করোনা সংক্রমণে মহারাষ্ট্রে অন্তত ৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
হাইলাইটস
- ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে ব্যাগ। কুরলায় স্টেশনের বাইরে বসে অসহায় শ্রমিকরা
- এঁদের কারও বাড়ি বিহার, কারও বাংলা, কারও বা দিল্লি
- কবে পরিবহণ পাবেন, আর বাড়ি ফিরবেন। এই আশাতেই অপেক্ষায় তাঁরা
মুম্বই: কুরলার (Kurla) লোকমান্য তিলক টার্মিনাসে ঢোকার মুখে অসহায় ভাবে বসে দুই শ্রমিক। একজনের বাড়ি বিহারে। আর একজনের দিল্লিতে। ২১ দিনের লকডাউনের জেরে শুনশান মুম্বইয়ের জনপথ। তার মধ্যেই সাহায্যের প্রতীক্ষায় বসে ওই দুই পরিযায়ী শ্রমিক। এনডিটিভি'র তরফে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ছিনতাইবাজদের খপ্পরে পড়ে খোয়া গিয়েছে ব্যাগ। তাই সর্বস্ব হারিয়ে এখন সরকারি সাহায্যের প্রতিক্ষায় ওই দুই জন। মুম্বইয়ের এক কুরিয়ার সংস্থার কর্মী আনসারির অভিযোগ, "টাকা, মানিব্যাগ সমেত ব্যাগটাই ছিনিয়ে নিয়েছে ওরা। তার ভিতরে ১০-১২ টা বিস্কুটের প্যাকেট ছিল। এখন আমি কী করব জানি না।" করুণ সুরে আনসারি বলেছেন, "শুধু আধার কার্ড আর প্যান কার্ড পড়ে আছে। খাওয়ার, টাকা কিছু নেই। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন এখানে বসে আছি। কারও ইচ্ছা হলে খাওয়ার দিলে সেটা খাই। নয়তো খিদে-তেষ্টা নিয়েই বসে আছি। এখনও কোনও সরকারি সাহায্য পাইনি।"
দিল্লি থেকে বিহার, দীর্ঘ পথ পেরিয়ে তিন শ্রমিকের বাড়ি ফেরার পথে পাশে দাঁড়াল পুলিশ
মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী লকডাউন লাগু হওয়ার আগেই রাজ্যব্যাপী ১৪৪ ধারা লাগু করেছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। গণজমায়েত রুখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরপর কার্ফু, লকডাউন ও গণপরিবহণ স্তব্ধ থাকার কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে আনসারির মতো পরিযায়ী কর্মীরা। এদিকে, আনসারির সঙ্গে লোকমান্য তিলক টার্মিনাসের সামনের রাস্তায় বসে আরও এক শ্রমিক। শহরের এক স্টুডিওতে চিত্রশিল্পী হিসেবে কাজ করেন তিনি। দিল্লির বাসিন্দা ওই শ্রমিক এনডিটিভি-কে বলেছেন, "আমার ব্যাগও ছিনতাই হয়েছে। সেখানে ৩০০০ টাকা, মোবাইল ফোন আর পরিচয়পত্র ছিল। একদিন ভোররাতে ছুরি নিয়ে কয়েকজন এসে সব ছিনিয়ে নিয়ে গেল।"
পরিযায়ী শ্রমিকরা শহরের একাধিক বাস ও ট্রেন স্টেশনে পরিবহণের অপেক্ষায়।
একই দশায় আরও কয়েকজনের কুরলার লোকমান্য তিলক টার্মিনাস এলাকায় দেখা মেলে। স্টেশনের ক্যান্টিনে কাজ করে এমন কয়েকজন পুরুষ ও মহিলাও অপেক্ষায়। পরিবহণ পেলেই বাড়ি ফিরবেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, পুলিশের নির্দেশ মেনেই একে, অপরের থেকে এক মিটার দুরত্ব মেনে দাঁড়িয়ে। তাঁরাও নিঃস্ব এবং মাথার ওপর ছাদ পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন ওই কর্মীরা।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৫০ লাখ অনুদান সচিন তেন্ডুলকরের
এদিকে, চাঞ্চল্যকর দাবি করে কেন্দ্রের তরফে চিঠি পাঠান হল রাজ্যগুলোকে। বিদেশ থেকে গত দু'মাসে ভারতে এসেছেন ১৫ লক্ষ আন্তর্জাতিক যাত্রী। কিন্তু তাঁদের পর্যবেক্ষণে বা স্ক্রিনিংয়ে গরমিল থেকে গিয়েছে। মন্ত্রী পরিষদের সচিব রাজীব গৌবা এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যগুলিকে। তাঁর মতে, এর ফলে করোনা সংক্রমণে প্রভাব পড়তে পারে। সরকারের অন্যতম বরিষ্ঠ আমলা রাজীব বৃহস্পতিবার একটি চিঠি লেখেন রাজ্যগুলিকে। সেখানে তিনি দাবি করেন, বিদেশ থেকে আগত কোভিড-১৯ আক্রান্তদের সঠিক পর্যবেক্ষণ ও মোট অবতরণের সংখ্যার মধ্যে ফাঁক থেকে গিয়েছে।