শাহিনবাগকেই এবার আসন্ন দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে (Delhi Assembly Elections 2020) নির্বাচনী পাশা করতে চায় ভারতীয় জনতা পার্টি। "শাহিনবাগের সমর্থনে নাকি বিরোধিতায় আপনি", এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই একটি সমীক্ষা চালানোর পথে হাঁটতে চলেছে গেরুয়া দল (BJP)। বিজেপিরই এক নেতা জানিয়েছেন যে, দলের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষ তো বটেই, এমনকি আম আদমি পার্টি এবং কংগ্রেসকেও জিজ্ঞাসা করা হবে যে তাঁরা শাহিনবাগের আন্দোলনকে সমর্থন করেন নাকি এর বিরোধিতা করছেন? ওই নেতা বলেন, "সরিতা বিহার বা তার আশেপাশের অঞ্চলে যাঁরা থাকেন বা সেখান দিয়ে যেতে গিয়ে শাহিনবাগের কারণে ব্যাপক যানজটে পড়ে দিনের পর দিন যাঁরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন, যেভাবে স্কুল কলেজে যেতে পারছে না পড়ুয়ারা, যেভাবে ওই অঞ্চলে দোকান খোলা যাচ্ছে না, এই সব সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন তাঁদের পক্ষে শাহিনবাগকে সমর্থন করা কঠিন হবে"। অনেকেই বলছেন এভাবেই বিরোধী-প্রচারকে নিজেদের পক্ষে প্রচারের কাজে লাগিয়ে হাওয়া ঘুরিয়ে দিতে চায় পদ্মের দল। সিএএ-র (CAA) বিরুদ্ধে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির শাহিনবাগ (Shaheen Bagh) অঞ্চলে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে, ওই অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন কয়েকশো মহিলা এবং শিশুরাও।
CAA: "এত জোরে বোতাম টিপুন যাতে শাহিনবাগ কারেন্ট খায়", বললেন অমিত শাহ
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কাঁধে দিল্লি নির্বাচনে গেরুয়া পতাকার অনুকূলে হাওয়া টানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। সেই মতো যা পরিকল্পনা করা হয়েছে তা হল, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিজেপির ২০০ জন সাংসদ দিল্লির নির্বাচনী ময়দানে নামবেন। ভারতীয় জনতা পার্টি প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে ৩ জন করে সাংসদকে প্রচারের দায়িত্ব দেবে। এ ছাড়া ২ ফেব্রুয়ারি থেকে অমিত শাহের নেতৃত্বে ডোর টু ডোর ক্যাম্পেন অর্থাৎ ঘরে ঘরে গিয়ে রাজধানীর মানুষকে বোঝানোর কাজে নামবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা, দিল্লি জুড়ে প্রচারও করবেন তাঁরা।
অন্যদিকে, দিল্লি মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অভিযোগ করেছেন যে শাহিনবাগকে নিয়ে 'নোংরা রাজনীতি' করছে বিজেপি। কেজরিওয়াল টুইট করেন, 'শাহিনবাগের রাস্তা বন্ধ থাকায় লোকজন সমস্যায় পড়ছেন। বিজেপিও চায় না যে রাস্তা খুলে দেওয়া হোক। বিজেপি আসলে নোংরা রাজনীতি করছে। তা যদি না হয় তাহলে বিজেপি নেতাদের অবিলম্বে শাহিনবাগে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলা উচিত এবং রাস্তা খোলার চেষ্টা করা উচিত।
"Shaheen Bagh-এর আসল রূপ": প্রতিবাদী এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে দুষলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
কেজরিওয়াল বলেন, "ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার কেন দিল্লির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ করছে না? অথচ রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিক সম্মেলন করছেন, তার থেকে তো তিনি শাহিনবাগ ঘুরে আসতে পারতেন। সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে দিল্লির আইন-শৃঙ্খলা সমস্যার উন্নতি হবে না এটা সবাই জানে। কীভাবে কাজ করতে হয় তা আমাদের কাছ থেকে শিখুন। আমরা জানি কীভাবে কাজ করতে হয়। ওঁরা শুধু সাংবাদিক সম্মেলনই করে এবং নোংরা রাজনীতিতে অংশ নেয়। আজ এই কথাটা লিখে রাখুন, ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই রাস্তা খোলা হবে না, অথচ দেখবেন ৯ ফেব্রুয়ারি ঠিক রাস্তা খোলা হবে। আসলে ভারতীয় জনতা পার্টি এখন শাহিনবাগের কারণে আটকে থাকা রাস্তা খুলতে চায় না"।