পরিযায়ী শ্রমিকদের এমন দুর্দশা কেন? তামিলনাড়ু সরকার ও কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন তুলেছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট।
চেন্নাই: অসহনীয়! পরিযায়ী শ্রমিকদের এই দুর্দশা দেখলে চোখে জল আসে। এই ভাষাতেই স্বতঃপ্রণোদিত (Suo-Moto case on Migants) মামলায় রাজ্য-সহ কেন্দ্রকে পরিহাস করল মাদ্রাজ হাইকোর্ট (Madras High Court)। বিচারপতি এন কিরুবাকরণ ও বিচারপতি আর হেমলতার ডিভিশনে বেঞ্চে শনিবার এই মামলার শুনানি হয়েছে। সেই শুনানিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ তামিলনাড়ু সরকার (Tamilnadu Government) এবং কেন্দ্র। এ ভাষাতে তিরস্কার করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন বিচারপতিরা জানতে চেয়েছেন; পরিযায়ী শ্রমিকদের চাহিদা; স্বার্থ ও জীবনযাপন সুরক্ষিত করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? কেন্দ্র-রাজ্য উভয় পক্ষকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য ভিত্তিক স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে। "এটা মানব বিপর্যয়। এর চেয়ে বেশী কিছু না", এমন মন্তব্য করে কোর্ট বলেছে; "যে উদ্যম নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরছেন, সেটা দেখলে করুণা হয়। অনেকে আবার যাত্রাপথে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। প্রত্যেক রাজ্যের কর্তব্য মানবিকতার খাতিরে দুর্গত এই মানুষদের পাশে দাঁড়ানো।
চিনকেও ছাপিয়ে গেল ভারত! দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ হাজার অতিক্রান্ত
বিচারপতি এন কিরুবাকরণ ও আর হেমলতা বলেন, "গত মাসে সংবাদমাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা দেখে চোখে জল ধরে রাখা যাচ্ছিল না। এটা আদতে মানব বিপর্যয়। শনিবার কোর্টের ভর্ৎসনার পরেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই পালনিস্বামী বলেছেন, "আপনারা শিবিরে থাকুন আর সরকারি সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করুন।"
"আর কোনওদিন মুম্বই ফিরব না", শহর ছাড়ার আগে অভিমানী পরিযায়ী শ্রমিকরা
তিনি জানিয়েছেন, সরকার অন্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ততদিন পরিযায়ী শ্রমিকরা শিবিরে থাকুন। সরকার ট্রেন ভাড়া আর অন্য খরচার ব্যবস্থা করছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৫৩ হাজার শ্রমিককে বিহার; উত্তরপ্রদেশ; অন্ধ্রপ্রদেশ; পশ্চিমবঙ্গে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এদিকে; শুক্রবার কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতে এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫,২১৫! যা চিনের কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে। গত বছরের শেষ দিকে চিনে করোনা ভাইরাস প্রথম থাবা বসায়। করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যায় ভারত এখন বিশ্বের একাদশ স্থানে রয়েছে।
তবে ভারতের মৃত্যুর হার এখনও চিনের ৫.৫ শতাংশের তুলনায় ৩.২ শতাংশ, যা উল্লেখযোগ্যভাবেই বেশ ভালো। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ভারতে ২৭,০০০ এরও বেশি লোক সুস্থ হয়েছেন এই রোগকে হারিয়ে।
বিশ্বজুড়ে, ৪৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই কেবল এই আক্রান্তের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ঘটনার রিপোর্ট মিলেছে। এটি এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। মারাত্মক এই শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগে ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। রাশিয়া, যুক্তরাজ্য এবং স্পেন দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে। প্রতিটি স্থানেই দুই লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত।
চিনের শহর উহান, অর্থাৎ মারাত্মক এই ভাইরাসের কেন্দ্রস্থনে নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার কিছু ঘটনা প্রকাশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই মুহূর্তে সেদেশে ১০০ জনেরও কম মানুষ কোভিড-১৯-এর চিকিত্সাধীন। COVID-19 এর কারণে চিনে ৪,৬৩৩ জন মারা গেছেন, তবে সেরে উঠেছেন ৭৮,০০০ এরও বেশি মানুষ।