সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল
নয়াদিল্লি: .জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের (Ajit Doval) সঙ্গে বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah), পাশাপাশি পদস্থ আধিকারিক, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘন্টায় তিনবার বৈঠক করেন তিনি। সংঘর্ষে (Delhi Violence) মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এবং বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনটি নিয়ে সংঘর্ষের খবর অব্যাহত। সংঘর্ষ কবলিত উত্তর পূর্ব দিল্লিতে বুধবার যান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন, তার কয়েকঘন্টা পরেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। অজিত দোভালকে আটকে আবেগপ্রবণভাবে সাহায্যের আর্জি জানান এক কিশোরী, তার কিছুক্ষণ আগেই তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ইনশাল্লা, এখানে শান্তি ফিরবে”।
ওই কিশোরী বলে, “আমি একজন ছাত্রী, রাতে আমরা ঘুমাতে পারছি না, আমরা যুদ্ধ করছি না, আমি পড়তে যেতে পারছি না”।
অমিত শাহের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধি, সন্ধ্যা ৬.৩০টা নাগাদ বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেখানে উপস্থিত ছিলেন আইপিএস আধিকারিক এসএন শ্রীনিবাসন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব অজয়কুমার ভাল্লা, গোয়েন্দা সংস্থা আইবির ডিরেক্টর অরবিন্দ কুমার, এবং দিল্লি পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়েক।
মঙ্গলবার বেলা ১.৩০টা নাগাদ দ্বিতীয় বৈঠক হয়, স্বরাষ্ট্রসচিব গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টরের সঙ্গে নর্থ ব্লকে পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
৯০ মিনিট আগে আরও একটি বৈঠক হয়, সেখানে সমস্ত দলকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও নেতাদের পাঠিয়ে শান্তির আবেদন জানাতে বলেন এবং ভীতির আবহ কাটাতে ও মানুষের মধ্যে গুজব ছড়ানো বন্ধের আবেদন জানাতে বলেন।
অমিত শাহ বলেন, “দলীয় রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠলে তবেই পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করা যাবে”।
![k1aegcog](data:image/svg+xml;base64,PD94bWwgdmVyc2lvbj0iMS4wIiBlbmNvZGluZz0idXRmLTgiPz4KPCEtLSBHZW5lcmF0b3I6IEFkb2JlIElsbHVzdHJhdG9yIDI0LjMuMCwgU1ZHIEV4cG9ydCBQbHVnLUluIC4gU1ZHIFZlcnNpb246IDYuMDAgQnVpbGQgMCkgIC0tPgo8c3ZnIHZlcnNpb249IjEuMSIgaWQ9IkxheWVyXzEiIHhtbG5zPSJodHRwOi8vd3d3LnczLm9yZy8yMDAwL3N2ZyIgeG1sbnM6eGxpbms9Imh0dHA6Ly93d3cudzMub3JnLzE5OTkveGxpbmsiIHg9IjBweCIgeT0iMHB4IgoJIHZpZXdCb3g9IjAgMCAxNDAgMTA2IiBzdHlsZT0iZW5hYmxlLWJhY2tncm91bmQ6bmV3IDAgMCAxNDAgMTA2OyIgeG1sOnNwYWNlPSJwcmVzZXJ2ZSI+CjxzdHlsZSB0eXBlPSJ0ZXh0L2NzcyI+Cgkuc3Qwe29wYWNpdHk6Ny4wMDAwMDBlLTAyO2ZpbGw6I0YxRjNGNzt9Cgkuc3Qxe29wYWNpdHk6MC4zNDtmaWxsOiNBRkFGQUY7ZW5hYmxlLWJhY2tncm91bmQ6bmV3ICAgIDt9Cjwvc3R5bGU+CjxyZWN0IGNsYXNzPSJzdDAiIHdpZHRoPSIxNDAiIGhlaWdodD0iMTA2Ii8+CjxkZXNjPkNyZWF0ZWQgd2l0aCBTa2V0Y2guPC9kZXNjPgo8cGF0aCBjbGFzcz0ic3QxIiBkPSJNMTAzLjcsNDYuMkw5OC4zLDU3bC01LjktMTAuN0g2My41aC0wLjRoLTguOXY0LjZjMS4yLDAuMywyLDEuNCwyLDIuNmMwLDEuMi0wLjksMi4yLTIsMi42djQuNmg4LjlsMCwwaDMKCWM0LjMsMCw2LjMtMi41LDYuMy02LjZ2LTEuNWMwLTAuNCwwLTEuNi0wLjMtMi44aDYuOHYxMWg0LjN2LTExaDYuMWw2LjEsMTFoNS41bDcuNy0xNC40SDEwMy43eiBNNjgsNTVjMCwxLjQtMC44LDIuMi0yLjYsMi4yaC0yCgloLTAuNGgtNC41di03LjZoNC45bDAsMGgyYzEuNywwLDIuNiwwLjksMi42LDIuMlY1NXoiLz4KPHBhdGggY2xhc3M9InN0MSIgZD0iTTUwLjgsNTMuNGMwLTEuMiwwLjktMi4zLDItMi42di00LjVoLTQuNXYxMC4yaC0wLjJjLTAuOSwwLTEuNS0xLTEuOC0xLjRsLTIuNS01Yy0xLjItMi40LTMuMi0zLjgtNS42LTMuOAoJaC00Ljd2MTQuNGg0LjZWNTAuNGgwLjJjMSwwLDEuNiwxLjEsMS44LDEuNGwyLjYsNWMxLjEsMi40LDMuMiwzLjgsNS41LDMuOGg0LjdWNTZDNTEuNiw1NS43LDUwLjgsNTQuNyw1MC44LDUzLjR6Ii8+Cjwvc3ZnPgo=)
পরপর চারদিন নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে ও বিপক্ষে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত উত্তর পূর্ব দিল্লি
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং আপের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবরকম সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছেন তিনি।
এই তিন বৈঠকে ছাড়াও নিয়মিতভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন অমিত শাহ।
সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ পদস্থ কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন অমিত শাহ, তার আগেরদিনই মৌজপুরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে, সেখানে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভরতদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে দেখা যায় স্থানীয় বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রকে।
দিল্লি পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে, সেদিন গভীর রাতে পর্যালোচনা বৈঠক করেন অমিত শাহ।
নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে ও বিপক্ষে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, এক আইবি অফিসার সহ ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহতের সংখ্যা ২০০ এর বেশি
পাথর ছোঁড়া, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের খবর পাওয়া গিয়েছে বিভিন্ন জায়গা থেকে, রাস্তায় লোহার রড., লাঠি বন্দুক নিয়ে আস্ফালন করতে দেখা গিয়েছে দুষ্কৃতীদের। বিভিন্ন ভবন, দোকান এবং জায়গা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গিয়েছে, একটি পেট্রোল পাম্পেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, তবে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সেনা নামানোর জল্পনা খারিজ করে দিয়ে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বলা হয়, যথেষ্ঠ পরিমাণে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন রয়েছে ঘটনাস্থলে।