তিন বন্ধুত্ব জীবনচক্র 'সামসারা'
কলকাতা: তিন বন্ধু স্কুল ছাড়ার পর তিন প্রান্তে। তিনজনে তিন পেশায়। একজন লেখক, একজন উকিল, আর একজনের কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা। ১৮ বছর পরে তিন বন্ধু আবার এক হয়, লেখক বন্ধুর ডাকে। তাঁর রাইটার্স ব্লক কাটাতে। একটা দিন হইহল্লা করে কাটিয়েও যখন লেখকের লেখার রসদ মেলে না তখনই তিন বন্ধু হাজির হয় সামসারা-য়। যেখানে পা দেওয়া মাত্রই ঘটতে থাকে অদ্ভুত ঘটনা। কী হয়েছিল তিন বন্ধুর সঙ্গে? এই উত্তর খুঁজতে গিয়ে ইতিমধ্যেই দর্শকেরা হাজার বার দেখে ফেলেছেন পরিচালক জুটি সুদেষ্ণা রায় (Sudeshna Roy)-অভিজিৎ গুহ-র (Abhijit Guha) সাইকো থ্রিলার ‘সামসারা'-র (Samsara) ট্রেলার। দর্শকদের সেই কৌতূহল মিটবে আগামীকাল, ২ অগাস্ট। দুই পরিচালকের মতে, ফ্রেন্ডশিপ ডে-র দু'দিন আগে, বন্ধুত্বের নতুন সমীকরণ দেখাবে তাঁদের নতুন ছবি।
রাজের টিপসে, ঋত্বিকের সঙ্গে অভিনয়ে আমি সত্যিই ‘পরিণীতা': শুভশ্রী
বরাবরই সম্পর্কের গল্প বলে অভ্যস্ত সুদেষ্ণা-অভিজিৎ। এই প্রথম থ্রিলার জঁরে পা রাখলেন কি যুগের দাবি মেটাতে? পরিচালকদ্বয়ের সাবলীল উত্তর, ‘থ্রিলার এখন বাংলা ছবির দুনিয়ায় রাজত্ব চালাচ্ছে ঠিকই কিন্তু এরও অনেক ভাগ বা শেড রয়েছে। তারই একটা সাইকো থ্রিলার (Psychological Thriller)। মনে হল সম্পর্ককে পটভূমিকায় রেখে এই দিকটাকে এবার দর্শকদের সামনে তুলে ধরা যেতেই পারে। সেই ভাবনা থেকেই এই ছবির জন্ম।' ছবির নামও খুবই অভিনব... কথা শেষের আগেই সুদেষ্ণা-অভিজিতের দাবি, ক্যাচি, অজানা নাম দিয়ে দর্শক টানার কোনও ইচ্ছেই নেই। ‘সামসারা'কে সংস্কৃত থেকে ধার নিয়েছি আমরা। বুদ্ধিজমে এর মানে জীবনচক্র। ‘জন্ম-জীবন-মৃত্যু-পুনর্জন্ম'-কে তাই ধারণ করে রয়েছে ‘সামসারা' (Samsara)। যা আমাদের ছবির সঙ্গে অনেকটাই মেলে। কীভাবে মেলে? কেন মেলে? বলবে ছবির গল্প।'
অনস্ক্রিনে তিন বন্ধুর চরিত্রে দেখা যাবে ঋত্বিক চক্রবর্তী, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীকে। ছবিতে ঋত্বিক লেখক। অরুণোদয় উকিল। আর ইন্দ্রজিতের কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা। তাঁদের কেমন লাগল এই ছবিতে কাজ করে? ছবির চরিত্র নিয়ে যদিও কেউই বেশি বলতে চাননি। রহস্য যাতে আগেভাগে ফাঁস না হয়ে যায় তার জন্য। তবে সকলেই তৃপ্ত এই ধরনের সাইকো থ্রিলারে কাজ করতে পেরে। ছবিতে আগে বলা তিন অভিনেতাকে ছাড়াও দেখা যাবে সুদীপ্তা চক্রবর্তী, তনুশ্রী চক্রবর্তী, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, সমদর্শী দত্ত, দেবলীনা কুমারকে।
থ্রিলারে যদিও গান ব্যবহারের সুযোগ খুবই কম। তার মধ্যেও এখানে দুটি গান রেখেছেন পরিচালক-জুটি। আর সুরের হেঁশেল সামলানোর দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এবং অসমীয়া শিল্পী জুবিন গর্গের ওপরে। এখানে তিন বন্ধুর জার্নি সং বানিয়েছেন অনিন্দ্য। অনিন্দ্যের গান কণ্ঠে তুলে নিয়েছেন গায়ক রূপঙ্ক বাগচি। অনিন্দ্য নিজেও জীবনের গান করেন। তাহলে নিজে কেন গাইলেন না? উত্তরে সুরকারের হাসিমাখা জবাব, সব আমি কেন করব? রূপঙ্করের মতো শিল্পী থাকতে! রূপঙ্কর তো নিজেও জীবনের গান করেন, গান বাঁধেন। তাই উনি ছিলেন আমার প্রথম এবং শেষ পছন্দ। জুবিনের গান ব্যবহৃত হবে টাইটেল কার্ডে। পরিচালকদ্বয়ের না বলা কথা বলে দিতে। এখানে পরিচালকদ্বয়ের পাদপূরণ, ‘জুবিনের সঙ্গে আগে আমরা কাজ করেছি ২০০৪-এ 'শুধু তুমি' ছবিতে। জুবিন ওই ছবিতে গেয়েছিলেন 'সময়ের মায়াজালে' বলে একটি গান। তখন থেকেই আমরা মুখিয়ে ছিলাম, কবে আবার জুবিনের সঙ্গে কাজ করব। সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগালাম।'
ছবির শুটিং হয়েছে মেঘালয়ের উমস্নিং-এ। পাহাড়ি সৌন্দর্য তাই এই ছবির আরেকটি ইউএসপি। গল্প, চিত্রনাট্যে পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। প্রযোজনায় ফ্রাইডে অ্যান্ড কোং।