Read in English
This Article is From Mar 28, 2020

সংক্রমণের ভয় উপেক্ষা করে দিল্লি বাসস্ট্যান্ডে হাজারও লোকের জমায়েত

সমস্ত গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে, খাদ্য, বাসস্থান, রোজগার হারিয়েছেন বহু মানুষ, হাজার কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা

Advertisement
অল ইন্ডিয়া Edited by (with inputs from ANI)
নয়াদিল্লি:

করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ভীতি, অনিশ্চয়তা, তারমধ্যেই দিল্লিতে ধরা পড়ল অন্য ধরণের ছবি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র  মোদির ডাকা ২১ দিনের লকডাউনের ফলে, খাদ্য, বাসস্থান, রোজগার বন্ধ করে উত্তরপ্রদেশ সীমানা এলাকা থেকে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন হাজারখানেক পরিযায়ী শ্রমিক। এই মারণ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখতে লকডাউন জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, সমস্ত আন্তরাজ্য বাস ও ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে, ফলে কোনও গণপরিবহন না পেয়ে হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টায় পরিযায়ী শ্রমিকরা। তবে তারমধ্যেই বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে। এদিন সকালে যোগী আদিত্যনাথ সরকার জানায়, তাঁদের তরফে ১,০০০ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওাল সরকারের তরফে ২০০ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিন সন্ধ্যায় লকডাউনের চতুর্থদিনে, এই ছবিটি শেয়ার করে এএনআই এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি।

এএনআইয়ের শেয়ার করা ভিডিওতে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষ ও মহিলাদের মুখে মাস্ক পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে, কারও মুখ আবার রুমালে ঢাকা, দিল্লির আনন্দবিহার বাস টার্মিনাসে বাসের অপেক্ষা তাঁরা।

মুখে মাস্ক এবং হাতে লাঠি নিয়ে মাইকে প্রচার করতে দেখা গিয়েছে, ভিড় সামলানোর চেষ্টা করছেনন তাঁরা। একজন আধিকারিককে ভিড় এবং নিজের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

এক শ্রমিককে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআই জানায়, “আমি একজন দিনমজুর। এখন কোনও কাজ নেই। আমরা কী করব? আমাদের জন্য সরকারের কোনও সাহায্যই পৌঁছায়নি। আমরা আমাদের গ্রামে ফিরে যাচ্ছি। যদি এখানে থাকি না খেতে পেয়ে মরে যাব”।

আনন্দবিহার বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষায় হাজারও মানুষ

গাজিপুরেও ব্যাপক ভিড় দেখা গিয়েছে, এই এলাকাটি উত্তরপ্রদেশ সীমানায়, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ব্যবস্থা করা বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে বহু মানুষকে।

Advertisement

তার আগে শ্যুট করেন রাহুল গান্ধি।

দিল্লি ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের বাসে ভিড় করতে দেখা গিয়েছে। যদি ভিডিও এর ওপর দিক দেখা যায়, তাহলে কাছেই যে মেট্রো স্টেশন রয়েছে, তার সংলগ্ন ফুটব্রিজটির দিকে তাকালে যতদূর দেখা যায় শুধুই মানুষের ভিড়।

Advertisement

একটি দিল্লি পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে ফুটব্রিজের কাছেই, সেখানে রয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা। সেখানেই মাইকে প্রচার করা হচ্ছে, এবং মুখে মাস্ক পড়া বিশাল লাইন রয়েছে।

আনন্দবিহার বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষায় হাজারও মানুষ

নিজের পোস্টে রাহুল গান্ধি বলেন, “কর্মহারা হয়ে এবং নিজেদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মুখে এসে, আমাদের লক্ষাধিক ভাই বোন বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। কোনও ভারতবাসীর সঙ্গে আমরা এই আচরণ করছি, এটা লজ্জাজনক। এর জন্য সরকারের কোনও পরিকল্পনা নেই”।

Advertisement

শনিবার ভিডিওটি ট্যুইটারে শেয়ার করে রাহুল গান্ধি লেখেন, “এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য দায়ি সরকার। কোনও নাগরিককে এই পরিস্থিতিতে ফেলা বড় অপরাধ”।

পরিকল্পনার অভাবেই সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা অস্বীকার করেছে কেন্দ্র, বলা হয়েছে, ভারতের করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপ “স্বঃপ্রণোদিত, সক্রিয়”।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্র, এবং রাজ্য সরকাগুলিকেও তাদের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল কাজে লাগাতে বলা হয়েছে, পাশাপাশি জাতীয় সড়কের রাস্তা ধারে ত্রাণ তহবিল তৈরি করতে বলা হয়েছে এবং বহু পরিযায়ী শ্রমিক যাতে সীমানা না পেরোয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে।

আনন্দবিহার বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষায় হাজারও মানুষ

যাইহোক, তিনি সতর্ক করে দেন, ভাইরাস সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে, ক্যাম্প তৈরি করতে হবে। একই আবেদন করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া, পাশাপাশি তাঁরা উল্লেখ করেন, চার লক্ষ মানুষের মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের ব্যবস্থা করা হয়েছে দিল্লি সরকারের।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, “ভাইরাস ছড়ানো রুখতে এটাই একমাত্র পথ”।

একে অপরকে চিঠি লিখে তাঁদের রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য সাহায্য চেয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং ওড়িশার ুবীন পট্টনায়েক।

(এএনআই এর তথ্য সংযোজিত হয়েছে)

Advertisement