শিলিগুড়ি: সংক্রমণ প্রতিরোধে শিলিগুড়ির ৪৭টি ওয়ার্ডেই আগামী একসপ্তাহ সম্পূর্ণ লকডাউন। তাই কড়া প্রশাসনও। চলছে নাগরিকদের গাড়িতে তল্লাশি। অপ্রয়োজনে তাঁরা বাড়ির বাইরে কিনা, জানতেই এই তল্লাশি। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন চলবে আগামী বুধবার পর্যন্ত। এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলায় মোট সংক্রমিত ৩৪,৪২৭ জন (Covid-19 cases in Bengal)। সক্রিয় সংক্রমণ ১২,৭৪৭, মৃত হাজার। এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২০,৬৮০ জন। সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে এমনটাই খবর। এদিকে, সরকারি অব্যবস্থা এবং অপদার্থতার কারণেই পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণ দ্রুতহারে ছড়াচ্ছে, এমনটাই মনে করছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলো।
দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১,৫৮৯ জন, মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। দেখতে দেখতে রাজ্যের মোট ১,০০০ জনের প্রাণ কাড়ল কোভিড- ১৯। সাধারণ মানুষ থেকে রাজ্যের দক্ষ প্রশাসক, করোনার ছোবল থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কেউই। বুধবারই পশ্চিমবঙ্গের করোনা সংক্রমণের সাম্প্রতিক চিত্রটি তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান যে, আগামী ২ মাসে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এদিকে কোভিড যুদ্ধে প্রাণ হারানো রাজ্য সরকারি কর্মীদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে একটি বিশেষ ব্যাজ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও পর্যন্ত ১২ জন সরকারি কর্মচারী করোনার কারণে মারা গেছেন।
এর আগে গত ১২ জুলাই রাজ্যে একদিনের মধ্যে দেড় হাজারেরও বেশি করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল।মাঝে ওই সংক্রমণের হার সামান্য কম থাকলেও বুধবার ফের দাপট দেখিয়েছে কোভিড- ১৯। একদিনের মধ্যে রাজ্যে নতুন করোনা আক্রান্ত ১,৫৮৯ জন।
শুধু তাই নয়, এরাজ্যে করোনা থেকে পুনরুদ্ধারের হারও কমছে। ১ জুলাই যেখানে করোনা পুনরুদ্ধারের হার ছিল ৬৫.৩৫ শতাংশ, সেখানে বর্তমানে তা কমে ৬০.০৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ১ জুলাই যেখানে করোনা পজিটিভিরে হার ছিল ৩.৮৫ শতাংশ, সেখানে বর্তমানে সেটি বেড়ে ৫.৩০ শতাংশ হয়েছে।
শুধু সংখ্যাই নয়, আরও উদ্বেগের কারণ হ'ল রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির জন্যে একাধিক হাসপাতালে বেডের জন্যে ঘুরতে হচ্ছে, ফলে ভর্তির অপেক্ষায় থাকতে থাকতেই মৃত্যু হচ্ছে অনেকের।
কোভিড সঙ্কটের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিরোধী দল বাম ও কংগ্রেস রাজ্য বিধানসভার বাইরে ধরনায় বসার কর্মসূচি নিয়েছিল। কিন্তু বিধানসভার এক কর্মী করোনা পজিটিভ হিসাবে ধরা পড়ায় সেই কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কেননা আগামী ১০ দিন বন্ধ থাকছে বিধানসভা। তবে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একজন পূর্ণসময়ের জন্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিয়োগ করা উচিত।