Nizamuddin: ২৪ টি রাজ্য এবং ৪ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছেন করোনা আক্রান্তরা
হাইলাইটস
- ২৪ টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা সংক্রমণ
- সমাবেশে যোগদানকারী ৭,৬০০ ভারতীয় ও ১,৩০০ বিদেশিকে চিহ্নিত করা হয়েছে
- গোটা দেশে প্রায় ৪০০ জন তবলিগি সদস্য করোনা আক্রান্ত
নয়া দিল্লি: করোনা সংক্রমণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু এখন দিল্লির নিজামুদ্দিন মসজিদ সংলগ্ন অঞ্চল। রিপোর্ট বলছে, দিল্লির ওই মসজিদের (Nizamuddin) বিপুল জমায়েতের কারণেই দেশজুড়ে করোনা আক্রান্তের (Coronavirus) সংখ্যা একলাফে প্রায় ৯ হাজার বাড়তে পারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হিসাব মতো অন্ততপক্ষে ৭.৬০০ জন ভারতীয় ও কম করে ১,৩০০ জন বিদেশি মার্চের প্রথম দিকে আয়োজিত ওই ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলেন। আর সেখান থেকেই আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ে ওই মারণ ভাইরাস। ইতিমধ্যেই ধর্মীয় সমাবেশে অংশ নেওয়া ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায় আক্রান্ত (COVID-19) হয়ে, আরও বহু মানুষের শরীরেও ওই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। কেন্দ্রের আশঙ্কা জমায়েতে উপস্থিত তাবলিগ-ই-জামাতের সদস্যদের থেকেই এবার দেশে বহু মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা ভাইরাস। দেশের ২৪ টি রাজ্য এবং ৪ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ওই তাবলিগ সদস্যদের খোঁজে চিরুণী তল্লাশি চলছে।
১ এপ্রিল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিজস্ব পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে এর মধ্যেই করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ১,০৫১ জন তাবলিগ সদস্যকে অন্য মানুষজনের থেকে পৃথক করে রাখা হয়েছে। আরও ২১ জনের শরীরে ইতিমধ্যেই করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে এবং তাঁদের মধ্যে কয়েকজন মারাও গেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, তাবলিগ-ই-জামাতের ৭,৬৮৮ জন স্থানীয় কর্মী এবং তাঁদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন তাঁদের চিহ্নিত করা গেছে, এছাড়াও ১,৩০৬ জন বিদেশিকেও কোয়ারান্টাইন করা হবে।
নিজামুদ্দিনের জমায়েতে যোগ দেওয়া ৫৪ জনকে কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, দিল্লির ধর্মীয় জমায়েতে যোগ দেওয়া যাঁদের শরীরে করোনা সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে, তাঁদের মধ্যে ১৯০ জন রয়েছেন শুধু তামিলনাড়ুতেই। এছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশে রয়েছেন ৭১ জন, দিল্লিতে ৫৩ জন, তেলেঙ্গানাতে ২৮ জন, আন্দামানে ১০, অসমে ১৩, মহারাষ্ট্রে ১২, পুদুচেরিতে ২ জন, জম্মু ও কাশ্মীরে ৬ জন এবং পুদুচেরি ও গুজরাটে ২ জন।
বুধবার দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া বলেন যে তাবলিগের নিজামুদ্দিন এলাকাটি থেকে গত ৩৬ ঘণ্টায় ২,৩৬১ জনকে অন্য এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই মসজিদের সমাবেশে যোগদানকারীদের মধ্যে কমপক্ষে ১২৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবারই মার্কাজ নিজামুদ্দিন সিল করে দেওয়া হয়, এবং সেখানে থাকা অসংখ্য মানুষকে বের করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যে সমস্ত রাজ্যের মানুষ ওই জমায়েতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের খোঁজ করা হচ্ছে। জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ উপেক্ষা করেই অসংখ্য মানুষ ৮ মার্চ থেকে ১০০ বছরের ওই পুরনো মসজিদ কমপ্লেক্সে জড়ো হয়। ২১ মার্চ, সেখানে মোট ১,৭৪৬ জন মানুষ ছিলেন, যার মধ্যে ২১৬ জন বিদেশিও ছিলেন। ওই বিদেশিদের থেকেও রাজ্যগুলোর পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
লকডাউনের মধ্যেই একটি সংস্থার গাড়িতে কলকাতা থেকে হরিয়ানা, পাকড়াও ৩১ জন
ওই মসজিদের মওলানা সাদ, জিশান, মুফতি শেহজাদ, এম সাইফি, ইউনুস, মহম্মদ সলমন ও মহম্মদ আশরাফ – এই সাত জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জানা গেছে, পুলিশ নোটিস ধরানোর সঙ্গে সঙ্গেই মওলানা সাদ ২৮ মার্চ থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছে।
দিল্লির ওই মসজিদের ধর্মীয় সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় জমান মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষজন। এমনকী মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকেও বহু মুসলমান ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নিজামুদ্দিনে আসেন। ইতিমধ্যেই প্রমাণ মিলেছে, মসজিদের ওই সমাবেশ থেকেই ব্যাপক হারে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।