মূলত সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে তৈরি হয় এই ক্লোরোকুইন। দার্জিলিং পার্বত্য এলাকায় এই গাছের আধিক্য বেশি। (ফাইল ছবি)
হাইলাইটস
- বেড়েছে ক্লোরোকুইনের চাহিদা। সেই আশায় বুক বাঁধছেন সিঙ্কোনা চাষিরা
- এই গাছের ছাল থেকে তৈরি হয় ম্যালেরিয়া-প্রতিরোধী এই ওষুধ
- দার্জিলিং পার্বত্য এলাকায় এই গাছের আধিক্য বেশি
কলকাতা: বিশ্বব্যাপী চাহিদা বেড়েছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের (Hydroxychloroquine)। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে রফতানির ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলতে আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই নিয়ে একপ্রস্থ জলঘোলা হয়েছে। আদতে ম্যালেরিয়া-প্রতিরোধী এই ওষুধ ভারতীয় চিকিৎসকদের আশার আলো দেখিয়েছে। এই ওষুধের ব্যবহারে কিছুটা সুরাহা পেয়েছেন সংক্রমিতরা। সেই হার প্রায় ১৮-২০%। এমনটাই দাবি স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে। ফলে, গত একমাস এই ওষুধের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু সম্প্রতি তুলে দেওয়া হয়েছে সেই নিষেধাজ্ঞা। ইউএস, ইতালি, স্পেন, ব্রাজিলের মতো করোনা সংক্রমিত দেশে রফতানি করা হচ্ছে এই ওষুধ। এতেই আশার আলো দেখছেন কুইনাইন চাষিরা। মূলত সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে তৈরি হয় এই ক্লোরোকুইন। দার্জিলিং পার্বত্য (Darjeeling Hill Area) এলাকায় এই গাছের আধিক্য বেশি। ১৮৬২ সালে দার্জিলিংয়ে ব্যাপক হারে শুরু হয় সিঙ্কোনা-সৃজন। সেই সময় পতঙ্গ-বাহিত ম্যালেরিয়া মানুষের মনে আতঙ্কের সঞ্চার করেছিল। ফলে পরবর্তী কয়েক দশকে ধাপে ধাপে বাড়ানো হয় সিঙ্কোনা চাষ। সেই ধারা এখনও অব্যাহত।
ভারতে ক্লাস্টার সংক্রমণ! ভুল মেনে স্টেজ-থ্রি নিয়ে করা দাবি পাল্টালো হু
২০১৬ সালে ভারতের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক ম্যালারিয়া প্রবণ বলে দাবি করেছিল এক সংস্থা। প্রায় ৬৯৮ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে সংক্রমিত হতে পারে, এমনটা উল্লেখ ছিল ওয়ার্ল্ড ম্যালেরিয়ার রিপোর্টে। কিন্তু তারপরেও ক্রমশ মন্দা দেখা যায় সিঙ্কোনা চাষে। সিন্থেটিক-কেমিক্যাল উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় পড়ে-পড়ে নষ্ট হতে থাকে সেই গাছ। কিন্তু আবার বিশ্বজুড়ে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের চাহিদা বাড়ায় প্রাকৃতিক উৎপাদন বাড়বে, এমনটাই আশা সিঙ্কোনা চাষিদের। দার্জিলিং ছাড়াও কালিম্পংয়েও চাষ হয় এই সিঙ্কোনা গাছ।
১৪ এপ্রিলের পরেও বন্ধ থাকতে পারে স্কুল-কলেজ, বিলম্ব হবে বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশেও
পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিঙ্কোনা সৃজন কমিটির কর্তা স্যামুয়েল রাই বলেছেন, "আমরা আশাবাদী; যেভাবে ওষুধের চাহিদা বাড়ছে, সেভাবেই আমাদের সৃজন বাড়বে। আমরা আগামীদিনে ভালো ব্যবসা করব, এই আশা রাখি। অতীতে বেশ মন্দা গিয়েছে এই গাছ সৃজনে।" তাঁর দাবি, "ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো ই-অকশনের মাধ্যমে ছাল কিনছে। কারণ এই ছাল দিয়ে আরও পথ্য তৈরি হচ্ছে। ফলে সেভাবে বৃক্ষ-সৃজনের প্রথা এখন বিলুপ্তপ্রায়।" ইতিমধ্যে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের জনক হিসেবে খ্যাত বেঙ্গল কেমিক্যালের গুরুত্ব বেড়েছে। সেই সংস্থার কর্তা পিএম চন্দ্রাইহা বলেছেন, "আমাদের কাছে মজুত আছে ১০ লক্ষ ট্যাবলেট (২৫০ মিলিগ্রাম)। অর্থাৎ ক্লোরোকুইন ফসফেটের নির্যাস। যে ওষুধ পতঙ্গবাহিত রোগ নিরাময়ে কাজ করে। এর বাইরে কাঁচা মালের অভাব আরও ওষুধ উৎপাদন করতে অক্ষম বেঙ্গল কেমিক্যাল।" বেঙ্গল কেমিক্যালের পাশাপাশি জাইডাস কাডিলা, ইপকা আর ওয়ালাশ এই ওষুধ তৈরি করে থাকে।
গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারত মোট চাহিদার প্রায় ৭০% ক্লোরোকুইন তৈরি করে থাকে। এমনটাই জানা গিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংগঠন সূত্রে। অপরদিকে ৪ এপ্রিল ভারত এই ওষুধের রফতানির ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে ঘোষণা করা হয়েছে, চাহিদা মতো পড়শি দেশে সরবরাহ করা হবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। ইতিমধ্যে ইউএস এই ওষুধের কার্যকারিতা যাচাই করতে নমুনা পরীক্ষা করেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রাপ্তবয়স্কদের দেহে এই ওষুধ কতটা কার্যকরী, সেটা জানতে এখন মুখিয়ে ট্রাম্পের দেশ।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)