মিলিপদ গ্রামের জগা এবং কালিয়াকে AIIMS-এ ভর্তি করা হয় ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই
ভুবনেশ্বর: ২০১৭ সালে জোড়া মাথা কেটে আলাদা করে দুই শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। জোড়া মাথা কেটে আলাদা করা দুই শিশু জগা এবং কালিয়ার (Jaga and Kalia) সফল ক্র্যানিওপ্যাগাস সার্জারি (craniopagus surgery) দেশের প্রথম এই জাতীয় অস্ত্রোপচার হিসেবে নাম তুলল Limca Book of Records-এর ২০২০ সংস্করণে। নিউরোসার্জন অধ্যাপক অশোক কুমার মহাপাত্র (Prof Ashok Kumar Mahapatra) এবং ডাঃ দীপক কুমার গুপ্তের (Dr Deepak Kumar Gupta) নেতৃত্বে ১২৫ জন চিকিৎসক এবং প্যারামেডিক্যাল কর্মীদের একটি দল এই অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিলেন। ওড়িশার কান্ধমাল জেলার ২৮ মাস বয়সী জোড়া মাথার যমজ শিশুকে পৃথক করা হয় দিল্লির All India Institute of Medical Sciences (AIIMS)হাসপাতালে।
আরও পড়ুনঃ ‘ভূতের পায়ের ছাপ'! গবেষকদের পরীক্ষায় সত্য উদঘাটন
"অভিনন্দন! আমরা আপনাকে জানাতে পেরে আনন্দিত যে আপনাদের রেকর্ডটি ২০২০ সালের লিমকা বুক অফ রেকর্ডসের সংস্করণে প্রদর্শিত হয়েছে," দীপক গুপ্তকে ইমেলে জানিয়েছেন লিমকা বুক অফ রেকর্ডের সম্পাদকীয় কার্যনির্বাহী ট্রেসা বেঞ্জামিন।
জটিল অস্ত্রোপচারটি দুটি পর্যায়ে পরিচালিত হয়, প্রথম অস্ত্রোপচার হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট এবং তারপর ওই বছরেরই ২৫ অক্টোবর। এবং রেকর্ড বুকে ভারতের প্রথম ক্র্যানিওপ্যাগাস সার্জারি হিসাবে নাম তুলেছে এই জটিল অস্ত্রোপচারটি।
“এটি আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এটা ভারতের প্রথম সফল ক্র্যানিওপ্যাগাস শল্য চিকিত্সাও ছিল,” বলেন এআইমসের নিউরো সার্জারি বিভাগের তৎকালীন প্রধান অশোক কুমার মহাপাত্র।
আরও পড়ুনঃ সাতসকালে ট্রেন থামিয়ে ওভারহেডের তারে অ্যাক্রোবেটিক্স দেখালেন এই ব্যক্তি! পরিণতি?
এই জটিল অস্ত্রোপচারের একটি বৈশিষ্ট্য হ'ল এআইআইএমএসের vein bank থেকে একটি শিরা নেওয়া হয়েছিল। ওই শিরাটি কালিয়ার মস্তিষ্কে গ্রাফ্ট করা হয়েছিল। কারণ ওই দুই শিশুর মাথায় কেবল একটি শিরা ছিল। অশোক কুমার মহাপাত্র আরও জানিয়েছেন যে, এটি পৃথিবীতে শিরা গ্রাফটিংয়ের প্রথম ঘটনা।
তিনি জানান, চিকিৎসকের দলটি নিউইয়র্কের পেডিয়াট্রিক নিউরোসার্জন প্রফেসর জেমস টি গুডরিচের পরামর্শ নিয়েছিল। তিনি এই জাতীয় দু'টি সার্জারি করেছিলেন এবং এই ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম বিশেষজ্ঞ হিসাবে বিবেচিতও হয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, গত ৩৩ বছর ধরে সারা বিশ্বে প্রায় ১২ বা ১৩ টি এ জাতীয় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অশোক কুমার মহাপাত্র এখন অবসর নিয়েছেন এবং বর্তমানে ভুবনেশ্বরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
ওড়িশায় ফিরে আসার আগে জগা ও কালিয়া দু'বছর ধরে নয়াদিল্লির এইমস-এ কাটিয়েছে। তারা একটি হাসপাতালেই রয়েছে এবং ভালই রয়েছে। “তাদের কীভাবে উন্নতি হচ্ছে তা দেখার জন্য আমাদের ওদের দুই থেকে তিন বছর সময় দেওয়া উচিত,” বলেন অশোক কুমার মহাপাত্র।