কলকাতা: প্রবাদ বলে, যম-জামাই-ভাগনা তিন নয় আপনা। অর্থাত, যম বা মৃত্যু, ভাগ্নে বা বোনের ছেলে আর জামাই কখনও আপন হয় না। তাহলে প্রাচীন কাল থেকে বেছে বেছে এদের মধ্যে থেকে জামাইকে আপন করার চেষ্টা কেন করেন শাশুড়িরা? হিন্দুশাস্ত্র বলছে, পুরোটাই স্বার্থের খাতিরে। জামাইয়ের হাতে মেয়ের ভবিষ্যত। তাই মেয়ে যাতে সুখে-শান্তিতে ঘরকন্না করতে পারে তার জন্যই নাকি জামাইষষ্ঠীর (Jamai Shasthi) এই নিয়ম (Ritual) বা উৎসবের চল হয়েছে বাঙালির ঘরে ঘরে। আগের দিনে জামাইকে তুষ্ট করা বলতে বোঝাত ভালোমন্দ খাওয়ানো আর উপঢৌকন হিসেবে উপহার দেওয়া। তার জন্যই বছরের এই একটি দিন জামাই বাড়ির ছেলে। তারই চিহ্ন স্বরূপ হলুদ-দইয়ে ছোপানো সুতো তাঁর হাতে বেঁধে দেওয়া। ভিজে পাখার বাতাস করা। তারপরেই জামাইকে তুষ্ট করতে জৈষ্ঠ্য মাসের আম-কাঁঠাল সহ নানারকম ফলের বাটা তার হাতে তুলে দেওয়া। আর উপঢৌকন হিসেবে উপহার দেওয়া।
জামাই ষষ্ঠীর এই নিয়ম সম্পর্কে পুরাণ বলছে, ধান হল বহু সন্তান-সমৃদ্ধি-ঐশ্বর্যের প্রতীক। একই সঙ্গে দূর্বা তারুণ্য আর সুস্বাস্থ্যের প্রতীক। তাই জামাইয়ের সুস্বাস্থ্য কামনা করেই নাকি শাশুড়িরা সবশেষে ধআন-দুব্বো দিয়ে আশীর্বাদ করতেন জামাইকে। ভেজা পাখার বাতাস করা হত, জামাইয়ের শরীর যাতে ঠাণ্ডা থাকে তার জন্য। আর হলুদ-দই মঙ্গল বা শুভ শক্তির প্রতীক। বাকি ফলের বাটা। পাঁচরকম ফল বাবাজীবনের হাতে তুলে দেওয়ার অর্থ ফলবান হোক জামাই।
যুগের পর যুগ ধরে সেই আয়োজন, এই জামাইষষ্ঠী (Jamai Shashi) আজও বাঙালি মেনে চলছে হইহই করে। কেন? এই সমস্ত আয়োজনের পেছনে মা-বাবার একটাই আকুল কামনা, এভাবে জামাইকে সন্তুষ্ট করেও যদি ঘরে-বরে হয়ে থাকতে পারে তাঁদের আত্মজা।
Click for more
trending news