Coronavirus Cases, India: বৃহস্পতিবার COVID-1-এর রোগী ১.৬ লক্ষ ছাড়িয়েছে
নিউ দিল্লি:
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা (Coronavirus) সংক্রমিত হয়েছেন ৭৪৬৬ জন। শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে এই কথা জানানো হয়েছে। এই প্রথম দেশে একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০০০ ছাড়ালো। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ১৭৫।এই নিয়ে টানা সাত দিন দেশে দৈনিক কোভিড-১৯ (COVID-19) সংক্রমণের সংখ্যা (Coronavirus cases in India) ৬,০০০-এর উপরে ছিল।এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, দেশে মোট করোনা আক্রান্ত ১,৬৫,৭৯৯ জন। মৃত ৪,৭০৬। সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ৭১,১০৬ জন।বৃহস্পতিবার দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১.৬ লাখ ছাড়িয়েছে। এই সপ্তাহেই করোনা আক্রান্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় প্রথম নিয়ে ঢুকে পড়েছে ভারত। রবিবার চতুর্থ দফার লকডাউন শেষ হচ্ছে। লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি।
দেখুন ১০ টি তথ্য:
করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) সংক্রমণ রুখতে যে লকডাউন জারি করা হয়েছে তাতে সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েন অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক (Supreme Court)। এই অবস্থায় তাঁদের নিজেদের রাজ্যে ফেরাতে ১ মে থেকে বিশেষ ট্রেনের (Migrant Trains) ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। "শ্রমিক স্পেশাল" ট্রেনের মাধ্যমে ওই দিন থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৯১ লক্ষ পরিযায়ীকে তাঁদের ঘরে ফেরানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে পরিসংখ্যান তুলে ধরে দাবি করল কেন্দ্র। সরকার আদালতকে আরও বলেছে, "একজন মাত্র পরিযায়ী শ্রমিকও অন্য রাজ্যে আটকে থাকা পর্যন্ত তাঁদের ঘরে ফেরাতে ট্রেন চালাবে, কিছুতেই ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হবে না"। পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা দেখে মঙ্গলবারই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাঁদের বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারগুলো পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা ঘোঁচাতে কী ব্যবস্থা করেছে সেবিষয়ে জবাব তলব করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই নোটিসের প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার আদালতে ওই তথ্য দেয় কেন্দ্র।
করোনা ভাইরাস লকডাউন (Coronavirus Lockdown) নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) কথা বলেছেন বলে সূত্রের খবর, ৩১ মে এর পর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হবে, নাকি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যাবে, তা নিয়ে নিজেদের মতামত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীরা। সূত্রের খবর, অন্যান্যবার ক্যাবিনেট সচিব প্রাথমিকভাবে যোগাযোগ করলেও, এবার ছিল রাজনৈতিক পদক্ষেপ। করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ এবং একাধিকবার তার পরিবর্তন করা নিয়ে বিরোধী দল এবং মুখ্যমন্ত্রীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার। সে ব্যাপারে সচেতন সরকার।
এই সপ্তাহের গোড়াতেই ভারত করোনার প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় প্রথম দশে ঢুকে পড়েছিল।বৃহস্পতিবার তা নবম স্থানে পৌঁছে গেছে।২১ মে থেকে রোজই ৬,০০০-এর বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, গুজরাত, দিল্লি। মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়িয়েছে। দেশব্যাপী লকডাউনে ছাড় দেওয়ার পর থেকেই দ্রুত হারে বেড়েছে দেশের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।
কোনওভাবেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় ঝুঁকি (Coronavirus Fears) নিতে নারাজ কর্নাটকের সরকার। প্রতিবেশী ৫টি রাজ্য থেকে কোনও বিমান, ট্রেন বা অন্যান্য যানবাহণ ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা (Karnataka Travel Ban) জারি করা হল। দেশের মধ্যে মূলত যে যে রাজ্যগুলোতে করোনা সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে, সেই রাজ্যগুলোর সঙ্গে আপাতত কোনও যোগাযোগ রাখতে চায় না কর্নাটক সরকার। কোনওভাবেই যাতে ওই রাজ্যগুলো থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা (Migrant Crisis) সেখানে না ফিরতে পারে তার জন্যেই এই তৎপরতা। তাঁদের এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে মোট ৫টি রাজ্য। সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোভিড- ১৯ সংক্রমণের পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্র, গুজরাট, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান থেকে কোনও বিমান, ট্রেন, অন্যান্য যানবাহন কর্নাটকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না।
একই বিষয় নিয়ে মহারাষ্ট্রও অসন্তুষ্ট ভারতীয় রেলের উপরে। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্র এখানে পর্যাপ্ত ট্রেন দিচ্ছে না। কিন্তু ভারতীয় রেল জানাচ্ছে্, মহারাষ্ট্রের তরফে তাদের কাছে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি যে, তাদের ক'টি ট্রেন লাগবে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মুম্বই স্টেশনের বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষকে ভিড় করে অবস্থান করতে দেখা গিয়েছে।
এদিকে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের মধ্যে প্রথম থেকেই করোনা সংক্ৰমণ নিয়ে বিবাদ চলছে।যতদিন গেছে সেই বিবাদ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এমনকি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেলনা নন। তাঁরা রাজ্যের সম্পদ। শুক্রবার সকালে এভাবেই টুইট করে রাজ্য সরকারকে আরও একবার আক্রমণ করলেন তিনি। এদিন তিনি টুইট করে জানান, ‘‘যে পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরে আসছেন, তাঁরা আমাদের আপনজন। তাঁরা পেটের দায়ে রাজ্য ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। ওঁরা আমাদের সম্পদ, কেউ ফেলনা নন। আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ে নিজেদের ঘরে, আপনজনের কাছে ফিরতে চাইতেই পারেন। বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রেক্ষাপটে নিজেদের বাড়ি ফিরে আসলে তাঁদের উষ্ণ আমন্ত্রণ প্রাপ্য। তাঁদেরকে কোভিড সংক্রমণকারী হিসেবে দেগে দেওয়া অন্যায়, অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক এবং হৃদয়বিদারক। মানবিক মূল্যবোধ অটুট রেখেও কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সমস্ত নিয়মাবলী এবং নির্দেশ মেনে চলা যায়।''
কলকাতায় একদিনে করোনা ভাইরাস (Coronavirus) আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭ বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে একদিনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪৪। ফলে এ রাজ্যে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৭৩ জন। এ রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে, ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২২৩ জন। রাজ্যে সরকার জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় মোট ৯২৫৬ জনের শারিরীক পরীক্ষা করা হয়েছে, ফলে এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ১,৭৫,৭৬৯ জনের শারিরীক পরীক্ষা করা হয়েছে। তারমধ্যে ২.৫৮ শতাংশের করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় করোনা আক্রান্ত ৫৫ জন, উত্কর ২৪ পরগনায় ৪৯, উত্তর দিনাজপুরে ৪৬, বলে জানা গিয়েছে সরকারি তথ্যে।
করোনা সংক্রমণ (Covid-19 in Bengal) রোধে রাজ্য সরকার ব্যর্থ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Government) সরকার গড়ে তুলতে পারেনি উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। এই ভাষাতেই বৃহস্পতিবার আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী (Congress MP Adhir Chowdhury)। তাঁর অভিযোগ, "দু'মাস সময় পেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু সেই সময় কাজে না লাগিয়ে উলটে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংক্রমণের জন্য দায়ী করছেন মুখ্যমন্ত্রী।" তিনি দাবি করেন, "পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant labours) করোনা দানব বলে প্রচার করছেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তব সেটা নয়। রাজ্যে ফেরা শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার করা হচ্ছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেন, রাজ্যের প্রথম করোনা সংক্রমণ কোনও পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে হয়নি। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তাঁর প্রশ্ন, "আপনি লকডাউন পর্বের মধ্যে কেন উপযুক্ত স্থায়ী ও অস্থায়ী স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারলেন না? আপনি অল্প কাজ করেছেন। আর এখন রাজ্যে ফেরা শ্রমিকদের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন।এ রাজ্যের যারা আবাসিক এবং কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যের বাসিন্দা, তাঁরা কখনই করোনা দানব হতে পারে না।"
ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে ১ লক্ষের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।সারা দেশ জুড়ে ১৭ লক্ষের বেশি আক্রান্ত এই রোগে।প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সারা পৃথিবী জুড়ে। এদিকে ব্রাজিলেও বুধবার রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে ৪ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ২৪,৫১২।
চলতি বছরের শেষ অর্থাৎ ডিসেম্বর বা আগামী বছরের শুরুতে অর্থাৎ ২০১২ সালের জানুয়ারিতে করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে মার্কিন জাতীয় সংস্থা অ্যালার্জি ও সংক্রামক রোগের পরিচালক অ্যান্টনি ফৌসিকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, ''যদি সমস্ত কার্ডগুলি সঠিক জায়গায় পড়ে এবং সমস্ত তারাগুলি সারিবদ্ধ ভাবে অবস্থান করে তাহলে অবশ্যই ডিসেম্বর বা জানুয়ারীর মধ্যে একটি ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা রাখছি।'
Post a comment