পায়েলের পরিবারের অভিযোগ, পায়েল তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়াতেই তাঁকে নিপীড়ন করা হত
নয়াদিল্লি: মুম্বইয়ের এক রাজ্য পরিচালিত হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত তিন চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৬ বছরের পায়েল তাদবি গত বুধবার আত্মহত্যা করার পরেই মুম্বইয়ের বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতালে কর্মরত ভর্তি মেহরা পালিয়ে যান। মৃতা পায়েলের স্বামী সলমন এবং মা আবিদা সেলিম অভিযুক্ত তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি করেছেন। হোয়াটসঅ্যাপে পায়েলকে জাতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করে অপমান করেছেন ওই চিকিৎসকরা, তেমনটাই অভিযোগ সলমনের। তিনি NDTV-কে বলেন, ‘‘ওকে বেছে নেওয়ার কারণ ও নিম্নবর্গীয়। তাই ওকে নিয়মিত র্যাগ করত সিনিয়ররা। সিনিয়ররা বলেছিল, ওকে পড়াশোনা শিখে যেতে দেবে না ওরা। ওরা ওকে হোয়াটস্যাপেও নিগ্রহ করত।''
পিটিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে জানা যাচ্ছে, সলমন বলেছেন, ‘‘আমরা চাই সরকার হস্তক্ষেপ করুক। পুলিশ কোনও অ্যাকশন নিচ্ছে না। হতেও পারে, পায়েলকে ওই তিন চিকিৎসক খুন করেছে।''
পায়েলের পরিবারের অভিযোগ, পায়েল তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়াতেই তাঁকে নিপীড়ন করা হত।
এদিকে অভিযুক্ত তিন চিকিৎসক একটি চিঠিতে চিকিৎসকদের একটি সংগঠনকে লেখেন, তাঁদের উপরে যেন ‘‘ন্যায্য বিচার'' করা হয়।
মহারাষ্ট্র অ্যাসোসিয়েশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টরস বা এমএআরডি (MARD)-কে লেখা ওই চিঠিতে তাঁরা লেখেন— ‘‘পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের চাপ এবং আমাদের পক্ষের বক্তব্য না শোনা— এটা কোনও তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি হতে পারে না।''
প্রতিবাদীরা হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পায়েলের বাবা-মা'ও। বিভিন্ন দলিত ও তফশিলি সংগঠনের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেই সংগঠনের অন্যতম বঞ্চিত বহুজন আঘাদি।
ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ প্রতিবাদীদের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করার কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তিনি মহারাষ্ট্রে যাবেন। ‘‘আমাদের ছোট বোনটার ন্যায়ের জন্য লড়তে'' তিনি সেখানে যেতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, জাতীয় মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে হাসপাতালের অধিকর্তাকে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে এবং কী পদক্ষেপ করা হল সে ব্যাপারেও তাদের জানানোর কথা বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।
রাজ্যের মহিলা কমিশনও হাসপাতালকে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে আট দিনের মধ্যে উত্তর দাবি করা হয়েছে।
ওই তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে নৃশংসতা অ্যাক্ট, র্যাগিং বিরোধী অ্যাক্ট, আইটি অ্যাক্ট ও ৩০৬ ধারায় (আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত ২২ মে স্ত্রীরোগবিশারদ পায়েল তাদবি আত্মহত্যা করেন।