CAA Clashes: পরপর তিনদিন ধরে হিংসা অব্যাহত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে
হাইলাইটস
- উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সিএএ বিরোধিতার সময় সংঘর্ষ বাঁধে
- ওই সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হয় ৫ জনের, আহত বহু
- মঙ্গলবারও দেখা যায় এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে, চলছে লুটপাট
নয়া দিল্লি:
দিল্লিতে হিংসার ঘটনা ক্রমশই ব্যাপক আকার ধারণ করছে, মঙ্গলবার বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোঁড়া, অগ্নিসংযোগ ভাঙচুরে ঘটনা ঘটে, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১০০ জন আহত হয়েছেন। দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভজনপুরাপ রাস্তায় হাতে লাঠি নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে বহু মানুষকে, সোমবার চাঁদবাগ এবং কারোয়াল নগর এলাকাতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। এই দুটি জায়গায় সোমবার নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে ও বিপক্ষে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সেনা নামানোর জল্পনা খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, তাদের তরফে বলা হয়েছে, যথেষ্ঠ পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, এমনটাই জানা গিয়েছে সরকারি সূত্রে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শান্তি রক্ষার আবেদন জানিয়ে বলেছেন, গুজব ছড়ানো বন্ধ হওয়া প্রয়োজন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনটাই জানা গিয়েছে সূত্র মারফৎ। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিল্লি পৌঁছানের কয়েকঘন্টা আগেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানীর রাজপথ।
উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সংঘর্ষের বিষয়ে দেখে নিন ১০ টি তথ্য:
বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন হাতে লাঠি নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায় ভজনপুরায়। অল্প সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে, সংলগ্ন এলাকা চাঁদবাগেও পদক্ষেপ করতে রাজি হননি সেখানে মোতায়েন থাকা অল্প সংখ্যক পুলিশ কর্মী, সেখানে পাথর ছোঁড়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক দোকান। গতরাতে বিল্ডিং থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গিয়েছে। গোকুলপুরীতে টায়ারের বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেখানে হাতে অস্ত্র এবং লাঠি, রড নিয়ে হামলা চালানো হয়।
কোনওরকম প্ররোচনা মূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, বলা হয়েছে, যাতে কোনও অসামাজিক ব্যক্তি পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে না পারে, তার জন্য উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানা ও দিল্লির সীমানার দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
নতুন করে উত্তরপূর্ব দিল্লির কারোয়াল নগর. মৌজপুর, ভজনপুরা, বিজয় পার্ক এবং যমুনা বিহার থেকে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে। মৌজপুরের মতো সংলগ্ন এলাকায় পাথর ছোঁড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে, জরুরি ফোনের জন্য আরও ব্যবস্থা করেছে দমকল বাহিনী, সোমবার তিনজন দমকলকর্মী আহত হওয়ার পর, সেখানেও বেশ কয়েকবার ফোন ধরেননি কেউই। একদল ব্যক্তি, দমকলের একটি ইঞ্জিনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং আরেকটিতে পাথর ছোঁড়ে। মৌজপুরে, মঙ্গলবার সকালে ই-রিক্সায় যাচ্ছিলেন কয়েকজন, তাঁদের সামগ্রিক লুঠ করে নেওয়া হয়েছে এব তাঁদের মারধরও করা হয়। গোকুলপুরিতে সোমবার রাতে একটি টায়ারের বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কথা তুলেছেন তিনি এবং যাতে পুলিশ কাজ করে, সেই মতো ব্যবস্থা নিতেও আর্জি জানিয়েছেন বলে জানান অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, “শীর্ষমহল থেকে নির্দেশ পাওয়ায়, কোনও কাজ করছেন না পুলিশকর্মীরা। আমি অমিত শাহজীর সামনে এই বিষয়টি তুলে ধরব। শীর্ষ মহল থেকে নির্দেশ না পেলে, তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হবে নাকি, লাঠিচার্জ করা হবে”।
দিল্লি পুলিশের সশ্বস্ত্র বাহিনীতে রয়েছেন ১,০০০ কর্মীতে দিল্লির হিংসা কবলিত এলাকাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে, অন্যদিকে, আন্তরাজ্য সীমানার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান আধিকারিকরা। অতিরিক্ত ৩৫ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
১০০ জন আহতের মধ্যে, রয়েছেন ৪৮ জন পুলিশকর্মী, তাঁদের অনেকজনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ আধিকারিকের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এই হিংসার ঘটনাকে “খুবই দুঃখজনক” বলে মন্তব্য করেছেন তিনি, এবং “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা এবং শান্তি ও সম্প্রীতি স্থাপন করার আর্জি জানিয়েছেন”। হিংসার ঘটনা নিয়ে ট্যুইটারে সতর্কবার্তা দিয়েছে যোগেন্দ্র যাদব।
সরকারের তরফে বলা হয়েছে, যেহেতু এই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে আসছেন, সেই সময় প্রচারের জন্য কেউ নিজেদের প্রচারের জন্য এই অশান্তি “সংগঠিত” করেছে।
হিংসার কারণে, মঙ্গলবার, উত্তর পূর্ব দিল্লির সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলিকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি সরকারের তরফে। জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, গোকুলপুরি, জোহরি এনক্লেভ এবং শিববিহারে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
১৪৪ ধারায় উত্তর পূর্ব দিল্লিতে বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।জেএনইউ পড়ুয়াদের সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ মিছিল করায় দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের বাইরেও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
Post a comment