উত্তর কলকাতার বনেদি সার্বজনীন বলতেই প্রথম সারিতে যেসমস্ত পুজোর নাম উঠে আসে তার মধ্যে অন্যতম শিমলা ব্যায়াম সমিতি। ইতিহাস বলছে, ৯৪ বছর আগে, ১৯২৬ সালে শিমলা ব্যায়াম সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন বিপ্লবী অতিন্দ্র নাথ বসু। ওই বছরেই তিনি শুরু করেন দুর্গাপুজো। লক্ষ্য, বাঙালির সেরা উৎসবকে সার্বজনীন করে তোলা। কারণ, এর আগে উত্তর কলকাতার দুর্গাপুজো সীমাবদ্ধ ছিল জমিদার বাড়িতে। একই সঙ্গে এই সমিতি যুক্ত ছিল বিপ্লবী কাজকম্ম এবং সমাজসেবা এবং শরীরচর্চার সঙ্গে। ১৯২৯ সাল থেকে এই পুজোয় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ সহ একাধিক বিপ্লবী ও সেইসময়ের রাজনৈতিক নেতারা যুক্ত হন এই পুজোতে। তবে নেতাজির মতো করে তাঁরা ওতোপ্রতো ভাবে জড়িত ছিলেন না এই পুজোয়। তাই পরে এই পুজো নেতাজির পুজো নামে খ্যাত হয়।
Durga Puja 2019: শিমলা ব্যায়াম সমিতিতে টিম ‘গুমনামী', নেতাজি স্মরণে সৃজিত-অনির্বাণ-তনুশ্রী-প্রসেনজিৎ
নেতাজির ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই বারোয়ারি পুজো তাই থিমের স্রোতে গা না ভাসিয়ে ঐতিহ্যের আবাহন করে প্রতিবছর। এবারেও সেই ঘরানা বজায় রেখে মন্দিরের আদলে তৈেরি হচ্ছে মণ্ডপ। জানালেন, পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা সোমনাথবাবু। প্রতিমা পাঁচচালার। ডাকের সাজের নয়, বুলেনের সাজ সেজে উঠবেন মা। সোনালি জরিতে জড়ানো থাকবে তাঁর শাড়ি, গয়না। এছাড়াও, মায়ের গায়ে থাকবে তাঁর নিজস্ব গয়না টিকলি, চুড়ি, নেকলেস, নাকছাবি, ত্রিনয়ন।
Durga Puja 2019: ‘বিন্দুতে শুরু বিন্দুতেই বিলীন' থিম সাজছে বাদামতলা আষাঢ় সংঘ
ব্যাসাম সমিতির ক্লাব ঘর ঘিরে রয়েছে বিশাল মাঠ বা পার্ক। নেতাজির সময় তাতে বিপ্লবী মেলা বসত। মেলায় থাকত তখনকার বিপ্লবীদের জীবনগাথা। এখন সেই জায়গা নিয়েছে বাচ্চাদের বিনোদনের নানা সামগ্রি। সাজগোজ, খাবারের মোট ১৫টি স্টল। রোজই ঢালাও খাওয়ানো হয় খিচুড়ি, পাঁচরকম ভাজা, তরকারি, চাটনি, পায়েস ভোগ। পুজোর উদ্বোধন হবে ২রা অক্টোবর। পাবলিসার্স অ্যান্ড বুক সেলার গিল্ডের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ক ও বৃদ্ধাশ্রমের মহিলারা একসঙ্গে মিলে পুজো উদ্বোধন করবেন। পুজো কার্নিভ্যালে অংশ নেওয়ার পর প্রতিমা বিসর্জন হবে।