Coronavirus Cases: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা ভাইরাস
হাইলাইটস
- করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আকাশ ছোঁবে
- গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ওই মারণ রোগে মৃত্যু হয়েছে ৪৩ জনের
- দেশে বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪,৩৭৮
নয়া দিল্লি:
দেশে করোনা আক্রান্তের (Coronavirus Cases in India) সংখ্যা দ্রুতহারে বাড়ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক শনিবার জানিয়েছে, এই মুহূর্তে ভারতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪,৩৭৮ এ, যার মধ্যে ৪৮০ জনের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে শুধু গত ২৪ ঘণ্টাতেই দেশে নতুন করে ৯৯১ জন করোনার ফাঁদে পড়েছেন এবং ৪৩ জনের প্রাণ কেড়েছে COVID- 19। এদিক শুক্রবারই সরকার জানিয়েছে, দেশ ব্যাপী লকডাউনের ফলে অনেকটাই কার্যকরী ফল মিলছে, কেননা লকডাউনের আগে যেখানে প্রতি ৩ দিন অন্তর দ্বিগুণ হচ্ছিল আক্রান্তের সংখ্যা সেখানে বর্তমানে সেই বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমে এসেছে। এখন প্রতি ৬.২ দিন অন্তর দ্বিগুণ হচ্ছে করোনা (Coronavirus) সংক্রমিতের সংখ্যা। গোটা বিশ্বে দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষের প্রাণ নিয়েছে করোনা ভাইরাস।
দেখে নিন এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০ টি তথ্য:
এবার ভারতীয় নৌ-বাহিনীকেও আক্রমণের লক্ষ্য করল COVID- 19। মুম্বইয়ের ২১ জন নাবিকের শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ছে। ইতিমধ্যেই ওই নাবিকরা কাদের সংস্পর্শে এসেছেন সে বিষয়েও চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে ও খোঁজ চালানো হচ্ছে। বর্তমানে করোনা আক্রান্ত ওই ভারতীয় নাবিকদের মুম্বইয়ের একটি নৌ হাসপাতালে কোয়ারান্টাইন করে রাখা হয়েছে।
এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি মুম্বইয়ের ধারাভিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার নতুন করে ১৫ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে ওই এলাকা থেকে, ফলে সেখানে এখন করোনা আক্রান্ত মোট ১০১ জন ব্যক্তি। বাণিজ্য নগরীতে এখন করোনায় ভুগছেন মোট ২,০৭৩ জন। দেশের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ শহর এখন মুম্বই; আর রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। ১.২ কোটি মানুষের বসবাসের ওই শহরটি গত মাস থেকেই সম্পূর্ণ লকডাউনের মধ্যে রয়েছে।
এদিকে পুনরুদ্ধারের হার ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ক্রমশই আগের থেকে অনেক বেশি মানুষ ওই রোগ থেকে সেরে উঠছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে শনিবার সকালে এই রোগমুক্তির হার দাঁড়িয়েছে ১৩.৮৫ শতাংশ, শুক্রবার এটি ছিল ১৩.০৬ শতাংশ, বৃহস্পতিবার ছিল ১২.০২ শতাংশ, বুধবার ছিল ১১.৪১ শতাংশ এবং মঙ্গলবার ছিল ৯.৯৯ শতাংশ। শুক্রবার মোট ২৬০ জন রোগীকে করোনার হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে হাসপাতাল থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবারও, ১৮৩ জনকে সুস্থ বলে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে করোনা রোধে ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা NDTV-কে জানিয়েছেন যে, কুষ্ঠরোগের বিরুদ্ধে কার্যকরী ১টি বহুমুখী ভ্যাকসিনকে করোনা প্রতিরোধের বিষয়ে পরীক্ষা করে দেখছেন তাঁরা, কেননা ওই ভ্য়াকসিনটি মানবদেহে রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। "ডিসিজিআই (Drug Controller General of India) এটির বিষয়ে অনুমোদন দেওয়ার পরেই আমরা কুষ্ঠরোগের বিরুদ্ধে সফলভাবে ব্যবহার করা এই মেগাওয়াট ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক ব্য়বহার শুরু করেছি", জানান কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের মহা নির্দেশক ডঃ শেখর মাণ্ডে।
এদিকে দুবাই থেকে ফিরে এসে শরীরে করোনা ভাইরাসের কোনও লক্ষণ দেখা না গেলেও, কান্নুরের এক ব্যক্তি প্রায় একমাস পরে ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে। তাঁর শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ায় তাঁকে কোয়ারান্টাইন করে চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে। এই উদাহরণ তুলে ধরে কেরল সরকার দাবি করেছে যে করোনা আক্রান্ত কিনা তা জানার জন্যে বর্তমানের ১৪ দিনের সময়কালকে আরও বাড়িয়ে ২৮ দিনের কোয়ারান্টাইন পিরিয়ড করা উচিত।
লকডাউনের মধ্যেই, স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ কর্মীরা মানুষের আক্রমণের লক্ষ্য হচ্ছেন। বিহারে, বৃহস্পতিবার থেকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্য কর্মীদের উপর হামলার এই জাতীয় চারটি ঘটনা সামনে এসেছে। এর মধ্যে আবার ঘটেছে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের পুরনো এলাকা বিহার শরীফে। বুধবার, প্রতিবেশী রাজ্যে উত্তরপ্রদেশের মুরাদাবাদেও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি দলের উপর হামলা হয়।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই ভারতে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্য়া শিখর ছুঁতে পারে, তবে তারপর থেকেই ধীরে ধীরে এই সংখ্যা হ্রাস পাবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে।
২০ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধীরে ধীরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাজ শুরু করার অনুমতি দেওয়া হবে। বেশ কিছু শিল্প ক্ষেত্রে কাজ শুরু করার অনুমতি পাওয়া যাবে ওই সময় থেকে। ছাড় থাকছে কৃষিকাজ ও কৃষি বিপণন এবং তার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কাজ, নির্দিষ্ট কিছু শিল্প ও ডিজিটাল অর্থনীতিতে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সাধারণ পণ্য, দুটির পরিবহণেই মিলবে ছাড়।
দেশের মধ্যে দেখা গেছে, যে রাজ্যগুলো করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে শুনেই আগেভাগে লকডাউনের পথে হেঁটেছে তারা অন্যদের তুলনায় অনেকটাই ভালো অবস্থানে রয়েছে। রাজস্থান, পঞ্জাব এবং বিহার এই ৩টি রাজ্যই প্রথম থেকে লকডাউনের পথে হেঁটে ছিল। তাই দেখা গেছে, উত্তর প্রদেশ, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলির তুলনায় ওই রাজ্যগুলো অনেকটাই ভাল অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুক্রবার বলেছে যে করোনা ভাইরাস সঙ্কট নিয়ন্ত্রণে আসা শুরু করার পর থেকেই অনেক দেশ তাদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান সংশোধন করার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে তারা সম্ভবত চিনকেই অনুসরণ করবে। উহান, যেখান থেকে করোনা ভাইরাসের পথচলা শুরু হয়েছিল গত ডিসেম্বর মাসে, শুক্রবার ,সেই দেশই জানায় যে তারা মৃত্যুর পরিসংখ্য়ান ঠিকভাবে দিতে পারেনি। এখন দেখা যাচ্ছে উহানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করেই ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
Post a comment