‘সপ্তডিঙা’য় মা, চালতাবাগান লোহাপট্টির পুজোয়
কলকাতা: রাত পোহালেই মহালয়া। পিতৃপক্ষের শেষ। দেবীপক্ষের সূচনা। তার ঠিক আগের সন্ধেয় অর্থাৎ, আজ শুক্রবার উদ্বোধন হল মানিকতলা চালতাবাগান লোহাপট্টি সার্বজনীন দুর্গোৎসবের (Maniktala Chalta Bagan Lohapotti)। পুজোর শুভ সূচনা হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উপস্থিতিতে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক স্মিতা বক্সী সহ রাজ্যের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। উপস্থিত ছিলেন পুজো কমিটির সভাপতি সন্দীপ ভূতোরিয়াও। রীতি মেনে মণ্ডপে প্রতিমার পায়ে ফুল দিয়ে মাতৃ আরাধনা সারলেও দেবীপক্ষের সূচনা না হওয়ায় প্রদীপ জ্বালননি মমতা। তাঁর কথায়, 'আমরা কোনোদিনই লোকদেখানো উৎসবে আগ্রহী নই। অন্তর দিয়ে মাকে ডাকি। তাই দেবীপক্ষের সূচনা না হওয়ায় মনের ভক্তি দিয়েই মাকে আহ্বান জানালাম।' মঞ্চের চারপাশে তখন নাচে-গানে মেতেছেন একঝাঁক তরুণ-তরুণী। মণ্ডপের বাইরে ঢাকে বোল তুলেছেন মহিলা ঢাকিরা।
চলতি বছরে ৭৭ তম বর্ষে পা রাখল মানিকতলা চালতাবাগান লোহাপট্টির পুজো। পুজোর থিম ময়ূরপঙ্খী নৌকো। রূপকথায় যে নৌকোয় পাল তুলে রাজা ভেসে বেড়াতেন প্রমোদ বিহারে। বণিক-সওদাগর যেতেন বাণিজ্যে। পিতল এবং তার সঙ্গে অন্য ধাতু মিশিয়ে সেই নৌকো সেজেছে নানা উজ্জ্বল আলোয়। নৌকোর সঙ্গে মিলিয়ে দেবী প্রতিমাও পিতল ও শঙ্কর ধাতুর মিশ্রণের এফেক্টে সাজানো। মা এখানে থিমের। দশ হাতে তাঁর দশপ্রহরণ। দেবী বরাভয় মুদ্রায় অভয় দিচ্ছেন শত্রুবিনাশের। পরিবেশবান্ধব এই পুজোয় দূষণ কমাতে শুধুই এলইডি আলো ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানালেন পুজো প্রেসিডেন্ট সন্দীপ ভূতোরিয়া।
পুজো উদ্বোধনের পাশাপাশি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে বলেন, 'আমাদের রাজ্য-দেশ পরধর্মসহিষ্ণু। উৎসবের দিনগুলো যাতে সবাই আনন্দে মেতে উঠতে পারেন তার জন্য সবার কাছে অনুরোধ, গুজবে কান না দিয়ে, হিংসা না ছড়িয়ে পুজোয় মাতুন। ভালো থাকুন, ভালো রাখুন। আপনাদের পাশে রাজ্য প্রশাসন রয়েছে।' পুজোর মঞ্চ থেকে এরপরে প্রকাশ পায় চালতাবাগান পুজো কমিটির শারদীয়ার গান। উদ্বোধন করেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
থিম গানের তালে এরপর বেজে ওঠে ঢাক। তালে তালে নাচতে থাকেন নৃত্যশিল্পীরা। চারপাশের অজস্র মানুষের ঢল তখন যেন জানান দিচ্ছিল, পুজোর আর মাত্র সাত দিন বাকি।