হিংসার আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই শিক্ষাঙ্গন। রবিবার থেকেই উত্তর পূর্ব দিল্লির (Northeast Delhi) আকাশ বাতাসে হিংসার কালো ধোঁয়া, রাজধানীতে এখনও পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আহতের সংখ্যাও ২০০ ছাড়িয়েছে, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, পাথর ছোঁড়া, সব মিলিয়ে দেশের রাজধানী যেন পরিণত হয়েছে রণক্ষেত্রে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উত্তরপূর্ব দিল্লির ব্রিজপুরির একটি স্কুলে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পুড়ে ছাই শতাধিক বই, খাতা, প্রশ্নপত্র এবং নথিপত্র। সৌভাগ্যবশত, পরীক্ষার কারণে দুপুরেই বাড়ি চলে গিয়েছিল পড়ুয়ারা, ফলে সেই সময় স্কুলে কোনও পড়ুয়া ছিল না। অক্ষত অবস্থায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন স্কুলে থাকা একাকি নিরাপত্তারক্ষী।
অরুণ উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ক্যাশিয়ার নীতু চৌধুরি NDTV কে বলেন “বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ লোক এসেছিল। নিরাপত্তারক্ষী ভেবেই পাননি কী করণীয়। পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান তিনি। সবাই আগুনের শিখা দেখতে পেয়েছে”।
স্কুলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রাত ৮টার সময় স্কুলে পৌঁছায় দমকলবাহিনী, তার আগে পর্যন্ত চারঘন্টা স্কুলে ঢুকতে পারেননি দমকলকর্মীরা। তিনি জানান, “আমরা পুলিশকে ফোন করেছি এবং দমকলবাহিনীকেও জানিয়েছি, সব জায়গায় ছত্রভঙ্গ পরিস্থিতি থাকায় কেউই স্কুল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি”।
শিক্ষকদের লকারগুলিতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তাঁদের সমস্ত বই এবং ফাইল মেঝেতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনদিন পরেও স্কুলের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখনও ধোঁয়া বের হচ্ছে, সেখান থেকে কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন কর্মীরা।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলবাসটি দাঁড়িয়ে রয়েছে বাইরে, স্কুলের কম্পিউটার রুমে পড়ে রয়েছে আগুনে ঝলসে যাওয়া কম্পিউটারের সিপিইউ, মনিটর।.
হিংসার লেলিহান শিখা থেকে বাদ পড়েনি স্কুলের ক্যান্টিন এবং ক্লারুমগুলিও। ক্যান্টিনের মেঝেতে চিপসের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।
মেঝেতে পড়ে রয়েছে আগুনে পুড়ে যাওয়া সামগ্রি, স্কুলবাড়ির দেওয়ার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত, যে জায়গায় স্কুলের প্রিন্সিপল এবং ক্যাশিয়ার বসতেন, সেই জায়গাটি চেনাই দায় হয়ে পড়েছে। এই স্কুলেই ১৮ বছর ধরে কাজ করছেন নীতা চৌধুরি, তিনি বলেন, “আজ আপানার যেমন দেখছেন, কিছুই বাকি নেই”।
অপ্রত্যাশিত হিংসার কারণে, উত্তর পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে, বোর্ড পরীক্ষা স্থগিত করে দিয়েছে সিবিএসই বোর্ড।