দেশে ধর্ষণের সংখ্যা বাড়ার পিছনে দায়ী "ইন্দিরা জাইজিংয়ের মতো লোক", বললেন Asha Devi
হাইলাইটস
- নির্ভয়ার মা আশা দেবীর রোষে পড়লেন আইনজীবী ইন্দিরা জাইসিং
- ওই আইনজীবী নির্ভয়ার মাকে ৪ দোষীর ফাঁসির সাজা রদ করার পরামর্শ দেন
- রাজীব হত্যা মামলায় সনিয়া গান্ধির উদাহরণ তুলে ধরে ওই কথা বলেন আইনজীবী
নয়া দিল্লি: "দোষীদের ক্ষমা করুন এবং তাদের ফাঁসি রদ করুন", নির্ভয়ার মাকে এই পরামর্শ দিয়ে তাঁর রোষে পড়লেন আইনজীবী ইন্দিরা জাইসিং (Indira Jaising)। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে একটি চলন্ত বাসে আশা দেবীর মেয়েকে গণধর্ষণ (2012 Delhi Gang Rape) ও নির্যাতন করে দিল্লির রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়, পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্ভয়ার। ওই ধর্ষণকাণ্ডের (Nirbhaya Rape Case) মামলার বিচারে দোষীদের ফাঁসির সাজা শোনানো হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় ৪ সাজাপ্রাপ্তের ফাঁসির সাজা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। যেভাবে সনিয়া গান্ধি তাঁর স্বামী তথা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির হত্যাকারীদের মধ্যে অন্যতম নলিনী মুরুগানকে ক্ষমা করেছিলেন সেভাবেই নির্ভয়ার মা আশা দেবীকে দোষীদের (Nirbhaya Case) ক্ষমা করার পরামর্শ দেন ওই আইনজীবী, আর তা শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি।
"ইন্দিরা জাইসিং কীভাবে আমাকে এ জাতীয় পরামর্শ দেওয়ার সাহস করেছেন তা বিশ্বাস করতে পারছি না। কয়েক বছর ধরে আমি সুপ্রিম কোর্টে চক্কর কাটার সময় তাঁর সঙ্গে অনেকবার সাক্ষাৎ হয়েছে, সেই সময় একবারও তিনি আমার কুশল সংবাদ নেননি অথচ আজ তিনি দোষীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন। এ জাতীয় লোকেরা ধর্ষকদের সমর্থন করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে। আর এই জন্যেই দেশে ধর্ষণের ঘটনা কমছে না", সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেন ক্ষুব্ধ আশা দেবী।
Nirbhaya Case:"রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে এই ঘটনাকে ব্যবহার করা হচ্ছে": ভেঙে পড়লেন নির্ভয়ার মা
তিনি আরও বলেন, "আমাকে এ জাতীয় পরামর্শ দেওয়ার ইন্দিরা জাইসিং কে? পুরো দেশ চায় দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করা হোক। ওঁর মতো মানুষের কারণেই ধর্ষণের শিকাররা সুবিচার পান না"।
নির্ভয়া মামলায় ৪ অভিযুক্তের ফাঁসির সাজার বিরোধিতা করে আইনজীবী ইন্দিরা জাইসিং টুইট করেন, "আমি আশা দেবীর কষ্টের প্রতি পুরোপুরি সহানুভূতিশীল। কিন্তু তারপরেও তাঁকে আমি অনুরোধ করবো যেভাবে সনিয়া গান্ধি রাজীব গান্ধির অন্যতম হত্যাকারী নলিনী মুরুগানকে ক্ষমা করে তাঁর মৃত্যুদণ্ড রদ করে দেন সেভাবেই যেন এগিয়ে আসেন নির্ভয়ার মা। তিনিই পারেন এই ফাঁসি আটকাতে। আমরা সবাই আপনার (আশা দেবী) সঙ্গে রয়েছি তবে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী আমরা" ।
এর আগে নির্ভয়ার মা আশা দেবী বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ব্যবহার করা হচ্ছে দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের মতো নৃশংস ঘটনাকে।
Nirbhaya case: ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬ টায় ফাঁসি নির্ভয়া গণধর্ষণ মামলার ৪ আসামির
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে ২৩ বছরের এক তরুণী তাঁর বন্ধুর সঙ্গে একটি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ দিল্লিতে। ফেরার পথে তাঁরা বাসের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। এই সময় একটি ফাঁকা বেসরকারি বাসে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়। বাসে ছিল ছ'জন ব্যক্তি। এরপর তারা ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও লোহার রড দিয়ে নির্যাতন করে কয়েক ঘণ্টা ধরে। তারপর রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। তাঁর সঙ্গীও আহত হন। ২৯ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। গোটা দেশ রাগে, ক্ষোভে গর্জে উঠেছিল এমন অমানুষিক বর্বরতার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার নির্ভয়া গণধর্ষণ মামলার ৪ আসামির জন্য নতুন করে মৃত্যুদণ্ড পরোয়ানা জারি করা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি ওই ৪ আসামির ফাঁসি হবে ভোর ৬ টায়। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ গণধর্ষণের অন্যতম আসামি মুকেশ সিংয়ের দায়ের করা প্রাণভিক্ষার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই নতুন করে এই ফাঁসির পরোয়ানা জারি করা হয়। এর আগে বিনয় শর্মা, মুকেশ সিং, অক্ষয় কুমার সিং এবং পবন গুপ্তকে ২২ জানুয়ারি সকাল ৭ টায় দিল্লির তিহার জেলে ফাঁসিতে ঝোলানোর কথা ছিল। কিন্তু আসামি মুকেশ নতুন করে ফাঁসি মকুবের আর্জি জানিয়ে আবেদন করায় ওই নির্ঘণ্ট পিছিয়ে যায়।