Nirbhaya Rape and Murder Case: রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মুকেশ সিং
হাইলাইটস
- মুকেশ সিংয়ের ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট
- জেলের ভোগান্তি শাস্তি রদের পক্ষে কোনও যুক্তি হতে পারে না, বলল আদালত
- ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় নির্ভয়া মামলার ৪ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হবে
নয়া দিল্লি: "জেলের ভোগান্তি ক্ষমা প্রার্থনার পক্ষে কোনও যুক্তি হতে পারে না". নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার (Nirbhaya Case) অন্যতম আসামি মুকেশ কুমার সিংয়ের প্রাণভিক্ষার সর্বশেষ আবেদনও খারিজ করে বলল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে মুকেশের (Nirbhaya Convict) প্রাণভিক্ষার আর্জি রাষ্ট্রপতির খারিজ করে দেওয়ায় সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁর আইনজীবী। সেই আবেদনের (Mercy Petition) পরিপ্রেক্ষিতেই শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, "এটা কখনোই বলা যায় না যে রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেননি"। মুকেশের আইনজীবী বলেন যে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা না করেই তাড়াহুড়ো করে তাঁর করুণার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও পুরোপুরি অবহিত ছিলেন না বলেও দাবি করেন ওই আইনজীবী। মুকেশকে জেলে মারধর এবং যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে, অথচ সেই সব নথি রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
মুকেশ সিংয়ের আইনজীবীর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের ৩ বিচারপতি বেঞ্চ বলে,"সমস্ত প্রাসঙ্গিক নথি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তিনি দ্রুত ওই আবেদনের বিষয়ে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার মানে এই নয় যে রাষ্ট্রপতি বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেননি"। আর তাছাড়া জেলের মধ্যে কী কী ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে একজন অপরাধীকে সেই সব বিষয় এমন একটি অপরাধের ক্ষেত্রে ক্ষমা করার পক্ষে কোনও যুক্তিই হতে পারে না বলে সাফ জানায় আদালত। এর আগে মুকেশের আইনজীবী অঞ্জনা প্রকাশ বলেন, ‘‘আপনারা কারও জীবন নিয়ে খেলছেন। আপনাদের নিজেদের মাথা খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।''
জেলের মধ্যে যৌন নিগ্রহের শিকার নির্ভয়া কাণ্ডের আসামি, অভিযোগ আইনজীবীর
যদিও মুকেশ সিংয়ের ওই আবেদনের বিষয়ে সওয়াল-জবাব চলাকালীনই দিল্লি পুলিশের প্রতিনিধি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘জেলে ভোগান্তির কারণ কখনও প্রাণভিক্ষার কারণ হতে পারে না। মুকেশকে নির্জন কারাবাসে পাঠানো হয়নি। অল্প সময়ের জন্য আলাদা সেলে রাখাকে নির্জন কারাবাসের সঙ্গে তুলনা করা যায় না।''
তুষার মেহতা আরও বলেন, ‘‘কখনও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর মানসিক স্বাস্থ্য ও শারীরিক অবস্থার এমন অবনতি হয় যে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না। কিন্তু এক্ষেত্রে এই অপরাধীর (মুকেশ) শারীরিক অবস্থা ভালই রয়েছে।''
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে ২৩ বছরের এক তরুণী তাঁর বন্ধুর সঙ্গে একটি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ দিল্লিতে। ফেরার পথে তাঁরা বাসের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। এই সময় একটি ফাঁকা বেসরকারি বাসে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়। বাসে ছিল ছ'জন ব্যক্তি। এরপর তারা ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও লোহার রড দিয়ে নির্যাতন করে কয়েক ঘণ্টা ধরে। তারপর তাঁকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। তাঁর সঙ্গীও আহত হন। ২৯ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। গোটা দেশ রাগে, ক্ষোভে গর্জে উঠেছিল এমন অমানুষিক বর্বরতার বিরুদ্ধে।
Nirbhaya case: ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬ টায় ফাঁসি নির্ভয়া গণধর্ষণ মামলার ৪ আসামির
নির্ভয়া মামলার বিচার শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় সিং আর পবন গুপ্তা- এই ৪ অপরাধীকে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় ফাঁসি দেওয়া হবে দিল্লির তিহার জেলে। নির্ভয়া-কাণ্ডে ৬ জন জড়িত থাকলেও, তাদের মধ্যে অন্যতম রাম সিংয়ের দেহ তিহার জেলে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়। ষষ্ঠ অভিযুক্ত নাবালক হওয়ায় ২০১৬ সালে, তাকে কিশোর সংশোধনাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। বাকি ৪ জনকেই ফাঁসিতে ঝোলানোর মৃত্যু পরোয়ানাতে স্বাক্ষর করেন বিচারক। এদিকে জানুয়ারির ১৭ তারিখ মুকেশ সিংয়ের প্রাণভিক্ষা খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি।
কিন্তু তারপরেও প্রাণে বাঁচার চেষ্টা থেকে সরতে নারাজ হয় মুকেশ সিং। তাঁর আইনজীবী রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু সেই আবেদনও বুধবার খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে আপাতত মুকেশের ফাঁসি রদের আর কোনও আশাই থাকল না।