দেখে নিন এই ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের সম্পর্কে ১০ টি তথ্য:
ধেয়ে আসছে আমফান, তাই ওই ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় প্রস্তুতি পর্যালোচনায় জরুরি বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ (সোমবার) বিকেল ৪টের সময় ওই বৈঠক করবেন তিনি, টুইট করে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি লিখেছেন, "দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে তার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে প্রধানমন্ত্রী @ নরেন্দ্র মোদি জি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করবেন, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ওই বৈঠকটি হবে আজ (সোমবার) বিকেল ৪টে"।
বছর খানেক আগে ওডিশা উপকূলেই আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী। ফণীর আঘাত সামলাতে না সামলাতেই এবার আমফানের আস্ফালন। পরিস্থিতি সামাল দিতে আগাম সতর্কতা হিসাবে ওড়িশা উপকূল থেকে ১০ মিলিয়ন মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্য জায়গায়, জানিয়েছেন সেরাজ্যের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। উপকূলীয় জেলা - গঞ্জম, গজপতি, পুরী, জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, ময়ূরভঞ্জ, জজপুর, কটক, খুরদা এবং নয়াগড়, এই সব এলাকায় কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এদিকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক সড়ক যোগাযোগ, পানীয় জলের সরবরাহ, বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন হাসপাতালের পরিকাঠামো যাতে ঠিক থাকে সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন। যে যে এলাকায় বেশি ঝুঁকি রয়েছে সেখানকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করার জন্য একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী ওড়িশা মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, "বরাবরের মতো, জীবন বাঁচানো আমাদের অগ্রাধিকার"।
জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর ১৭ টি দল মোতায়েন বাংলা এবং ওড়িশায়, পশ্চিমবঙ্গের ৬ জেলায় ৭ টি দল ও ওড়িশায় ১০ টি দল, চলছে প্রস্তুতি। এনডিআরএফের প্রতিটি দলে ৪৫ জন করে কর্মী রয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওড়িশার উত্তরাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র।
বুধবার পর্যন্ত কোনও মৎস্যজীবীকেই উত্তর বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমবঙ্গ-ওড়িশা উপকূলের দিকে সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উপকূলীয় এলাকায় যারা বাস করছেন তাঁরা যাতে আগে থেকেই সতর্ক থাকেন সেই কথা বলা হয়েছে। ওই সব এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং প্রচণ্ড জোরে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আইএমডি জানিয়েছে, তীব্র ঝড়ের কারণে ঘরবাড়ি, ফসলের ক্ষতি হতে পারে। উপড়ে যেতে পারে বড় বড় গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি।
পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপান বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে এই ঘূর্ণিঝড় যদি আছড়ে পড়ে তবে তার পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় গোটা রাজ্য প্রস্তুত। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলগুলিকে উদ্ধার ও ত্রাণকাজের জন্য উপকূলীয় অঞ্চল এবং অন্যান্য জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার জাতীয় সঙ্কট পরিচালনা কমিটির সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব রাজীব গৌবার একটি বৈঠক করেন। আমফানের ফলে যে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাকে আটকাতেই ওই পর্যালোচনা বৈঠক।
গত বছর ওড়িশায় আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ফণী। সেই সময় যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করে নবীন পট্টনায়েক সরকার। সেই সময় ওই রাজ্য ১৩ টি জেলার ১১ লক্ষেরও বেশি মানুষজনকে সুরক্ষিত স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছিল।