This Article is From Sep 22, 2019

"প্রিয় কাকিমা...": যাদবপুরে হেনস্থা করা এক ছাত্রের মাকে কী বললেন বাবুল সুপ্রিয়?

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী Babul Supriyo-কে ঘিরে ধরে হেনস্থা করে একদল ছাত্র, "ওরা আমার চুল ধরে টানে এবং ধাক্কা দেয়”, অভিযোগ করেন তিনি।

ভিডিওতে দেখা যায় Babul Supriyo-কে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে ধাক্কা দেওয়া হচ্ছে ও তাঁর চুল ধরে টানা হচ্ছে।

কলকাতা:

বৃহস্পতিবার অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) গেলে চরম হেনস্থা হতে হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে, তাঁকে হেনস্থা করেন বিশ্ববিদ্য়ালয়েরই একদল ছাত্র। তবে সেই ছাত্রদের প্রতি বদলা নেওয়ার মনোভাব রাখছেন না বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়। এক ছাত্রের মাকে তিনি (Babul Supriyo) ইতিমধ্যেই আশ্বস্ত করেছেন যে ছাত্রটির কেরিয়ারের কোনও ক্ষতি করবেন না তিনি। জানা গেছে, ওই ছাত্রের মা হাত জোড় করে বারবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে তাঁর ছেলের কীর্তির জন্যে ক্ষমা চান ও ছেলের কেরিয়ারের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারেও অনুরোধ করেন।  শুক্রবার বাবুল ওই ছাত্রের ছবি সহ ঘটনার নিন্দা করে টুইট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, যারা তাঁকে হেনস্থা করেছে তাদের মানসিক পুনর্বাসন দেওয়া উচিত। তিনি তাঁর টুইটে আক্রমণকারীদের ‘‘কাপুরুষ'' বলেন। পাশাপাশি তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় "বিনা উস্কানিতে এই হামলা" করার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেন তাও দেখবেন বলে লেখেন বাবুল। যাঁরা তাঁকে সেদিন হেনস্থা করেছিল সেই "কাপুরুষদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি কলুষিত ও নষ্ট করতে দেওয়া হবে না" বলেও টুইট করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

যাদবপুরের আক্রমণকারীদের ‘‘কাপুরুষ'' বলে টুইট করলেন বাবুল সুপ্রিয়

"প্রিয় কাকিমা, চিন্তা করবেন না। আমি এমন কোনও ব্যবস্থা নেব না যা আপনার ছেলের কেরিয়ারের ক্ষতি করে,"  আসানসোল আসনের বিজেপি সাংসদ এক টুইট বার্তায় এ কথা লেখেন।

ওই ছাত্রের নাম দেবাঞ্জন বল্লভ এবং বর্ধমান শহরের বাসিন্দা তাঁর মা, নিজের ছেলেকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্যে বাবুলের কাছে অনুরোধ করেন। তিনি জোড়হাত করে বলেন যে ছেলেকে পুলিশ ধরলে তাঁর কেরিয়ার নষ্ট হয়ে যাবে।

"আমি চাই ছাত্রটি নিজের ভুল থেকে শিখুন। আমি কারও বিরুদ্ধে কোনও এফআইআরও দায়ের করিনি বা কাউকেও এফআইআর করার অনুমতিও দিইনি। শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠুন উনি," টুইটে লেখেন বাবুল সুপ্রিয়।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, বিজেপি সাংসদের টুইটটিতে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ছবিও রয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে ওই ছাত্রের মা হাত জোড় করে কাঁদতে কাঁদতে বাবুল সুপ্রিয়ের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছেন।

বাবুল সুপ্রিয়ের এই টুইটের জবাবে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন বল্লভ যিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নন,  আসলে সংস্কৃত কলেজের ছাত্র তিনি বলেন যে, তিনি শুধু অসমের এনআরসি সম্পর্কে প্রশ্ন করেন আর তাতেই "মন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে যান"।

যদিও কলা অনুষদ ছাত্র ইউনিয়নের (এএফএসইউ) সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথ দাবি করেছেন যে দেবাঞ্জন বল্লভ নামে কোনও ছাত্র সেদিনের ওই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেননি।

"প্রধানত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিল, কেননা এর আগে উস্কানিমূলক বিবৃতি দিয়েছিলেন বাবুল," পিটিআইকে জানিয়েছেন দেবনাথ । তাহলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সংস্কৃত কলেজের একজন ছাত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের সময় কেন উপস্থিত ছিলেন তা ব্যাখ্যা করতে পারেনি এএফএসইউ ।

যাদবপুরে বাবুলের নিগ্রহের প্রতিবাদে বিজেপির মিছিল শহরে

ওই দিন বাবুল সুপ্রিয়কে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কালো পতাকা দেখানো হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন সিপিআইএমের স্টুডেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার সদস্যরা...বেরোনোর সময় তাঁকে হেনস্থা করারও অভিযোগ ওঠে। বাবুল সুপ্রিয় সেই সময় বলেন, “আমি এখানে রাজনীতি করতে আসিনি। তবে যেভাবে আমায় হেনস্থা করা হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়ার আচরণে আমি মর্মাহত। তারা আমার চুল ধরে টানে এবং ধাক্কা দেয়”। তিনি আরও বলেন, পড়ুয়ারা তাঁকে “খোলাখুলিভাবে তাঁদের মাওবাদী” বলার জন্য প্ররোচনাও দেয়। তাঁকে বেরোতে না দিয়ে গাড়ি আটকে দেয় বলেও অভিযোগ তোলেন বাবুল সুপ্রিয়। পরে কেন্দ্রীয়মন্ত্রীকে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে ছুটে যান তিনি। 

যদিও এই ঘটনায় যেভাবে রাজ্যপাল ছুটে গেছেন, তাতে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে। কেননা বাবুল সুপ্রিয়ের হেনস্থার ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।

.