Delhi Election Results 2020: তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি
হাইলাইটস
- ভোটে সরাসরি লড়াই হয় আপ ও বিজেপির
- আবারও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ফেরার ইঙ্গিত ছিল এক্জিট পোলে
- ৭০ আসনের দিল্লি বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতায় প্রয়োজন ৩৬টি আসন
নয়াদিল্লি:
মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। ২০১৫ বিধানসভা নির্বাচনে পাওয়া ৬৭ থেকে কমে তাদের কটিমাত্র কমে এবারের আসনসংখ্যা হল ৬২। দলীয় কার্যালয়ে আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, “দিল্লিকে ভালবাসি”, সরকারের কাজ এবং স্থানীয় সমস্যার ওপর ভিত্তি করে দেশের রাজধানীতে “নয়া রাজনীতি”র জন্ম বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শাহিনবাগে নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে হাতিয়ার করে অমিত শাহের নেতৃত্বে ব্যাপক প্রচার করেছিল বিজেপি, এবারের নির্বাচনে সামান্যই ফল পেল তারা। দুই অঙ্কের আসনসংখ্যাও পেল না কেন্দ্রের শাসক দল, তবে গতবারের থেকে নিজেদের আসন বাড়িয়েছে গেরুয়া শিবির। এবারের নির্বাচনে ৮টি আসনে ফুটেছে পদ্ম। আপের এই জয়ের প্রশংসা করে একে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে জয় বলে মন্তব্য করেছে বিরোধীরা। এবারের নির্বাচনে খাদ্য, বিদ্যুৎ, জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন স্থানীয় ইস্যুর ওপরেই জোর দিয়েছিল শাসকদল আম আদমি পার্টি।
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফ সংক্রান্ত ১০টি তথ্য এখানে:
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, আম আদমি পার্টির জয় নয়া রাজনীতির জয়। দলের সদর দফতরে ব্যাপক জনসমাগমের মাঝে এদিন আপ সুপ্রিমো বলেন, “দিল্লির মানুষের বার্তা, তাঁরা স্কুল, মহল্লা ক্লিনিক, ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ এবং বিনামূল্যে জলের পক্ষে ভোট দেবেন। এটা দেশের জন্য বড় বার্তা”।
পরে একটি রোড শো করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শহরের মধ্যস্থলে হনুমান মন্দিরে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে চান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে লাইভ টেলিভিশনে হনুমান চালিশা পাঠ করেছিলেন তিনি, তার সমালোচনা করেছিল বিজেপি, এদিন অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, “আজ মঙ্গলবার, হনুমানজীর দিন। দিল্লিকে আশীর্বাদ দিয়েছেন হনুমানজী”। ভোটের ফলাফলের পর, হনুমান মন্দিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।
জয়লাভ করেছেন উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিয়োদিয়া, অতিসি, রাঘব চাড্ডার মতো এক ঝাঁক আপ নেতা। নিজের কেন্দ্রে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীতার মুখে পড়েছিলেন মনীশ সিসোদিয়া, তবে শেষ পর্যন্ত বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্র সিং নেগিকে ২,০০০ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়লাভ করেন তিনি।
পিছিয়ে থাকার কয়েকঘন্টা পর, ৯,০০০ ভোটের ব্যবধানে অতিশির জয়ের খবর আসে, প্রাথমিকভাবে তিনিও চাপে ছিলেন বলে জানিয়েছেন। আপ প্রার্থী বলেন, “আমি মনে করি, দিল্লির মানুষ ঠিক করেছেন। তাঁদের মনে একটাই নাম এবং সেটা অরবিন্দ কেজরিওয়াল”।
ওখলা কেন্দ্রটি ধরে রেখেছেন আপ বিধায়ক আমানাতুল্লা খান, ওই কেন্দ্রেই রয়েছে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহিনবাগ, যেখানে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্দে চলছে ব্যাপক প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। ৭১,০০০ ভোটের ব্যবধানে ওখলায় জয়লাভ করেন তিনি। অমিত শাহকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “ওখলার মানুষ বিদ্যুৎ এর শক দিয়েছে”।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে অভিনন্দন জানিয়েছেন একাধিক বিরোধী নেতা, দিল্লির মানুষ বিজেপির বিজেপির রাজনীতিকে প্রত্যাখান করেছেন বলে মন্তব্য করেছে বিরোধী শিবির। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি তাদের সবকিছু, অর্থ, এজেন্সি দিয়েও কিছু করতে পারেনি। তারা পুরোপুরি ভেসে গিয়েছে। ভারত জুড়ে তাদের সাম্রাজ্য ডুবছে”।
শাহিনবাগ বিক্ষোভ নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে মেরুকরণের অভিযোগ তুলেছে আপ, তারা জানিয়েছে, এই ফলাফল দেখিয়ে দিয়েছে, আসল দেশপ্রেম হল মানুষের জন্য কাজ করা। মনীশ সিসোদিয়া বলেন, “আমাদের জয় প্রমাণ করে দিয়েছে যে, আসল দেশপ্রেম হল, যদি রাজনীতিতে সুযোগ পাওয়া যায়, তাহলে মানুষের জন্য কাজ করা। শিক্ষা, হাসপাতাল...দিল্লি প্রমাণ করে দেবে যদি কোনও সরকার ভালভাবে কাজ করে, তারা জিততে পারে”।
এবারে মহারাষ্ট্রে তাদের ৩৫ বছরের জোট ভেঙে সরকার গড়েছে শিবসেনা, তাদের বক্তব্য, দিল্লির ফলাফল প্রমাণ করেছে যে, একটি দেশ “মানুষের জন্য, মনের কথায় নয়”। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বেতারবার্তাকে কটাক্ষ করে এমন মন্তব্য তাদের।
বিজেপির দিল্লি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি বলেন, “আমরা ঘৃণার রাজনীতি করি না। আমরা সবকা সাথ, সবকা বিকাশে বিশ্বাসী। পরিবেশ, পরিস্থিতি অনুযায়ী, নির্বাচনের সময় অনেক কথা বলা হয়েছিল। আমরা হারের কারণ পর্যালোচনা করব”। এদিন সকালেও তাঁর দল ৫৫টি আসনে জিতবে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। এবারের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ২৭০ জন সাংসদ, ৭০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, এবং রাজ্যের নেতাদের দিয়ে হাইভোল্টেজ প্রচার করেছিল গেরুয়া শিবির। বাড়ি বাড়ি ঘুরেও প্রচার করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ।
এবারের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারপর্বে ব্যাপক গুরুত্ব পায় নাগরিকত্ব সংশোধন আইন, জাতীয়জনসংখ্যাপঞ্জী এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জী, দুমাসের প্রচার পর্বে ব্যাপক ঝড় ওঠে বাকযুদ্ধের। বহু বিজেপি নেতার সভায় “গুলি ছোঁড়ার” স্লোগান ওঠে, মুখ্যমন্ত্রীকে “জঙ্গি” বলেন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
Post a comment