Coronavirus: লকডাউনের জেরে দেশের আর্থিক পরিস্থিতির মোকাবিলায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি
হাইলাইটস
- দেশের আর্থিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা
- প্রধানমন্ত্রী প্যাকেজ ঘোষণা করলেও বিস্তারিত বিবরণ দেননি, শুরু সমালোচনা
- কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি, শিবসেনা সহ বিরোধী দলগুলোর সমালোচনা
নয়া দিল্লি: দেশের করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতি মোকাবিলায় আর্থিক প্যাকেজ (Economic Package) ঘোষণা করেও বিরোধী দলগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। মঙ্গলবার রাত ৮টার সময় জাতির উদ্দেশে ভাষণের সময় ২০ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন তিনি (PM Modi) এবং ইঙ্গিত দেন "লকডাউন ৪" এর বিষয়েও। এরপরেই মোদি সরকারের সমালোচনায় তেড়েফুঁড়ে ওঠে বিরোধী দল কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির কোনও এককালের বন্ধু শিবসেনা। বেশিরভাগ বিরোধী নেতাদেরই মত, কীভাবে এই আর্থিক প্যাকেজ ব্যবহার করা হবে তার কোনও বিস্তারিত বিবরণই দেননি মোদি। পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান নিয়ে একটি বাক্যও ব্যয় না করায় প্রধানমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করা আর্থিক প্যাকেজটিকে কেবলমাত্র একজন কংগ্রেস নেতাই স্বাগত জানান, তিনি হলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি বলেন, "বেটার লেট দ্যান নেভার"। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা বারবার কেন্দ্রের কাছে আর্থিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্যাকেজ ঘোষণার দাবি তুলছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট তার মধ্যে অন্যতম।
ওদিকে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের উল্লেখ করেই খালাস, তার বিশদ বিবরণ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সুকৌশলে সেটি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ঘাড়ে চাপিয়ে দায় সেরেছেন। পাশাপাশি সিংভি প্যাকেজের চূড়ান্ত আকার সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এমনকী তাঁর এই সন্দেহ তিনি মহারাষ্ট্রে বন্ধু হিসাবে পাশে থাকা শরদ পাওয়ারের এনসিপির সঙ্গেও ভাগ করে নেন।
ব্রিটেনকে অনুসরণ করেই আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি
কংগ্রেস নেতা সিংভি টুইট করেন, "যদি সত্যিই, এই প্রস্তাবটি জিডিপির ১০ শতাংশ হয় তবে তা দারুণ ব্যাপার হওয়া উচিত। তবে ঈশ্বর এবং শয়তান দুজনেই প্রয়োজনে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে থাকেন, যা বাস্তবে পাওয়া যায় না। প্রাক করোনার পুরানো প্রকল্পগুলো গণনা না করে শুধুমাত্র এই পরিস্থিতির জন্য়েই জিডিপির ১০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা উচিত।"
এদিকে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি অর্থাৎ এনসিপির তরফে বলা হয় যে প্যাকেজটি "বিহারের দেখানো পথ অনুসরণ করে হওয়া উচিত নয়"।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে ভাষণকে "অসম্পূর্ণ ও হতাশাজনক" বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এরাজ্যের শাসক দলের মতে আর্থিক প্যাকেজ কীভাবে ব্যবহার করা হবে এবং লকডাউনের পরবর্তী ধাপে কী কী ঘটবে সে সম্পর্কে সঠিক কোন দিশা দেখাননি প্রধানমন্ত্রী।
"তাঁর ভাষণের বেশিরভাগ অংশই ছিল তাঁর সরকারের তথাকথিত কৃতিত্ব সম্পর্কে গর্বিত ঘোষণা। এই ২০ লক্ষ কোটি টাকা কীভাবে ব্যয় করা হবে সে সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট নির্দেশনা নেই ... তিনি লকডাউন ৪.০ সম্পর্কেও কথা বলেছেন, অথচ এর কাঠামো কী হবে তা কেউ নেই জানে না", বলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা ও সাংসদ সৌগত রায়।
আত্মনির্ভর ভারত! ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
সোমবার করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করতে বসে রাজ্যগুলির কাছ থেকে এসম্পর্কে নির্দিষ্ট পরামর্শ ও পরিকল্পনা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেই কথাই উল্লেখ করে মঙ্গলবার মোদি বলেন যে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিশদ ঘোষণা পরে করা হবে।
এদিকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেন, "আমরা কাগজের মোড়কের মধ্যে কিছু আছে তা দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু ওই প্যাকেজের ভিতরে কী আছে তা আমরা জানি না। কারণ তিনি এসম্পর্কে কোনও বিস্তারিত বিবরণ ঘোষণা করেননি। কীভাবে এই অর্থ জোগাড় হবে, সরকার কী ঋণ নেবে? তবে কী শুল্ক বাড়ানো হবে? প্যাকেজটি নিয়ে বিশদ বিবরণ শয়তান নিজের মধ্যেই রেখে দিয়েছে, যা জানার জন্য আমাদের আরও এক বা দু'দিন অপেক্ষা করতে হবে।"
শিবসেনা বলেছে যে, ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীরও উচিত ছিল রাজ্যগুলির সঙ্গে পণ্য ও পরিষেবা কর নিয়ে কথা বলা।
"তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতাভুক্ত না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কেয়ারস ফান্ড নিয়ে আগে থেকেই সমালোচনা চলছে। তার এই বিষয়েও কিছু কথা বলা উচিত ছিল", বলেন দলের মুখপাত্র মণীষা কায়ান্দে।