এই সুপার সাইক্লোনে বৃহৎ আকারে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শক্তি বাড়িয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে ঘুর্ণিঝড় আম্ফান (Cyclonic Storm ‘Amphan), পশ্চিম-মধ্য বঙ্গপোসাগরের অবস্থান করছে সেটি। সাগরের উত্তরে ১৭.৪ ডিগ্রি উঁচুতে, এবং ৮৭.০ ডিগ্রি পূর্ব দূরত্বে অবস্থান করছে সুপার সাইক্লোন আম্ফান। পারাদ্বীপ থেকে ৩২০ কিলোমিটার এবং দিঘার দক্ষিণ-পূর্ব ৪৭০ কিলোমিটার দূরে ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৬১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে আম্ফান। বুধবার বিকেলে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপে আছড়ে পড়ার আগে সেটি বঙ্গপোসাগরের উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে ধেয়ে এসে দিঘার ওপর দিয়ে যাবে এবং সুন্দরবন হয়ে। ঝড়ের গতি থাকবে ১৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। অন্ধ্রপ্রদেশে বিশাখাপত্তনম, ওড়িশার পারাদ্বীপ এবং গোপালপুর থেকে আম্ফানের ওপর নজরদারি চলছে বলে জানানো হয়েছে আবহওয়া দফতরের তরফে।
মানুষকে সাহায্যের জন্য খোলা হয়েছে সরকারি কন্ট্রোল রুম। নম্বর-- ২২১৪-৩৫২৬( 2214-3526) ২২১৪-১৯৯৫( 2214-1995) এবং টোল ফ্রি নম্বর হলো - ১০৭০( 1070)। ক্রমশ বাড়ছে আমফান (Cyclone AMPHAN) আতঙ্ক। রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন (Super Cyclone)। NDTV-কে আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল আনন্দ শর্মা জানাচ্ছেন, ‘‘আমরা আশঙ্কা করছি ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিমি প্রতি ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়বে আমফান। ঝড়ের গতি হতে পারে সর্বোচ্চ ১৮৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা। উপকূলবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ এবং জেলা ও রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে অন্যদের বাঁচানোর সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা খেয়াল রাখতে হবে।'' এদিকে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাজ্যের ৩ লক্ষ মানুষকে। তাঁদের মধ্যে ২ লক্ষ মানুষ দক্ষিণ ২৪ পরগনার। বাকিদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৪০ হাজার ও ১০ হাজার।
ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমফান উল্টে দিতে পারে ট্রেনের কামরা, ভাঙতে পারে ঘর
এই সুপার সাইক্লোনে বৃহৎ আকারে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সোমবার এটি সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছিল এবং মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত এটি পারাদ্বীপের ওড়িশা উপকূল থেকে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরে এবং রাজ্যের দিঘা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার সমুদ্রের দিকে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ধেয়ে আসছে আমফান, সরানো হল রাজ্যের ৩ লক্ষ মানুষকে
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং সুপার সাইক্লোন আমফানের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
আবহাওয়া দফতরের আশঙ্কা, এই ঝড়ের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা। আমফানের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি এবং নদিয়া জেলার। কাঁচা ঘর, পুরনো পাকা বাড়ি, উড়ন্ত জিনিস, রেল ও সড়ক যোগোযোগ, ফসল, বাগান, নারকেল গাছ সহ সব ধরনের বড় গাছ, বড় জাহাজ, নৌকা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তারের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে এই ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে।
ওড়িশায় এই ঝড় মূলত জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, জাজপুর, ময়ূরভঞ্জ এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাবে।