পশ্চিমবঙ্গে ফণীর প্রভাবে তেমন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়নি
কলকাতা: দুর্বল হয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্রের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে প্রচণ্ড তীব্র এই ঘূর্ণিঝড় ফণী (Severe cyclonic storm Fani) দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং প্রতিবেশী বাংলাদেশ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, সারা রাত এই শহরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো বাতাস বয়ে গেছে। তবে ঘূর্ণিঝড় ফণী এই রাজ্যে কোনও ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়নি তেমন।
আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্রের উপমহাপরিচালক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ফণী উত্তর- উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তী ছয় ঘন্টার মধ্যে তা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। এটি উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে আরও এগিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়বে দুপুর নাগাদই এবং প্রায় ৫০-৭০ কিলোমিটার ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে সেখানে।” ওড়িশার এই অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় আরও উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যাওয়ার আগে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের উপর দিয়ে বেলা সাড়ে ১২ টা নাগাদ প্রবেশ করেছে তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে। সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “এটি হুগলির আরামবাগের উপর দিয়ে চলে গেছে এবং এখন নদিয়া জেলায় রয়েছে এবং মুর্শিদাবাদের দিকে চলে যাচ্ছে।”
Cyclone Fani: ফণীর ছোবলে উলটে গেল ২৫০ ফুটের ক্রেন, দেখুন তাণ্ডবের ভিডিও
এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কয়েকটি মাটির বাড়ি ভেঙ্গে পড়ছে এবং গাছ উপড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে, তবে কোনও জেলা থেকেই হতাহতদের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সিভিক সংস্থা ও স্থানীয় কাউন্সিলর ও ইঞ্জিনিয়ারসহ দুর্যোগের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য শহরে সারা রাত নজরদারি চালিয়েছেন। ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমরা এই রাজ্যে ও কলকাতায় ফণীর মোকাবিলার জন্য জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার সব ব্যবস্থাই করেছি। তবে ভাগ্য ভালো, বড় কিছু ঘটেনি।”
অন্যদিকে, ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (Airports Authority of India) শনিবার সকাল ৯.৫৭ মিনিটে ফের কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিমানের ওঠা নামা শুরু করে দেন। শুক্রবার দুপুর ৩ টে নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরের বিমান পরিষেবা স্থগিত করা হয়। শিয়ালদহ ও হাওড়া বিভাগে ট্রেন পরিষেবাও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে বলেই রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ধ্বংসের দিন-ই পৃথিবীর আলো দেখল ‘ঝড়ের সন্তান'!
শুক্রবার রাতে কলকাতা শহরের বেনিয়াটোলা লেনের মাঝামাঝি জায়গায় একটি বাড়ির ছাদের বড় একটি অংশ ধ্বসে পড়ে পাঁচজন আহত হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, কলকাতা এবং সুন্দরবনের নানা অঞ্চলে ফণীর মোকাবিলা করার জন্য নানা সাবধানতা গ্রহণ করেছিল।
শুক্রবার ওড়িশাতে তাণ্ডব চালিয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর শক্তি কিঞ্চিৎ হ্রাস পেয়েছে। প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও ১৭৫ কিলোমিটার/ ঘণ্টা গতিবেগে এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশাতে কমপক্ষে আটজন মানুষের প্রাণ নিয়েছে।