বুশান থেকে ফেরার কুড়িদিন পর তাঁদের নিমন্ত্রণ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে
কৃষ্ণনগর: যদিও পেরিয়ে গিয়েছে 16 টা বছর। তবুও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডিনারে অভিজ্ঞতা ভোলেননি ক্রীড়াবিদ সোমনাথ মালো। গত বৃহস্পতিবার মারা গিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। তবুও ষোলো বছর আগেকার স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল সোমনাথের মনে। শারীরিকভাবে তথাকথিত সুস্থ নন সোমনাথ। হাইজাম্পে একের পর এক কৃতিত্ব স্থাপন করে গিয়েছেন ‘প্রতিবন্ধী’ মালো। পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার বাসিন্দা সোমনাথ ভারতীয় দলে সদস্য হিসেবে 22 খানা পদক জিতেছিলেন 2002 এফইএসপিআইসি গেমসে। যার মধ্যে ছিল তিনটি সোনা, নয়টি রৌপ্য এবং 10 ব্রোঞ্জ মেডেল। দক্ষিণ কোরিয়ার বুশানে আয়োজিত ওই প্রতিযোগিতায় হাইজাম্পে তিনি স্বর্ণপদক জিতেছিলেন দেশের হয়ে।
বিজয়ী ভারতীয় দলকে তাঁর বাসভবনে ডেকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী।
"তিনি আমাকে তাঁর পাশে বসতে বলেছিলেন। তারপর আমাকে জিজ্ঞাসা করেন আমি কোথায় থাকি এবং কিভাবে আমার পা নষ্ট হয়ে গেল। আমার স্পষ্ট মনে আছে তাঁর সেই হাসিমুখ! আমাদের সবার সঙ্গে একসাথে বসে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন তিনি।“-স্মরণ করেন মালো।
বুশান থেকে ফেরার কুড়িদিন পর তাঁদের নিমন্ত্রণ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রক এই দলের জন্য বিশেষ সম্বর্ধনার ব্যবস্থাও করে। তাঁর পরেই ছিল নৈশভোজের বন্দোবস্ত।
"সেই সময়ে, আমি ভালো করে হিন্দিও বলতে পারতাম না। বাজপেয়ীজি সেটা বুঝতেও পেরেছিলেন। তারপরে আমার পিঠ চাপড়ে দেন। আমার ঠিক পাশেই বসেছিলেন তিনি। আমার সাথে অনেক কথাও বলছিলেন।“-বলেন মালো, সেই সময় ওই দলের কনিষ্ঠতম সদস্য ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি একটি স্কুলে অশিক্ষক কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছেন মালো। তিনি জানান, বাজপেয়ী তাঁকে খেলা চালিয়ে নিয়ে যেতে অনুরোধ করেন এবং যে কোনও প্রয়োজনে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাসও দেন।
দীর্ঘ অসুস্থতার পর দিল্লির এআইআইএমএস হাসপাতালে গত 16 আগস্ট, 93 বছর বয়সে মারা যান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।