নির্ভয়ার মা বলেন, “আমাদের মেয়েকে আমরা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় দেখেছিলাম। ৭ বছর ধরে আমি মরে বেঁচে আছি”
নয়াদিল্লি: সাত বছর পর, নির্ভয়াকাণ্ডে (Nirbhaya's death) সাজাপ্রাপ্তদের ফাঁসির সাজা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত., ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় ফাঁসি হবে নির্ভয়ার সাজাপ্রাপ্তদের। মেয়ের খুনিদের সঙ্গে দীর্ঘ আইনি লড়াইকে যন্ত্রণার বলে বর্ণনা করে নির্ভয়ার মা বলেন, “সাত বছর ধরে আমি রক্ত অশ্রু ঝড়িয়েছি”। বিচারক রায় ঘোষণা করার আগে, নির্ভয়ার মায়ের কাছে এক সাজাপ্রাপ্তের মা, ছেলের জীবন রক্ষা করার আবেদন জানান, যদিও নির্ভয়ার মা উত্তর দেন, “আমার মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছিল, সেটা আমি কী করে ভুলব”? নির্ভয়ার মা NDTV কে বলেন, যখন মুকেশ সিং এর মা তাঁকে আবেদন জানিয়েছিলেন, সেই সময় কোনও আবেগ অনুভব করেননি তিনি।
নির্ভয়ার মা বলেন, “আমাদের মেয়েকে আমরা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় দেখেছিলাম। ৭ বছর ধরে আমি মরে বেঁচে আছি”।
৭ বছর পর, ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় নির্ভয়াকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের ফাঁসি
নির্ভয়ার মা বলেন, “সাত বছর আগে আমরা আমাদের মেয়েকে হারিয়েছি। যে অবস্থায় আমি মেয়েকে দেখেছিলাম, তার শরীর রক্তাক্ত ছিল...তার শরীরে এত ক্ষত ছিল, যেন তাকে কোনও হিংস্র প্রাণী আক্রমণ করেছিল। সাত বছর ধরে রক্তের অশ্রু ঝড়িয়েছি। যদি কেউ ক্ষমা চায় এবং কাঁদে, তাতে আমার কোনও অনুভূতি হয় না। কারণ, সাত বছর কান্নার পর, আমি পাথর হয়ে গিয়েছি। আমি কিছুই মনে করি না”।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের মেয়েকে খুব খারাপ অবস্থায় দেখেছিলাম। সাত বছর ধরে আমি চোখের জল ফেলেছি”।
তিনি বলেন, সাত বছর পর, মঙ্গলবারের জয় শুধুমাত্র নির্ভয়া এবং তাঁর পরিবারের জয় নয়, “এটা দেশের প্রতিটি মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার এবং সুরক্ষার প্রশ্ন”।
বছরের পর বছর ধরে, আদালতের শুনানি নিয়ে অনেকের অসন্তোষ ছিল, হতাশ অভিভাবকদের অনেক হতাশার দিন গিয়েছে। প্রত্যেকটি যন্ত্রণাকাতর মুহুর্ত, সন্তান হারানোর শোক উস্কে দিয়েছে।
নির্ভয়ায় সাজাপ্রাপ্তদের ফাঁসিতে মেরঠের ফাঁসুড়ে, বিহারের দড়ি
অনেক হতাশার দিন গিয়েছে। প্রত্যেকটি যন্ত্রণাকাতর মুহুর্ত, সন্তান হারানোর শোক উস্কে দিয়েছে।
অবশেষে এই ফাঁসি সাজা কি পরিবারকে সান্তনা দেবে?
নির্ভয়ার বাবা বলেন, “কেউ ভুলে যাবে না বা আমরা যা দেখেছি তারপর, যেভাবে আমার মেয়ের জীবন গিয়েছে”। তিনি বলেন, “সারাজীবন এই যন্ত্রণা আমাদের সঙ্গে থাকবে। এখন যখন অপরাধীদের ফাঁসি হবে, দেশের জন্য এটা একটা বড় বার্তা, বিশেষ করে অপরাধীদের, আইন তাদের ছেড়ে দেবে না”।
২০১২ এর ১৬ ডিসেম্বর, বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন প্যারামেডিক্যালের ২৩ বছরের তরুণী, বাড়ি ফেরার সময় যখন তাঁরা গাড়ি খুঁজছিলেন, সেই সময় দক্ষিণ দিল্লিতে একটি বাসে ওঠেন তাঁরা, সেখানে চালক এবং খালাসি সহ মোট ৬ জন ছিল, বাকি বাসটি ফাঁকা ছিল।
তিহার জেলে 'ডামি' দিয়ে প্রস্তুতি, নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের ফাঁসির তৎপরতা!
প্রায় কয়েকঘন্টা ধরে ওই মহিলাকে গণধর্ষণ ও অত্যাচার করা হয় এবং পরে তাঁকে বাস থেকে বাইরে ছুঁড়ে ফেলা হয়। ২৯ ডিসেম্বরে ওই নির্যাতিতা তরুণীর মৃত্যু হলে দেশজুড়ে প্রতিবাদ আছড়ে পড়ে।
এই চারজন ছাড়া, এই গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে রয়েছে পঞ্চম অপরাধী রাম সিং, বন্দি থাকাকালীন আত্মহত্যা করে সে, ষষ্ঠ অপরাধী, অপরাধ করার সময় ১৮ বছরের কম বয়সী ছিল, তাকে সংশোধনাগারে রাখার তিন বছর পর ছেড়ে দেওয়া হয়।