলাইটস
- দেশজুড়ে চলছে সম্পূর্ণ লকডাউন
- এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন বহু অস্থায়ী শ্রমিক
- নানা ভিডিওয় দেখা গিয়েছে তাঁদের হেনস্থা করছে পুলিশ
লখনউ: গত দু'দিন ধরে দেশজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে এমনটাই নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। সকলকেই বাড়িতে থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই অবস্থায় পথে বেরিয়ে পড়া মানুষদের ‘শাস্তি' দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। এমন ধরনের বহু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তেমনই এক ভিডিও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বুদাউনের। দেখা যাচ্ছে, একদল তরুণ বড় রাস্তা দিয়ে হাঁটছে পিঠে ব্যাগ নিয়ে। জানা গিয়েছে, তারা অন্য এলাকার বাসিন্দা। লকডাউন হওয়ার পর বাড়ি ফিরছে। সেই তরুণদের কোনও কথা না শুনে তাদের হেনস্থা করতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে।
করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার ত্রাণ ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর
বুদাউনের পুলিশ প্রধান একে ত্রিপাঠী জানাচ্ছেন, ‘‘যে পুলিশ কর্মীদের ভিডিওয় দেখা গিয়েছে তারা একেবারেই নতুন। এক বছর হল চাকরি পেয়েছে। সিনিয়র আধিকারিকরাও ছিলেন। কিন্তু তাঁরা অন্যত্র ছিলেন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমি ওই ভিডিওর জন্য ক্ষমা চাইছি। যা হয়েছে তার জন্য আমি লজ্জিত।''
দেশজুড়ে এমনই নানা ভিডিও সামনে আসছে। দেখা যাচ্ছে ভিন্ন রাজ্য বা জেলার কর্মীরা দীর্ঘ পথ হেঁটে বাড়ি ফিরছেন। নির্জন পথ দিয়ে কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটে তবে গন্তব্যে পৌঁছচ্ছেন তাঁরা।
বিশ্বে করোনা লকডাউনে রয়েছেন ৩০০ কোটি মানুষ! মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ২০ হাজার
এদিন সকালে দেখা মিলেছে এক শ্রমিকের। তাঁর নাম বান্টি। দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশে নিজের গ্রামে ফিরছেন তিনি। কাঁধে সন্তানকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন সুদূর গন্তব্যের দিকে।
দিল্লি থেকে তাঁর বাড়ি ১৫০ কিলোমিটার দূরে। সামান্য অর্থ আর খাবার নি।এই বেরিয়ে পড়তে হয়েছে পথে।
মঙ্গলবার দেখা মিলেছিল বিহারের এক বালকের। সে NDTV-র সঙ্গে কথা বলার সময় কেঁদেও ফেলে। দিল্লিতে থাকত ছেলেটি। সে নির্মাণকর্মী। তার না আছে আশ্রয়, না পকেটে টাকা। আন্তঃরাজ্য বাস বন্ধ হওয়ার ফলে সে পড়েছে অথৈ জলে। বাড়ি ফেরা হয়ে দাঁড়িয়েছে অসম্ভব।
প্রধানমন্ত্রী লকডাউন ঘোষণার প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে বিরোধী নেতাদেরও। করোনা সংক্রমণ রুখতে এ ছাড়া যে উপায় নেই, সেকথা মেনে নিয়েছেন সকলে।
কিন্তু এর ফলশ্রুতি দেখা গিয়েছে, অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির মানুষদের পড়তে হয়েছে বিপদে। ‘দিন আনি দিন খাই' যে মানুষগুলি অন্য রাজ্যে এসেছেন রোজগারের আশায় তাঁরা এভাবে পরিবহণ বন্ধ হওয়ার পরে পড়েছেন বড় সমস্যায়।
প্রধানমন্ত্রী সকলের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। কিন্তু বান্টির মতো মানুষদের পক্ষে রোজগার না থাকা অবস্থায় ভিন রাজ্যে পড়ে থাকা প্রায় অসম্ভব। তাঁদের পক্ষে যে মৌলিক প্রয়োজনীয়তাও পূরণ করা সম্ভব নয় এভাবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার ত্রাণ ঘোষণা করেছেন। দেশের দরিদ্রদের তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে বিশেষ একটি আর্থিক প্যাকেজ। এই সাহায্যপ্রাপ্তদের মধ্যে শহর ও গ্রামের দরিদ্র মানুষজন ছাড়াও রয়েছেন অভিবাসী শ্রমিকও।
ভারত সহ বিশ্বের নানা দেশ এই মুহূর্তে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে বিপর্যস্ত। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যায়ের হিসেবে, সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৭১,৫১৮। মৃত ২১,২৯৩। সংক্রমণ ছড়িয়েছে ১৭০টিরও বেশি দেশে।