২২ দিন ধরে সরকারি স্কুলে আটকে থাকতে হয়েছে ৫৪ জন পরিযায়ী শ্রমিককে। গোটা দেশের অন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের মতো তাঁরাও বাড়ি থেকে দূরে কাজের সন্ধানে অসহায়ের মতো ঘুরছিলেন। শেষ পর্যন্ত ঠাঁই মিলেছে রাজস্থানের শিকর জেলার এই দুই স্কুলে। বিপদের দিনে আশ্রয় ও খাদ্য পেয়ে কৃতজ্ঞ শ্রমিকরা এবার প্রতিদান দিলেন। তাঁরা সকলে মিলে রং করে দিলেন দু'টি স্কুলকে। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশ থেকে কাজের সন্ধানে এখানে এসে পৌঁছেছিলেন এই শ্রমিকরা। হরিয়ানার হিসর জেলার বারওয়ালা থেকে আগত শঙ্কর সিংহ জানাচ্ছেন, ‘‘ওঁরা আমাদের এত ভাল খাবার দিয়েছিলেন— জিলিপি, ক্ষীর, চা-বিস্কুট। তাই আমরা জানতে চেয়েছিলাম আমরা কোনও ভাবে উপকারে আসতে পারি কিনা। তথন সরপঞ্চ (পঞ্চায়েত প্রধান) বললেন, তোমরা কেন স্কুলগুলো রং করে দিচ্ছ না?''
এরপরই হাতে তুলে নেওয়া রং ও ব্রাশ। শহিদ সীতারাম কুমাবৎ ও শেঠ কেএল তাম্বি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়গুলি রং করে দিয়েছেন ওই শ্রমিকরা। নতুন চেহারায় ঝকঝক করছে বাগানও। এবার স্কুলের মাঠটির পরিচর্যাতেও নেমে পড়েছেন ওই শ্রমিকরা।
লকডাউনের আগে নির্মাণকর্মী হিসেবে কাজ করতেন ওই শ্রমিকরা। লকডাউন ঘোষণার পর সারা দেশের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের মতে তাঁরাও ফিরে চলেছিলেন বাড়ির উদ্দেশে। পথে পুলিশ তাঁদের পথ আটকে এখানে নিয়ে আসে। তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন পঞ্চায়েত প্রধান ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা।
উপ জেলা শাসকের আর্জিতে সাড়া দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য স্কুলেই থাকার বন্দোবস্ত করার পাশাপাশি অতিথিদের সরবরাহ করা হয় রাজস্থানি খাবার দাবারও। এরপর নিজেদের খরচে ১ লক্ষ টাকার রং ও ব্রাশ কিনে দেওয়া হয় ওই শ্রমিকদের। তাঁরা আগেই জানিয়েছিলেন খাদ্য ও আশ্রয়ের বিনিময়ে তাঁরা গ্রামের কোনও উপকারে আসতে চান। বহু বছর পর রং হওয়াতে ভোলই বদলে গিয়েছে স্কুল ও স্কুল চত্বরের।
গত মাসে লকডাউনের ঘোষণার পর সরকারের তরফে সমস্ত রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের যেন অস্থায়ী থাকার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়। তাঁদের খাদ্য ও বস্ত্রের জোগানও যেন দেওয়া হয়।
দেশজুড়ে প্রবল বিপদে পড়তে হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। অনেকেই দীর্ঘ পথ পেরিয়ে বাড়ি পৌঁছতে গিয়ে মারাও গিয়েছে।
Reported by Harsha Kumari Singh
2216867
World
India
State & District Details
State | Cases | Active | Recovered | Deaths |
---|