আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে এখন নদীর বুকেই বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন বছর যাটেকের নিরঞ্জন হালদার। কিছুদিন আগে তিনি নিজের গ্রাম থেকে আত্মীয়ের বাড়ি আসার পর অসুস্থ বোধ করেন। সর্দি-কাশি ও জ্বর-জ্বর অনুভব করায় দেরি না করে তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। করোনা সংক্রমণের (COVID-19) আশঙ্কায় চিকিৎসকরা তাঁকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টিনে (Coronavirus Quarantine) থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় কীভাবেই বা নিজের বাড়িতে ফিরে যাবেন নদিয়া জেলার (West Bengal) নবদ্বীপের ওই বাসিন্দা? এদিকে যে বাড়িতে তিনি বেড়াতে গিয়েছিলেন তাঁদেরও আলাদা করে ওই বৃদ্ধকে রাখার মতো যথেষ্ট ঘরের সুবিধা নেই। আর তাছাড়া স্থানীয়রাও করোনা আক্রান্ত (Coronavirus) সন্দেহে বৃদ্ধকে গ্রামের ভিতরে থাকতে দিতে নারাজ। তাই বাধ্য হয়ে নৌকাতেই আপাতভাবে "সেল্ফ-কোয়ারান্টাইন"-এ আছেন তিনি। গত ৪ দিন ধরে নদীর বুকে ভাসমান নৌকাই তাঁর ঘর। ঘটনাটি মালদহ জেলার হাবিবপুর ব্লকের অন্তর্গত ডোবাপাড়া এলাকার।
গোটা দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ জন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী
এ ব্যাপারে নিরঞ্জন হালদার নামে ওই ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "COVID-19-এর আতঙ্কের মধ্যেই আমি জ্বরে ভুগতে শুরু করি। চিকিৎসকরা আমায় ঘরের মধ্যে সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ১৪ দিন থাকতে বলেন।কিন্তু গ্রামবাসীরা আমাকে তাঁদের গ্রামে থাকতে দিতে চায় না। তাই বাধ্য হয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ মতো এই ১৪ দিন আমি নৌকাতেই আশ্রয় নিয়েছি"।
"উই শ্যাল ওভারকাম", করোনা আতঙ্কের মধ্যে স্বস্তি দিতে কলকাতা পুলিশের গান
কিন্তু নৌকার মধ্যে থাকাকালীন ওই বৃদ্ধ কীভাবে পাচ্ছেন খাদ্য বা পানীয় জল? স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দাবি বিষয়টি জানার পর তাঁরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা তপন বিশ্বাস বলেন, "করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে আমরা তাঁঁর জন্যে নৌকাতেই আলাদা থাকার ব্যবস্থা করেছি। আমরা ওখানেই তাঁকে খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করছি।"