এই পরিদর্শনের কোনও যুক্তি নেই, দাবি ওই তৃণমূল সাংসদের। (ফাইল ছবি)
হাইলাইটস
- কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দলকে কটাক্ষ তৃণমূল সাংসদের
- "আমি সমস্যার কারণ", এই ভাষায় টুইট করেন ডেরেক ও ব্রায়েনের
- রাজনৈতিক ভাইরাস ছড়াতে এই সফর অভিযোগ তাঁর
কলকাতা: আইএমসিটি অর্থাৎ আন্তঃ রাজ্য মন্ত্রী পরিষদের দল (IMCT) রাজ্য সফরে। এই আবহে সেই পরিদর্শক দলকে কটাক্ষের সুরে বিঁধল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। দলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন (MP Derek O'Brien) এই দলকে সমস্যার কারণ বলে টুইট করলেন। তিনি ইংরাজিতে টুইটে লেখেন, "আইএমসিটি অর্থাৎ আই মাস্ট কজ ট্রাবল।" এই টুইটের বাংলা করলে দাঁড়ায় আমি অবশ্যই সমস্যার কারণ। সেই টুইটে ওই তৃণমূল সাংসদ আরও লিখেছেন, "এই পরিদর্শনের কোনও যুক্তি নেই।হটস্পটহীন জেলায় ঘুরে বেড়ানোর কোনও মানে হয় না। এই পরিদর্শনের আসল উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়া।" ইতিমধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধে রাজ্যের প্রস্তুতি, নমুনা পরীক্ষার আয়োজন আর সঠিক লকডাউন বিধি মানা হচ্ছে কিনা, এই জাতীয় একাধিক ইস্যু নিয়ে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে পড়ে রয়েছে সেই দল। দফায় দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠানো হচ্ছে পরিদর্শন রিপোর্ট বলে সূত্রের খবর।
তারপরেই এদিন টুইট করে আইএমসিটি-কে তোপ দাগেন ডেরেক। দেখুন সেই টুইট:
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় এই দলের রাজ্য সফর ঘিরে সংঘাত চরমে উঠেছিল মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। রাজ্যের এই অসহযোগিতা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আর বিপর্যয় মোকাবিলা আইন-২০০৫-এর ঘোষিত ধারার লঙ্ঘন বলে সতর্ক করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
করোনা ভাইরাসের সঙ্গে যুঝতে কতটা সুনির্দিষ্ট পরিকাঠামো রয়েছে রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে, কতটাই বা মেনে চলা হচ্ছে লকডাউনে বিধিনিষেধ, এই সব খতিয়ে দেখতেই পশ্চিমবঙ্গে এসেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। শুক্রবার দিনভর কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ালেন ওই পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা। রাজ্যের করোনা হটস্পট জেলা বলে পরিচিত হাওড়ার হাসপাতালগুলোর পরিকাঠামোও খতিয়ে দেখেন তাঁরা, যান কলকাতার বাঙুর হাসপাতালেও। পাশাপাশি রাজারহাটে থাকা কোয়ারান্টাইন সেন্টারটিও ঘুরে দেখে কেন্দ্রীয় দলটি। তবে জানা গেছে, এলাকাগুলোতে ঘুরে দেখে মোটেও সন্তুষ্ট নয় কেন্দ্রীয় দল। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্য সরকারকে একটি চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে, সফরের প্রথমদিকে রাজ্য বনাম কেন্দ্র সংঘাত চরমে উঠলে সময়ের সঙ্গে স্থির হয়েছে পরিস্থিতি। নবান্ন সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেছেন, "আন্তঃমন্ত্রী পরিষদের দল রাজ্যের যে কোনও এলাকায় সফর করতে পারে।তবে রাজ্যের তরফে কোনও প্রতিনিধি দিয়ে সময় নষ্ট করা হবে না।" যদিও মুখ্যসচিবের এই ঘোষণার বিরোধিতা করে এই দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্রা বলেছেন, "রাজ্যের এই অবস্থান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশের পরিপন্থী। যেহেতু রাজ্যের উচিত নানাভাবে এই দলকে সহযোগিতা করে পরিদর্শনে সাহায্য করা।"
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ৬% বেড়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হিসেবে এই পরিসংখ্যান। এদিন জানিয়েছে,স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি সূত্র। সেই সূত্রের আরও দাবি, "মার্চের নিরিখে দিনপ্রতি এই সংক্রমণের (Corona) হার সর্বনিম্ন। গত মাসেই ১০০ ছাড়িয়েছিল সংক্রমণ। দিনপ্রতি বিচারে বৃদ্ধির হার ছিল উদ্বেগজনক।" শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপার্ষদের একটি বৈঠক হয়েছে।স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের নেতৃত্বাধীন সেই বৈঠক থেকেই এই পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। সেই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, দিনপ্রতি মৃত্যুর হার ৩.১% আর সুস্থ হওয়ার হার ২০%। এই ধারা অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক। অন্তত বাইরের অন্য দেশগুলোর বিচারে সংক্রমণ-সহ মৃত্যুর হার কমায় উদ্বেগ খানিকটা কমছে। এদিন এমন দাবি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই সূত্র।