১,১২৪ জন ঋণখেলাপকারীর নাম প্রকাশ করেছিল পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক। পাওনা ২৩,৪৭০ কোটি টাকা
কলকাতা: কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের নোটিস সত্ত্বেও ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিস ঋণখেলাপকারীদের নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক। এনডিটিভি জানতে পেরেছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা প্রধানমন্ত্রীর অফিস নাম প্রকাশ করতে না চাইলেও, ইতিমধ্যেই দেশের দশটি বড় পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কের মধ্যে চারটি তাদের ঋণখেলাপকারীদের নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে দিয়েছে। চলতি মাসের ২ তারিখ কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন থেকে নোটিস পাঠানো হয় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অফিসে। সেখানে সাফ জানতে চাওয়া হয়, কেন তারা ঋণখেলাপকারীদের নাম ঘোষণা করছে না? যেখানে সুপ্রিম কোর্ট স্বয়ং এই বিষয়ে নির্দেশ জারি করেছে। সেই নোটিসে অভিযোগ করা হয় যে, তারা এর ফলে সুপ্রিম কোর্টের রায়কেই 'অমান্য' করছে।
১০'টি বৃহৎ পাবলিক এবং প্রাইভেট সেক্টর ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, তাদের মধ্যে চারটি ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষ ঋণখেলাপকারীদের পরিচয় তাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিয়েছে। যদিও, যে যে ব্যাঙ্ক এই কাজটি করেছে, তারা প্রত্যেকেই পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক।
এই চারটি ব্যাঙ্ক হল- পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, আইডিবিআই, ব্যাঙ্ক অব বরোদা এবং সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক। মোট 1815 জন ঋণখেলাপকারীদের থেকে এই ব্যাঙ্কগুলির পাওনা অর্থের পরিমাণ 42,000 কোটি টাকা।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মোট ১,১২৪ জন ঋণখেলাপকারীর নাম প্রকাশ করে দিয়েছিল পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক। যাদের কাছে ব্যাঙ্কের মোট পাওনা ২৩,৪৭০ কোটি টাকা। ওই তালিকায় নাম ছিল মেহুল চোকসি ও নীরব মোদীর সংস্থারও। যাদের মিলিত ঋণের পরিমাণ ৭,৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া, রয়েছে বিজয় মালিয়ার ৬০০ কোটি টাকা। যতীন মেহতার সংস্থার থেকে ব্যাঙ্কের মোট পাওনা ১,৬৪৮ কোটি টাকা। কুদোস কেমি লিমিটেড নামের একটি সংস্থার থেকে ব্যাঙ্ক পাবে ১,৩০২ কোটি টাকা।
আইডিবিআইয়ের ঋণখেলাপকারীদের তালিকায় নাম আছে ১৬২ জনের। মোট পাওনা ১১,০৫০ কোটি টাকা। এই তালিকা আইডিবিআই ঘোষণা করে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে।
ব্যাঙ্ক অব বরোদার ঋণখেলাপকারীদের তালিকায় নাম রয়েছে মোট ৩০৯ জনের। তাদের কাছ থেকে ব্যাঙ্কের মোট পাওনার পরিমাণ ৬,২৬১ কোটি টাকা।
সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কের ঋণখেলাপকারীর সংখ্যা ২২০ জন। ব্যাঙ্কের মোট পাওনার পরিমাণ ১,১৫৯ কোটি টাকা।
চলতি বছরের জুলাইতে লোকসভাতে প্রকাশিত একটি তথ্যের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলিতে মোট ৯,৫০১ জন ঋণখেলাপকারীদের থেকে ব্যাঙ্কগুলির মোট পাওনা অর্থের পরিমাণ ১.৩ লক্ষ কোটি টাকা। ওই তথ্য থেকেই জানা গিয়েছে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে ঋণখেলাপকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ শতাংশ। আর, তাদের ঋণ নেওয়া অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৭০ শতাংশ।