করোনা ভাইরাসের কারণে ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার
হাইলাইটস
- মুম্বইয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৯, দিল্লিতে ১৫২ জন করোনা আক্রান্ত। এছা
- ভাইরাসের মোকাবিলায় ভারতে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য বিশ্বব্যাঙ্কের
- বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ মিলিয়নেরও বেশি
নয়া দিল্লি:
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শুক্রবার জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। দেশজুড়ে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২,৫৪৭ জন, গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭৮। চিকিৎসার পর ১৬৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দেশের ২১১টি জেলা থেকে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে, ২৯ মার্চ এই সংখ্যাটা ছিল ১৬১, ২২ মার্চ ছিল ৭৫। বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ মিলিয়ন, মৃতের সংখ্যা ৫০,০০০। বৃহস্পতিবার ভারতে জরুরিভাবে করোনার মোকাবিলায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক অনুদান দেয়, সতর্কবার্তায় জানানো হয় বিশ্বব্যাপি মহামারী অর্থনীতিতে আঘাত হানতে পারে। এদিন সকালে জাতির উদ্দেশে ভিডিও কনফারেন্সে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের মোট ১৩টি জায়গাকে করোনার আতুঁরঘর বলে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র।
এখানে রইল ১০'টি তথ্য:
দিল্লিতে জমায়েতের ঘটনা এবং প্রায় শখানেক লোকের করোনা আক্রান্তের ঘটনায় তবলিঘি জমাতের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তাঁদের বিরুদ্ধে জনসুরক্ষা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। গাজিয়াবাদের হাসপাতাল নার্সদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়। অভিযোগ দায়েরের নির্দেশ দিয়ে পুরো ঘটনাকে “মানবতার বিরুদ্ধে শত্রু” বলে বর্ণনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। যদি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সরকারি আইনভঙ্গের অভিযোগ থাকে, তাহলে এক বছর পর্যন্ত আটক করে রাখা যেতে পারে।
এদিন সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সেখানেই, লকডাউনের সময় সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখে দেওয়ার একমাত্র উপায় হল, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা”। পাশাপাশি তিনি বলেন, “দয়া করে রাস্তায়, পাড়ার গলিতে বেরোবেন না। নিজেদের ঘরের চৌকাঠ বা ব্যালকনিতেই সীমাবদ্ধ রাখুন”। রাজ্যগুলিকে লকডাউন ভঙ্গ করা বা আধিকারিকদের হেনস্থা করায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এই ধরণের অভিযুক্তকে এক থেকে দুবছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।
মুম্বইয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৯, দিল্লিতে ১৫২ জন করোনা আক্রান্ত। এছাড়াও বেঙ্গালুরুতে ৫২, পুনে ৪৯, হায়দরাবাদে ৪৪। কাসারগোর ১১৫, কুন্নুর ৪৯ জন করোনা আক্রান্ত। উত্তরপ্রদেশের জিবি নগরে ৪৫, আহমেদাবাদ ৩৩ এবং জয়পুরে করোনা আক্রান্ত ৩২ জন। মহারাষ্ট্রের মোট ৩৩৯ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত, তামিলনাডুতে ৩০৯, কেরলে ২৮৬, দিল্লিতে ২১৯, এবং রাজস্থানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৩।
দেশের ১৪টি জায়গাকে করোনার আতুঁরঘর হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। তারমধ্যে রয়েছে দিলশাদ গার্ডেন, নিজামুদ্দিন, নয়ডা, ভিলওয়ারা, কাসারগর, পাথ্থানমিত্তা, কুন্নুর,. মুম্বই, পুনে, ইন্দোর, জব্বলপুর, আহমেদাবাদ, লাদাখ, এবং যাবৎমল।
শুক্রবার সকালে মুম্বইয়ের ধারাভীর এক চিকিৎসক(৩৫) করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই এলাকায় এই নিয়ে মোট তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। ধারাভী এলাকাটিতে এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি রয়েছে, সেখানে বাস করেন কয়েক মিলিয়ন মানুষের বসবাস।
অন্ধ্র্প্রদেশের ১৬১ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ১৪০ জন তবলিঘি জামাতের সঙ্গে যুক্ত, শুক্রবার সেখান থেকে করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ৩০ মার্চ মৃত্যু হয় তবলিগি জামাতের সঙ্গে যু্ত ৫৫ বছরের এক ব্যক্তির। তাঁর ছেলের থেকে তিনি করোনা আক্রান্ত হন, ১৭ মার্চ দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন ওই ব্যক্তির ছেলে। করোনায় মৃত ব্যক্তির ছেলে সহ ৩০ জনকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এআইআইএমএসে এক আবাসিক চিকিৎসকের শরীরে করোনা ভাইরাস পজিটিভ পাওয়া যায়। তাঁর চিকিৎসক স্ত্রীয়েরও শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে, তিনি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দুজনেরই কোনও ভ্রমণের অতীত নেই। এখনও পর্যন্ত দিল্লিতে মোট ৭ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজন সফদরজং হাসপাতালের চিকিৎসক।
২৫টি দেশের জন্য ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সাহায্য অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। ভারতে আসে তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, সেই টাকা ব্যয় হবে “উন্নত পরীক্ষা, খোঁজ পেতে, ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা, ব্যক্তিগত সুরক্ষার সরঞ্জাম এবং নতুন আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরিতে”। এমনটাই জানানো হয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কের তরফে। দক্ষিণ এশিয়ার আরও যে সমস্ত দেশ সাহায্য পেতে চলেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আফগানিস্তান ১০০ মিলিয়ন, এবং শ্রীলঙ্কা ১২৮.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৃহস্পতিবার রাজ্য এবং মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লকডাউনের পর থেকে এটাই প্রথম আলোচনা। আলোচনার বিস্তারিত জানিয়ে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বলেন, লকডাউন শেষ হলে সাধারণ মানুষের আটকে পড়া অবস্থা থেকে বের করতে একটি কমন পরিকল্পনা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ”,।
সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ মিলিয়ন পেরিয়েছে, এবং মৃতের সংখ্যা ৫০,০০০ বলে জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত দেশের মধ্যে দৈনিক মৃতের সংখ্যায় সবচেয়ে ওপরে রয়েছে আমেরিকা, মার্কিন মুলুকে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬,০০০, এমনই জানা গিয়েছে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ১,০০০ জনের।
Post a comment