করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সংক্রান্ত ১০টি তথ্য:
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর অনুষ্ঠান "মন কি বাত" অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারগুলির অবদানের কথা স্বীকার করেন। "দেশের রাজ্য সরকারগুলি এই ক্ষেত্রে বৃহত্তর ভূমিকা পালন করেছে। পরিস্থিতির দিকে সর্বক্ষণ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে ... ভারতে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অগ্রগতি কীভাবে হওয়া উচিত সে বিষয়ে আমি রাজ্যগুলির সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছি ও যোগাযোগ রেখে চলেছি। সকলেই পরামর্শ দিয়েছেন যে এই লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো উচিত। অনেক রাজ্যই ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা এই লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা আরও কিছুদিন মেনে চলবে।
এদিকে লকডাউনের কারণে ভিনরাজ্যে গিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের যাতে তাঁদের নিজেদের রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা করে কেন্দ্র, সেই আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছে যার সোমবার শুনানি। তবে ওই শ্রমিকদের করোনা টেস্ট করিয়ে তবেই রাজ্যে পাঠানো উচিত, একথাও জানানো হয়েছে ওই আবেদন।
এদিকে লকডাউনের মধ্যেই স্থানীয় এলাকায় কিছু কিছু দোকান-বাজার খোলার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। সেই যুক্তিতেই এবার অতি প্রয়োজনীয় নয় এমন দ্রব্যও যাতে তাদের বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া হয় সেই মর্মে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছে ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন ইন্ডিয়া এবং ফ্লিপকার্ট।
এদিকে বিশ্বের করোনা মৃত্যুর হারের তুলনায় ভারতের পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধন। যেখানে দুনিয়াতে ৭ শতাংশ লোকের মৃত্যু হয়েছে, সেখানে ভারতে সেই মৃত্যুর হার ৩.১ শতাংশ। এদিকে করোনা সংক্রমণ দ্বিগুণ হারে বাড়ার সময়ও আগের তুলনায় এখনও অনেক ভালো হয়েছে। বর্তমানে ১০.৫ দিন অন্তর দ্বিগুণ হচ্ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।
এর মধ্যে আশার কথা এই যে, দেশের ২৮৩ টি জেলায় করোন ভাইরাসের সংক্রমণের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, ৬৪ টি জেলায় গত ৭ দিনে কোনও নতুন করে করোনা আক্রান্তের সন্ধান মেলেনি এবং ৪৮ টি জেলায় গত ১৪ দিনে কোনও নতুন সংক্রমণ ঘটেনি।
সরকারি তথ্য অনুসারে দেশের ৬৮ শতাংশ করোনা আক্রান্তই রয়েছেম মূলত দেশের ২৭ টি জেলায়। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা এই রাজ্যগুলিতে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে ছড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ।
এদিকে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্রে ৮০ শতাংশ করোনা রোগীর শরীরেই ওই রোগের কোনও লক্ষণ সেভাবে দেখা যায়নি। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী ওই রাজ্যেই। "জাতীয় লকডাউন, ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, পরের সপ্তাহে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরপরে আমরাও এই রাজ্যে লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব"।
দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩,০০০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সে রাজ্যের দুটি হাসপাতালের কর্মী, চিকিৎসক ও নার্সরা, ফলে ওই দুটি হাসপাতাল সিল করে দেওয়া হয়েছে।
ডিসেম্বর মাসে চিনের উহান শহর থেকে গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ দুনিয়া জুড়ে মারা গেছেন; এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩ মিলিয়ন মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন ওই মারণ রোগে। এদিকে রমজান মাস শুরু হয়ে গেছে। করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই পালন হচ্ছে তার আচার অনুষ্ঠান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা "হু" জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের পর তা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষজন ফের ওই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ফলে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।