রবিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে দিল্লির এক কারখানায়।
New Delhi: উত্তর দিল্লির রানি ঝাঁসি রোডের জনবহুল অনজ মান্ডিতে রবিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড (Delhi Fire) ঘটেছে এক কারখানায়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত তেতাল্লিশ জনের। মৃত্যু আসন্ন বুঝতে পারার পর উত্তরপ্রদেশের এক কর্মী (Delhi Fire Victim) তাঁর ভাইকে ফোন করেন। জীবনের শেষ ফোনে তিনি বাড়ির সকলের দেখভাল করার জন্য বলেন ভাইকে। মর্মস্পর্শী এক অডিও ক্লিপে শোনা গিয়েছে বিপন্ন ওই কর্মীর কণ্ঠস্বর। মুশারফ আলি নামের ৩০ বছরের ওই কর্মী ছিলেন উত্তরপ্রদেশের বিজনৌরের বাসিন্দা। বিবাহিত মুশারফের চারটি সন্তান রয়েছে। ছোটভাইকে তাঁর স্ত্রী-পুত্র সকলের দেখভাল করতে বলেন মুশারফ, ওই শেষ ফোনে।
শেষ ফোনে ভাইকে তিনি বললেন, ‘‘ভাই, আমি মারা যাচ্ছি। চারদিকে আগুন। ভাই, কাল দিল্লি এসে আমাকে নিয়ে যাস। চারদিকে আগুন। পালাবার কোনও পথ নেই। আমি আর বাঁচব না। আমার পরিবারকে দেখিস ভাই... আমি শ্বাস নিতে পারছি না... আমাকে এসে নিয়ে যাস... পরিবারকে দেখিস।''
রাজধানী অগ্নিকাণ্ডে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, কমপক্ষে মৃত ৪৩
ওই ফোনে এরপর তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি মরতে চলেছি ভাই, আর তিন-চার মিনিট বাকি... সবই ঈশ্বরের ইচ্ছা।''
ভাই তাঁকে বলছিলেন বাঁচার চেষ্টা করতে। তিনি তখন বলেন, ‘‘আর কোনও রাস্তা নেই।'' মুশারফ আলি তাঁর ভাইকে বলেন, প্রথমে বাড়ির বড়দের তাঁর মৃত্যু সংবাদ দিতে। প্রসঙ্গত, গত চার বছর ধরে দিল্লির এই কারখানায় কর্মরত ছিলেন তিনি। মৃত মুশারফ রেখে গেলেন স্ত্রী, তিন কন্যা, এক পুত্রকে।
‘‘সত্যি নায়ক'': এগারো জনের প্রাণ বাঁচিয়ে মন জিতলেন দমকলকর্মী
ভোর ৫ টা ২২ মিনিটে প্রথম আগুন লাগে। মৃত্যু হয়েছে অন্তত তেতাল্লিশ জনের। এঁদের অধিকাংশই শ্রমিক এবং কারখানাতেই তাঁরা ঘুমোতেন। আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এনডিআরএফ ডেপুটি কম্যান্ডার আদিত্যপ্রতাপ সিংহ জানিয়েছেন, বাড়িটির তিন ও চারতলায় তাঁরা ঘন ধোঁয়া পেয়েছেন। ঘরগুলি কার্বন মনোক্সাইডে পূর্ণ ছিল।
ধোঁয়ায় ভরে থাকার জন্যই ঘরে থাকা অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে শ্বাসকষ্টে।
কারখানার দুই মালিকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।