বুথ ফেরত সমীক্ষাকেও (Exit Poll) ছাপিয়ে গেল বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গ কার্যত গেরুয়া সুনামি দেখল বৃহস্পতিবার। আসন সংখ্যা থেকে শুরু করে ভোট শতাংশ দুটো ব্যাপারেই তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলল বিজেপি। অন্যদিকে বামেরা কার্যত প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হল। এখনও পর্যন্ত কোনও কেন্দ্রেরই সম্পূর্ণ হল এসে পৌঁছয়নি। তবে অর্ধেক বা তার বেশি ভোট গণনা হয়ে গিয়েছে বেশিরভাগ আসনে। আর সেই হিসেবে দেখা যাচ্ছে বিকেল পর্যন্ত রাজ্যের ৪২ টি আসনের মধ্যে ২৪টিতে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। ১৭টিতে এগিয়ে আছেন বিজেপি প্রার্থীরা, কংগ্রেসের তরফে এগিয়ে রয়েছেন অধীর চৌধুরি । আরও একটি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। বামেরা ভোট গণনা শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত একবারও কোনও আসনে এগিয়ে যেতে পারেনি।
যতটুকু যা ফলাফল সামনে এসেছে তা থেকে বোঝা যাচ্ছে প্রথম এবং দ্বিতীয় হওয়ার লড়াইটা হচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। লড়াই কতটা সমানে সমানে তা বোঝা যাচ্ছে প্রায় প্রতি মুহূর্তে। বিভিন্ন কেন্দ্রে নানা ধরনের বদল ঘটছে। সকাল থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনার ব্যারাকপুর আসনে মাঝেমধ্যেই পরিবর্তন হয়েছে। কখনও সামান্য কিছু ঘটে এগিয়ে গিয়েছেন বিজেপির অর্জুন সিং। কখনও আবার এগিয়ে যাচ্ছেন দীনেশ ত্রিবেদী। একইভাবে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রেও দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছিল। একটা সময় পর্যন্ত পিছিয়ে ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিন্তু এই খবর লেখার সময় বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি চলচ্চিত্রজগতের যে সমস্ত তারকারা এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তাঁদের মধ্যে মুনমুন সেন ছাড়া সকলেই মোটামুটি ভালো জায়গাতেই রয়েছেন। আসানসোল কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন মুনমুন সেন। তাঁর বিপক্ষে আছেন বাবুল সুপ্রিয়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী প্রায় লাখ খানেক ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বাবুল। অন্যদিকে যাদবপুর থেকে এগিয়ে আছেন তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী, বসিরহাট থেকে এগিয়ে আছেন নুসরাত জাহান। ঘাটালের প্রার্থী দীপক অধিকারী (দেব)-ও এগিয়ে রয়েছেন বেশ কিছু ভোটে।
সম্পূর্ণ ফল প্রকাশিত না হলেও কয়েকটি ইন্দ্রপতনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। বাঁকুড়ায় এ মুহূর্তে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের থেকে লাখ খানেকেরও বেশি ভোটে পিছিয়ে আছেন রাজ্যের প্রবীণতম মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একইভাবে তৃণমূলের কয়েকজন হেভিওয়েট নেতাও পিছিয়ে রয়েছেন। তবে এসব এগিয়ে থাকা বা পিছিয়ে থাকার হিসেব। কোনও চূড়ান্ত ফলাফল নয়।
এবার ইভিএম গোনা শেষ হলে ফলাফলের সঙ্গে ভিভিপ্যাট মিলিয়ে দেখার কাজ হবে। নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রত্যেকটি লোকসভার মধ্যে যে কটি বিধানসভা আছে সেগুলিকে ধরে ধরে ভিভিপাট মেলান হবে। প্রতিটি লোকসভার মধ্যে থাকা বিধানসভার পাঁচটি করে ইভিএম মেলানো হবে। মানে হরেদরে একেকটি লোকসভা কেন্দ্রের ৩০টি ভিভিপ্যাট মেশিনের সঙ্গে ইভিএম মিলিয়ে দেখা হবে। এই গণনার কাজ শেষ হলে চূড়ান্ত ফলাফল জানা যাবে।