পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলি হয়েছেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি জাস্টিস এস মুরলিধর।
হাইলাইটস
- দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি জাস্টিস এস মুরলিধরের বদলি ঘিরে বিতর্ক শুরু
- বিজেপি নেতাদের সমালোচনা করার পরই তাঁর বদলির নির্দেশ ঘিরে বিতর্ক
- সরকার জানাচ্ছে, বিচারপতির অনুমতি নেওয়া হয়েছিল বদলির সিদ্ধান্তের আগে
নয়াদিল্লি: দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি জাস্টিস এস মুরলিধর (Justice Muralidhar), যিনি বুধবার দিল্লিতে হওয়া হিংসার জন্য কেন্দ্র, রাজ্য সরকার ও দিল্লি পুলিশের সমালোচনা করেছিলেন তাঁকে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে (Punjab And Haryana High Court) বদলি করা হয়েছে। তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখার অভিযোগে চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি সমালোচনা করেছিলেন পুলিশের। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বদলির নির্দেশ ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সরকারের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, এই বদলির সিদ্ধান্ত সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মধ্যেই নেওয়া হয়েছে এবং এর জন্য বিচারপতির অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ টুইট করে কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন একটি নিয়মমাফিক বদলির ঘটনাকে নিয়ে রাজনীতি করার জন্য।
উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসার বলির সংখ্যা বেড়ে হল ৩২
তিনি তাঁর টুইটে জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারিই ওই সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম তাঁর বদলির প্রস্তাব দিয়েছিল।
দিল্লি হাইকোর্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী বিচারপতি জাস্টিস এস মুরলিধরের বদলির বিজ্ঞপ্তি বুধবার রাতে ইস্যু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ১২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম থেকে এটি সুপারিশ করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি মুরলিধরকে পঞ্জাব ও হরিয়ানা কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হল।
'রাতারাতি মহল্লা পুড়ে ছাই!' দিল্লি হিংসায় আপশোস অনুরাগ কাশ্যপের
তবে ওই বিজ্ঞপ্তিতে বদলির জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়নি বিচারপতি এস মুরলিধরকে। যদিও সাধারণত এর জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়।
বুধবার বিচারপতি মুরলিধর বলেছিলেন, ‘‘আমরা আর একটা ১৯৮৪-র মতো ঘটনা হতে দিতে পারি না দেশে।'' তিনি কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি সরকার— উভয়কেই নির্দেশ দিয়েছিলেন দিল্লির হিংসা রদে একসঙ্গে কাজ করতে। প্রসঙ্গত, দিল্লির হিংসায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩২-এ পৌঁছেছে।
চার বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর, অভয় ভার্মা ও পরবেশ ভার্মার উস্কানিমূলক ভাষণের ভিডিওকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া পিটিশনের শুনানিতে বিচারপতি মুরলিধর ওই মন্তব্য করেছিলেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন ওই চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়নি। তিনি দিল্লির পুলিশ প্রধানকে এফআইআর না দায়ের করার পরিণতি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার কথা বলেন।
বুধবার বিচারপতি মুরলিধর বলেছিলেন, ‘‘আমরা আর একটা ১৯৮৪-র মতো ঘটনা হতে দিতে পারি না দেশে।'' তিনি কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি সরকার— উভয়কেই নির্দেশ দিয়েছিলেন দিল্লির হিংসা রদে একসঙ্গে কাজ করতে।
চার বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর, অভয় ভার্মা ও পরবেশ ভার্মার উস্কানিমূলক ভাষণের ভিডিওকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া পিটিশনের শুনানিতে বিচারপতি মুরলিধর ওই মন্তব্য করেছিলেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন ওই চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়নি। তিনি দিল্লির পুলিশ প্রধানকে এফআইআর না দায়ের করার পরিণতি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার কথা বলেন।
সেই সময় কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছিলেন, এফআইআর সঠিক সময়েই দায়ের হবে। একথায় বিচারপতি মুরলিধর প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কোনটা সঠিক সময়, মিস্টার মেহতা? শহর জ্বলছে।''
এবার এই মামলা দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ধীরুভাই নারানভাই পটেলের বিচারাধীন।
প্রিয়ঙ্কা গান্ধি টুইট করে বিচারপতির বদলির সমালোচনা করেছেন। তিনি লেখেন, এই বদলির নির্দেশ এই মুহূর্তে ততটা ‘শকিং' নয়। কিন্তু এটি একই সঙ্গে দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।
রাহুল গান্ধি তাঁর টুইটে বিচারপতি বিএইচ লোয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। ২০১৪ সালে মারা যান তিনি। তিনি সোহরাবুদ্দিন শেখের ‘ফেক' এনকাউন্টারের শুনানির মামলার দায়িত্বে ছিলেন। ওই মামলায় অমিত শাহ ছিলেন অন্যতম অভিযুক্ত। সেই সময় এই নিয়ে বিপুল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছিল।
আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ রাহুলের টুইটের সমালোচনা করে লেখেন, ওই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচার হয়েছিল। তিনি লেখেন, ‘‘যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা বিচার ব্যবস্থাকে সম্মান করেন না।'' তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘রাহুল গান্ধি কি নিজেকে সুপ্রিম কোর্টের ঊর্ধ্বে মনে করেন?''