চেন্নাইয়ের কাভেরী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ডিএমকে প্রধান করুণানিধিকে
চেন্নাই: শুক্রবার মাঝরাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ডিএমকে প্রধান এম করুণানিধিকে চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার ঘণ্টাখানেক পরেই তাঁর ছেলে এমকে স্টালিন একটি বিবৃতিতে জানান, করুণানিধির শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। একই সঙ্গে কোনও রকম গুজবে কান দিতেও সমর্থকদের নিষেধ করেছেন তিনি।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে 94 বছরের এই প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব গতকাল সন্ধ্যের পর থেকেই রক্তচাপ জনিত সমস্যার কারণে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। করুণানিধির দুই পুত্র এমকে স্তালিন ও এমকে আলাগিরি, কন্যা কানিমোঝি এবং অন্যান্য সমস্ত ডিমকে শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্বরা ছুটে যান করুণানিধির বাস ভবনে। সেখানেই তাঁরা প্রবীণ এই নেতাকে কাভেরী হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এ রাজা পরে সাংবাদিকদের জানান, করুণানিধি এখন বিপদের বাইরে।
হাসপাতালের তরফে রাত্রি 2.30টে নাগাদ একটি মেডিক্যল বুলেটিন প্রকাশ করা হয়। তাতে জানানো হয় রক্তচাপ অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় তামিলনাড়ুর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী করুণানিধিকে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
হাসপাতালের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ডা অরবিন্দন সেলভরাজ বলেন, "চিকিৎসার পর তাঁর রক্তচাপ এখন স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি প্যানেল তাঁকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রেখে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।"
একটি বিবৃতিতে স্ট্যালিন তার বাবার স্বাস্থ্যের উন্নতির কথা জানিয়ে দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন যে, এখনই প্রিয় নেতাকে দেখতে ভিড় না জমানোই ভালো। কিন্তু বলেছিলেন এবং পার্টি কর্মীদের কাছে আবেদন জানানোর জন্য আপিল করেননি। কিন্তু তাঁর এই আবেদনে সাড়া দেননি সমর্থকদের অনেকেই। গোপালপুরমে ডিএমকে নেতার বাড়ির কাছে উদ্বিগ্ন সমর্থকরা ভিড় করে জমা হন।
করুণানিধির হাজারো সমর্থক এর পরে জড়ো হন হাসপাতালের সামনেও। গতকালই দলীয় প্রধান হিসেবে পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করেন করুণানিধি, সমর্থকদের কাছে যিনি কালাইগনার নামেই পরচিত।
শয়ে শয়ে সমর্থক জড়ো হন চেন্নাইয়ের কাভেরী হাসপাতালে
শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার জন্য করুণানিধির ট্র্যাকিওস্টোমি নালিটি বদলে দেওয়া হয় হাসপাতালে। তারপরেই তাঁকে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকেরা আরও জানান, বাড়িতেই হাসপাতালের মতোই পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পাঁচ দফা য় তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কর্মরত থেকেছেন করুণানিধি, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অসুস্থতার কারণে এখন খুব একটা জনগণের মাঝে দেখা যায় না তাঁকে।
কিন্তু তিনি সম্প্রতি একটি মূত্রনালীর সংক্রমণ হওয়ায় তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। শুক্রবার, পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে সংক্রমণ কমেছে, জ্বরও নিয়ন্ত্রণে এখন।
গত দুই দিন ধরেই রাজনীতিবিদদের একটি অংশ তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে বারেবারে খবর নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী স্ট্যালিন ও কানিমোঝির সঙ্গে কথা বলেন, করুণানিধির স্বাস্থ্যের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন এবং সমস্ত সাহায্যের প্রস্তাব দেন। বিজেপি নেতারা এবং সুপারস্টার রজনীকান্ত বৃহস্পতিবার দেখা করেন পরিবারের সাথে।