COVID-19 Cases: মার্কজ নিজামুদ্দিন সিল করে দেওয়া হয়েছে
হাইলাইটস
- দিল্লির মসজিদ থেকে হু-হু করে ছড়ালো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ
- ওই মসজিদের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারালেন ৭ জন
- ওই মসজিদ পুরোপুরি সিল করে দিল দিল্লি সরকার, এফআইআর দায়ের কর্তৃপক্ষের নামে
নয়া দিল্লি:
দিল্লিতে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২৪, এবং নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জমায়েতের পর আরও লোকের শরীরে এই মারণ ভাইরাস মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, যার কারণে ৭ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। দিল্লির “মর্কজ নিজামুদ্দিন” এ কয়েক সপ্তাহ ধরে জমায়েত হয়েছিল প্রায় ২০০০ লোকের। সোমবার ৩০০ এর বেশি লোককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তাঁদের শরীরে এই ভাইরাসের লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। এদিন সকালে, মার্কজ নিজামুদ্দিন সিল করে দেওয়া হয়, এবং ৭০০ বেশি লোককে বের করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যে সমস্ত রাজ্যের মানুষ ওই জমায়েতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের খোঁজ করা হচ্ছে রাজ্যগুলির তরফে। কেন্দ্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, “এটা দোষ দেখার সময় নয়, কাজ করার সময়”।
এখানে রইল ১০'টি তথ্য:
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন NDTV কে বলেন, “এখনও পর্যন্ত ওখানে থাকা ২৪ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে”।তিনি বলেন, “জমায়েতের আয়োজন করে খুব বড় অপরাধ করেছেন আয়োজকরা, আমরা উপরাজ্যপালকে কঠোর পদক্ষেপ করতে বলেছি”।
ওই সমস্ত ব্যক্তিদের কনট্র্যাক্ট বা স্পর্শ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে, এই বিষয়টিকেই এখন সবচেয়ে প্রাধান্য দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, সূত্রের খবর এমনই। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এদিন সন্ধ্যায় একটি সাংবাদিক বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম কমিশনার লভ আগরওাল বলেন, “নিজামুদ্দিন এলাকা অনুযায়ী, আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে এবং সহমত হতে হবে যে, এটা দোষ খুঁজে বের করার সময় নয়। যেটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল, যেখানে আমরা এই ধরণের ঘটনা পাব, সেখানে আমাদের নির্ধারিত পদক্ষেপ করতে হবে”।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, শতাব্দী প্রাচীণ এই মসজিদে জড়ো হন, শতাধিক ব্যক্তি, ৮ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত তবলিঘি জামাতের জমায়েতে ৬ তলা ভবনে দুদিনের জমায়েতে হাজির হন তাঁরা। প্রায় ২৮০ জন বিদেশিও ছিলেন।
তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, জম্মু ও কাশ্মীর এবং আন্দামানে ফিরে যাওয়া ব্যক্তিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি। তেলেঙ্গানায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে শ্রীনগরে। আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ফিরে যাওয়া আরও ১০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস মিলেছে। কাশ্মীর থেকে জমায়েতে যোগ দিয়েছিলেন ১০০ জনেরও বেশি, তাঁদের খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে মৃত্যু হওয়া শ্রীনগরের ধর্মগুরু উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দে গিয়েছিলেন এবং কাশ্মীর ফিরে একাধিক জমায়েত করেন।
১৯২৬ সালে তৈরি ইসলামিক মিশনারি আন্দোলন শুরু হয়, তারই নাম তাবলিঘি জামাত, সার বিশ্বজুড়ে এদের সদস্য রয়েছেন। এই জমায়েতে হাজির ছিলেন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, মায়ানমার, কিরগিজস্তান, এবং সৌদি আরবের সদস্যরা। এছাড়াও আফগানিস্তান, আলজিরিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ফিজি, ফ্রান্স এবং কুয়েতের সদস্যরাও এসেছিলেন।
৩০০ জন বিদেশি পর্যটন ভিসায় এসে যোগ দিয়েছিলেন ওই জমায়েতে, তাঁদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২৪ মার্চ তাঁদের ধর্মীয় সভা সম্পর্কে পুলিশকে জানিয়েছিলেন তাবলিগি সদস্যরা। সেই সময়ে, মসজিদের ভিতরে ছিলেন ১২০০ সদস্য। একদিন পর, তাঁদের বিমানবন্দরে নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও ২৬ মার্চ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লকডাউন ঘোষণা করায়, আবারও মসজিদে জমায়েত শুরু হয়। পুলিশ যে সময় তাঁদের বের করে, সেই সময় মসজিদে ছিলেন ২০০০ জন।
একটি বিবৃতিতে মার্কাজ নিজামুদ্দিন নিজের সমর্থনে বলেন, ২২ মার্চ জনতা কার্ফু জারি করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সদস্যরা বেরিয়ে যেতে পারেননি, কারণ ট্রেন বন্ধ ছিল, জানান হয় আয়োজকদের তরফে। তাঁদের দাবি,তারপর, প্রথমে দিল্লি সরকার এবং পরে প্রধানমন্ত্রী লকডাউনের ঘোষণা করেন, ফলে সেখানেই থেকে যান সদস্যরা। যদিও সরকারি আধিকারিকরা উল্লেখ করেছেন যে, লকডাউনের অনেক আগেই সমস্ত জমায়েত, ধর্মী, সাংস্কৃতিক বা সামাজিক জমায়েত নিষিদ্ধ করে দিল্লি সরকার।
Post a comment