চেন্নাই: 'আইসিইউ-তে পরিণত হয়েছে গণতন্ত্র', জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকে এভাবেই বর্ণনা করলেন দক্ষিণের সুপারস্টার-রাজনীতিবিদ Kamal Haasan। কমলের কথায়, citizenship law-এর বিরোধিতা করায় যেভাবে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুলিশি নিগ্রহের মুখে পড়তে হয়েছে তা দেখে তিনি প্রতিবাদের ভাষা হারিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি পূর্ণ সমর্থন জানান তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক মনস্কতাকে। এবং সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, আম জনতার সঙ্গে আগামী প্রজন্মকে গোলালে চলবে না। এরাই জাতির ভবিষ্যত। জনতার কণ্ঠরোধ করার প্রক্রিয়া এদের ওপর প্রয়োগ করলে আখেরে ক্ষতি দেশের।
জামিয়ার বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি চালায়নি পুলিশ: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্র
পাশাপাশি, কমল হাসানের রাজনৈতিক সংগঠন মাক্কাল নিধি মাইয়াম (MNM) সোমবারই নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে শীর্ষ আদালতে। একই সঙ্গে দিল্লি, আলিগড়,অসমের হিংসার বিরুদ্ধেও তীব্র নিন্দা করেছে। সংগঠনের দাবি, হিংসা দমাতে সাধারণের কণ্ঠরোধ আরও হিংসার জন্ম দিচ্ছে। এদিকে দেশজুড়ে হিংসার মোকাবিলায় অধিকাংশ জায়গাতেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
নিজের মন্তব্যের স্বপক্ষে কমলের বক্তব্য, আগামী প্রজন্মের অধিকার আছে রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার। রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার। তাদের সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য রাষ্ট্র এবং সরকার। কিন্তু অন্যায়ভাবে তাদের কণ্ঠরোধ করা হলে বলতে হবে, নাভিশ্বাস উঠেছে দেশের গণতন্ত্রের। তিনি আরও বলেন, আঘাত করে শিক্ষার্থীদের দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা মানে দেশের সংবিধান, স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানা। ভাবী প্রজন্মকে তার কাজের সদুত্তর দিতে পারছে না এই প্রজন্ম। তাই ভয় পেয়ে, হুমকি দিয়ে, দাবড়ানি দিয়ে, শারীরিক নিগ্রহ করে থামিয়ে দিতে চাইছে তাদের। নয়া নাগরিকত্ব আইন আর দেশ বা কেন্দ্রের অধীনস্ত নয়। এটি এখন জাতীয় বিষয়। এই নিয়ে মুখ খুলতে পারেন সমস্ত দেশবাসী। উত্তর নেই বলে এভাবে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে, লাঠিচার্জ করে বেধড়ক মারধর করা হবে শিক্ষার্থীদের? এটা কোন ধরনের সভ্যতা?
জামিয়ায় পুলিশি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি
প্রসঙ্গত, সরকার পক্ষের মতে, বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইনের লক্ষ্যই হল আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার রাস্তা সহজ করা। অন্যদিকে, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে এই আইন ধর্মীয় বৈষম্যের পাশাপাশি সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি বিরোধীপক্ষের। যদিও নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ বারবার আপ, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসের এই অপপ্রচারে কান না দিতে পরামর্শ দিয়েছেন দেশবাসীকে।
এই প্রেক্ষিতে কমল হাসানের প্রশ্ন, দেশজুড়ে যখন অসহিষ্ণুতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে তখনই তড়িঘড়ি নাগরিকত্ব বিলকে আইনে পরিণত করার খুব দরকার ছিল? মাত্র চারদিনের মধ্যে সংসদে পাস করিয়ে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের সাহায্যে একে আইনে পরিণত করার পেছনে অন্য অভিসন্ধি নেই তো সরকারের?