গোটা দিল্লির (Delhi Election 2020) মতো শাহিনবাগেও (Shaheen Bagh) চলছে ভোটদান। কড়া নিরাপত্তার সঙ্গে ভোটগ্রহণ চলছে সেখানে। সম্প্রতি শাহিনবাগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিক্ষোভ (Anti-CAA Campaign) নজরে এসেছে সারা দেশের। আপ ও বিজেপির সংঘাতকে কেন্দ্র করে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের নিউক্লিয়াস হয়ে উঠেছে শাহিনবাগ। শাহিনবাগের এক স্কুলে দেখা গেল ভোটের জন্য দীর্ঘ লাইন। গত দু'মাস ধরে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের কারণে গোটা দেশের নজর রয়েছে শাহিনবাগের দিকে। শাহিনবাগ ওখলা বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এখানে সংখ্যালঘু ভোটারের আধিক্য। দিল্লি নির্বাচনের প্রচারে বিজেপি বারবার শাহিনবাগের প্রতিবাদীদের ‘‘বিশ্বাসঘাতক'' ও ‘‘জাতীয়তা বিরোধী'' বলে কটাক্ষ করেছে।
২০ বছর দিল্লির ক্ষমতায় আসতে পারেনি বিজেপি। এবার নির্বাচনি প্রচারে মরিয়া গেরুয়া শিবির বারবার আক্রমণ করেছে শাহিনবাগকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ভোটারদের কাছে আবেদন জানান, এত জোরে ইভিএমের বোতাম টিপতে যাতে সেই তরঙ্গ পৌঁছে যায় শাহিনবাগে।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও তাঁর দল আপ অবশ্য ভোটের প্রচারে ফোকাস রেখেছেন স্কুল, জল, বিদ্যুতের মতো স্থানীয় ইস্যুতে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শাহিনবাগ উঠে এসেছে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে।
শাহিনবাগের শাহিন পাবলিক স্কুলে এক ভোটার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানাচ্ছেন, ‘‘আমি ভোট দিয়েছি ভারত ও তার সংবিধানের জন্য। আমরা ভারতের নাগরিক।''
আর এক মহিলা ভোটার NDTV-কে জানান, ‘‘আমি মনে করি এবার মানুষ ভোট দিচ্ছে জাতীয় ইস্যুতে। আমাদের এলাকায় জল বা বিদ্যিতের মতো কোনও স্থানীয় সমস্যা নেই। মানুষের উচিত এসে ভোট দেওয়া।''
মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক শাহিনবাগের পাঁচটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রকে ‘‘গুরুতর'' আখ্যা দেন।
এই অঞ্চলের আপ প্রার্থী অমনতুল্লা খান। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের পরভেজ হাশমি ও বিজেপির ব্রহ্ম সিংহ বিধুরি।
২০১৫ নির্বাচনে আপ ৭০টির মধ্যে ৬৭টি আসন পেয়েছে। বিজেপি পেয়েছিল তিনটি আসন। কংগ্রেস কোনও আসন পায়নি।
১৮ ডিসেম্বর থেকে দিল্লির শাহিনবাগের রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন অসংখ্য পুরুষ, মহিলা এবং শিশুরা। ফলে প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে দক্ষিণ-দিল্লির রাস্তাঘাট। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন তাঁরা।
শুধু শাহিনবাগই নয়, নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সারা দেশে বিক্ষোভ চলছে। বিশেষত কলেজ ক্যাম্পাসে এই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতে এই প্রথমবার নাগরিকত্ব আইনে ধর্মকে নাগরিক হওয়ার মাপকাঠি করা হয়েছে। সরকারের দাবি, এই আইনের ফলে, ২০১৫ এর আগে, ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে চলে আসা তিন মুসলিম অধ্যুষিত দেশের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ সহজ হবে । কিন্তু সমালোচকদের দাবি, এই আইনটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিভাজনমূলক এবং তা সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতাকে লঙ্ঘন করে।