Cyclone Amphan : পশ্চিমবঙ্গে এই ঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা (প্রতীকী ছবি)
হাইলাইটস
- ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের রূপে তেড়ে আসছে আমফান
- ২০০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে আমফানের গতি
- ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ফুঁসছে সমুদ্র, উঠছে বিরাট বিরাট ঢেউ
নয়া দিল্লি: বুধবার বিকেল থেকে সন্ধের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে প্রবল বেগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা ঘূর্ণিঝড় আমফানের। এর (Cyclone Amphan) জেরে ইতিমধ্যেই কলকাতা সহ বাংলার (West Bengal) ৭টি জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ফুঁসছে দিঘার সমুদ্রও। এমনকী নদীগুলোতেও দেখা যাচ্ছে জলোচ্ছ্বাস। এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে আমফান প্রবল বেগে বয়ে যাবে পশ্চিমবঙ্গের দিঘা হয়ে বাংলাদেশের হাতিয়ার দিকে, এর ফলে এরাজ্যে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০০ কিলোমিটার গতিতে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সঙ্গে চলবে লাগাতার ভারী বৃষ্টি। আমফানের প্রভাবে সমুদ্র এবং নদীগুলোতে জলোচ্ছ্বাস ৮ মিটারেরও বেশি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর। পূর্ব উপকূলে ভারতীয় নৌবাহিনীর তরফে "হাই অ্যালার্ট" বা "চূড়ান্ত সতর্কতা" জারি করা হয়েছে। সতর্কতা স্বরূপ ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষজন উপকূলবর্তী এলাকা থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিকেল ৪ টে থেকে ৬টার মধ্যে এরাজ্যে আছড়ে পড়বে আমফান, সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি
নৌসেনার পক্ষ থেকে সতর্কতা হিসাবে বাংলা এবং ওড়িশার (Odisha) মানুষজনকে লাগাতার সতর্ক করে চলেছে। ১৪ মে থেকে প্রায় প্রতিদিনই তিনটি ছোট জাহাজ এবং দুটি বিমানের করে স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক করার কাজে নামে নৌসেনা। এখনও পর্যন্ত ৩০০টি মাছ ধরার নৌকাকে সমুদ্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পূর্ব উপকূলে, ২০ টি দুর্যোগ মোকাবিলা দলকে স্ট্যান্ডবাই হিসাবে রাখা হয়েছে। এছাড়া যুদ্ধজাহাজ এবং হেলিকপ্টারকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঝড়ের পরপরই ত্রাণ সাহায্য এবং উদ্ধারকাজে নামার জন্যে।
Cyclone Amphan: "হাই অ্যালার্ট" জারি করল নৌসেনা, উদ্ধারকাজে প্রস্তুত যুদ্ধজাহাজ
ওড়িশা থেকে যে খবর মিলেছে তাতে জানা গেছে যে পারাদ্বীপে বৃষ্টি শুরু হলেও ধীরে ধীরে তা কমে গেছে। বুধবার সকালে গোপালপুরে ৪৪ কিমি বেগে ঝোড়া বাতাস বইলেও এখন অনেকটাই পরিস্থিতি ভালো। ওড়িশাতে আমফানের প্রভাব খুব বেশি পড়বে না বলেই এখন মনে করা হচ্ছে।
আমফান ওড়িশার পারাদ্বীপে ১০২ কিমি / ঘণ্টা, চাঁদবালিতে ৭৪ কিমি / ঘণ্টা, ভুবনেশ্বরে ৩৭ কিমি / ঘণ্টা, বালাসোরে ৩৭ কিমি / ঘণ্টা এবং পুরীতে ৪১ কিমি / ঘণ্টায় আছড়ে পড়তে পারে।
তবে পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে আমফানের মূল রোষে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গই। আমফানের জেরে কলকাতায় জারি করা হয়েছে সতর্কবার্তা। আজ (বুধবার) থেকে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ভোর ৫ টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কলকাতা বিমানবন্দর, জানানো হয়েছে সরকারি তরফে। ইতিমধ্যেই এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওড়িশার পারাদ্বীপ এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় প্রবল ঝোড়ো হাওয়া বইছে এবং সঙ্গে নাগাড়ে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বাংলার সাতটি জেলা ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষ প্রভাবের সম্মুখীন হতে পারে।
উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের ইতিমধ্যেই এই ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে এবং যথাসম্ভব নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে মৎস্যজীবীদের বুধ ও বৃহস্পতিবার সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেন যে বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত, যতক্ষণ না এই ঝড়ের দাপট কমে আসে ততক্ষণ যেন রাজ্যের মৎস্যজীবীরা সমুদ্রের ধারেকাছে না যান। তিনি বলেন, "একটি ঘূর্ণিঝড়টি ভয়ঙ্কর ক্ষতি করতে পারে, সুতরাং মানুষজনকে অনুরোধ করছি, আপনারা এই সময় ঘর ছেড়ে বাইরে বের হবেন না"।