कोर्ट आज जारी करेगा डेथ वारंट?
গত সোমবার পাতিয়ালা হাউস কোর্ট নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার ৪ আসামির ফাঁসি স্থগিত করেছিল। গত ৩ মার্চ তাদের ফাঁসিতে ঝোলানোর কথা ছিল। কিন্তু অন্যতম আসামি পবন গুপ্তা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করায় তাঁদের ফাঁসি অকার্যকর থাকে। যদিও পরে অন্য ৩ জনের মতোই চতুর্থ আসামি পবনের প্রাণভিক্ষার আবেদনও খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি।
এর আগে প্রথমবার ২২ জানুয়ারি তাঁদের ফাঁসির তারিখ স্থির করা হয়। পরে তা পিছিয়ে হয় ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তারপরেই আসামি পক্ষের আইনজীবী আইনি মার প্যাঁচ প্রয়োগ করে সেই ফাঁসির দিনটিও বাতিল করে দেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করার জন্যে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হলে সেই তারিখ হতে পারে আগামী ১৯ কিংবা ২০ মার্চ।
দিল্লির তিহার জেলের নিয়ম অনুসারে, মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হওয়া একজন অপরাধীর করুণার আবেদন খারিজ হওয়ার পরে, তাঁর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার জন্যে আরও ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়। নির্ভয়া কাণ্ডের ৪ আসামিকে একসঙ্গেই ফাঁসি দেওয়া হবে।
নির্ভয়ার বাবা আশা করেছিলেন যে এই মাসেই অপরাধীদের ফাঁসি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, "ওর (পবন) এখনও আরও একটি বিকল্প বাকি আছে ... অন্যরা যেমন করুণার আবেদনটি খারিজ হয়ে যাওয়ার পরেও সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল, ও হয়তো সেভাবেই শীর্ষ আদালতেও যাবে। আসুন দেখা যাক কী ঘটে। তবে আমরা ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। আমরা নিশ্চিত যে এই মাসেই অপরাধীদের ফাঁসি দেওয়া হবে এবং আমরা দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে শেষপর্যন্ত ন্যায়বিচার পাব"।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লির যুবতী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করার পর লোহার রড দিয়ে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে মোট ৬ জন। ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষপর্যন্ত হার মানতে বাধ্য হন নির্ভয়া।
২৩ বছর বয়সী ওই প্যারা মেডিকেল ছাত্রীকে নির্মমভাবে গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় মোট ৬ জনকে। তার মধ্যে একজন নাবালক বলে সংশোধনাগার থেকে ৩ বছর পরে ছাড়া পেয়ে যায় এবং অন্যতম অভিযুক্ত রাম সিং জেলের মধ্যেই আত্মহত্যা করে। বাকি ৪ আসামি মুকেশ সিং, অক্ষয় ঠাকুর, পবন কুমার গুপ্তা ও বিনয় শর্মাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত।.
২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর, দিল্লির একটি আদালত ওই ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিলেও তারপর থেকেই আইনের ফাঁক গলে বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে যায় তারা। তারপর থেকে ক্রমাগতই এগিয়েছে ঘটনা। একের পর এক আইনি বিকল্প নিয়ে নিজেদের মৃত্যুদণ্ড পিছিয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা।
২০১৩ সালের ১০ মার্চ ওই নারকীয় কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত রাম সিং জেলের মধ্যেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
২০১৪ সালের ১৩ মার্চ নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশই বহাল রাখে দিল্লির আদালত। তারপর ২০১৭ সালের ৫ মে সুপ্রিম কোর্টও আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়।