সাপ থেকে ছড়াতে পারে চিনে (China) মহামারীর আকার নেওয়া করোনা ভাইরাস (CoronaVirus)। নতুন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সে দেশে শ্বাসনালীর সংক্রমণ মহামারীর আকার নিয়েছে। যার পিছনে এই করোনা ভাইরাস (২০১৯-এনসিওভি) বা উহান ভাইরাস (Wuhan Virus)। জার্নাল অফ মেডিক্যাল ভাইরোলজি প্রকাশিত সমীক্ষায় জানা গেছে, গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নিউমোনিয়ার ছদ্মবেশে এই ভাইরাস (2019-NcOV) সে দেশে ছড়িয়েছে। সংক্রমিত হয়ে তা এখন হুল ফোটাচ্ছে হংকং, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও জাপানে। বিভিন্ন রোগীর থেকে নেওয়া রক্ত ও সিরাম পরীক্ষা করে চিনের উহান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ওই জার্নাল দাবি করেছে, ২০১৯-এনসিওভি-র রিজার্ভার হিসেবে কাজ করে সাপ (Snake)। সমীক্ষায় তাদের আরও দাবি, "বন্যপ্রাণীর মাংস যে পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়, সেখান থেকে এই ভাইরাস মানবদেহে ঢুকেছে।" পাইকারি বাজার বলতে, তাদের ইঙ্গিত, যেখানে সামুদ্রিক মাছ, বাদুড়, পোলট্রি, সাপ, খামারের প্রাণী বিক্রি হয়ে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু, একে করোনা ভাইরাস নাম দিয়েছে। যার জেনেটিক নাম ২০১৯-এনসিওভি। সে ভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে, তা অন্য ভাইরাসের জিনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়েছে। এমন জানিয়ে ওই জার্নাল বলেছে, "২০১৯-এনসিওভি, বাদুড়ে পাওয়া করোনা ভাইরাস আর অন্য একটি অজ্ঞাত সূত্রের করোনা ভাইরাসের সঙ্কর জিন।"
গবেষকরা জানিয়েছেন, মানবদেহকে সংক্রামিত করা করোনা ভাইরাস, সঙ্কর প্রজাতির ভাইরাস। দুটি ভাইরাল প্রোটিন, পৃথক সূত্র থেকে মিলিত হয়ে সংক্রমণ বা রোগ হিসেবে মানবদেহে প্রবেশ করছে। অনেক গবেষণা করে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তেও এসেছেন যে, মানবদেহে সংক্রমণের আগে এই সঙ্কর ভাইরাস সাপ বহন করেছে। যেহেতু এটা সঙ্কর ভাইরাস, তাই অত্যাধিক প্রোটিনের খাতিরে আন্তঃপ্রজাতি (সরীসৃপ থেকে স্তন্যপায়ী) সংক্রমণে এই ২০১৯-এনসিওভি মহামারীর আকার নিয়েছে। বৃহস্পতিবার চিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক ঘোষণা করেছে, বুধবার পর্যন্ত প্রায় ৫৭১ জনের নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে। যার নেপথ্যে এই ভাইরাস। দেশের ২৫টি প্রদেশে ছড়িয়েছে এই নিউমোনিয়া।
সন্দেহের তালিকায় আছে আরও ৩৯৩টি সংক্রমণ, জানিয়েছে ওই মন্ত্রক। মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন ন্যাশনাল হেল্থ কমিশন জানিয়েছে, মধ্য চিনের হুবেই প্রভিন্সে এখনও পর্যন্ত ১৭টি মৃত্যুর খবর মিলেছে। মৃতদের মধ্যে ৪৮-৮৯ বয়সীদের গড় বেশি। বিদেশে একজন করে এই ভাইরাসে সংক্রামিত। সেই তালিকায় আছে হংকং, ম্যাকাউ, তাইওয়ান, জাপান, প্রজাতান্ত্রিক কোরিয়া এমনকি ইউএসও। থাইল্যান্ড থেকে তিনজনের সংক্রামিত হওয়ার খবর মিলেছে। সংক্রামিতদের স্পর্শে এসেছেন এমন ৫৮৯৭ জনকে 'সন্দেহভাজন' হিসেবে পৃথক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে প্রায় হাজার জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর প্রায় ৪৯৫০ জনের চিকিৎসা চলছে।
এই সংক্রমণ ঠেকাতে এখন আধুনিক ভ্যাকসিন কিংবা ভাইরাস- প্রতিষেধক বাজারে আনা দরকার, বলেছে ওই জার্নাল। কিন্তু সেই প্রতিষেধক ২০১৯-এনসিওভি'র কার্যকারিতা নষ্ট করছে কিনা, তা অবশ্যই আগে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার জানিয়েছে ওই জার্নাল।
দেখুন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বিশেষজ্ঞের মতামত:
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)