কলকাতা: অবশেষে সত্যিই কি পালাবদল ঘটতে চলেছে রাজ্য রাজনীতিতে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবিষ্যত বাণী ‘৪২ এ ৪২'কে কার্যত নস্যাত করে প্রাথমিক গণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে সবুজ শিবির অনেকটাই বিপর্যস্ত গেরুয়া ঝড়ে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ২২টি আসন পেয়ে সার্বিক ভাবে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাড়ে ইতিমধ্যেই নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। রাজ্যে তাদের আসন সংখ্যা ১৮। যা প্রমাণ করছে, সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে মোদি-ম্যাজিক চালু এ রাজ্যেও।
প্রাথমিক গণনার ফলপ্রকাশের পরে তাই স্বাভাবিকভাবেই খুশির হাওয়া বইছে রাজ্য বিজেপি দফতরে। উল্লসিত কৈলাস বিজয়বর্গীয়। দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, মোদি নন এবারের নির্বাচনে দিদি ফিনিশ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান, মুখ্যমন্ত্রীর ক্যারিশমা এবার যেন কিছুটা হলেও ম্লান। সারদা-নারদা-রাজীব কুমার সহ একাধিক অঘটনে কিছুটা হলেও বিপর্যস্ত শাসকদল। তাই, নোট বাতিল, বেকারত্বের মতো একাধিক বাণে মমতা প্রধানমন্ত্রীকে বিদ্ধ করলেও তা তেমন ছাপ ফেলেনি সাধারণের মনে। একই সঙ্গে এবারের নির্বাচনী প্রচারে মোদি-অমিত শাহের প্রচার কিছুটা হলেও ছাপ ফেলেছে রাজ্যবাসীর মনে। তারই প্রভাব পড়েছে ব্যালট বক্সে। ফলে, শাসকদলের শক্তিশালী বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসে দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও পোক্ত ঘাঁটি গড়তে চলেছে গেরুয়া শিবির।
অথচ ২০১৪ সাল, অর্থাত গত বছরের নির্বাচনেও ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। সেই বছর ৩৪টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সরকার গড়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস পেয়েছিল ৪টি আসন। বিজেপি এবং বামদলের ভাগ্যে জুটেছিল ২টি করে আসন। সেই জায়গা থেকে মাত্র পাঁচবছরেই যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল রাজ্য বিজেপি তাতে কিছুটা হলেও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে সবুজ শিবিরে। দিদির গড়ে ক্রমশ মোদির প্রবেশ কপালে ভাঁজ ফেলেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কপালে। এখন দেখার, ২০১৯-এর নির্বাচনে তৃণমূল-বিজেপির এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়ের হাসি হাসে কোন দল।