রাজ্যে ভোটের আবহে হিংসার আঁচ পড়ল কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তিতেও।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতায় অমিত শাহের রোড শো হয়। রোড শো কেন্দ্র করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে, বিজেপি বিরোধী স্লোগান এবং তাঁদের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। ভেঙে দেওয়া হয় বিদ্যাসাগরের মূর্তি। আর তারপরেই নিজেদের ফেসবুক এবং ট্যুইটারের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ছবি লাগালেন তৃণণমূল নেতারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ লাঠি দিয়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দিয়েছে বিজেপির দুষ্কৃতীরা। বড় লজ্জার বিষয়”। নিজের ট্যুইটারের প্রোফাইল পিকচারে বিদ্যাসাগরের ছবি লাগিয়েছেন তিনি। ট্যুইটে ডেরেক ও ব্রায়েন লেখেন, “এই ঘটনার নিন্দা করার কোনও ভাষা নেই। আমি নিজে লজ্জা পাচ্ছি...যে বাংলার মানুষ হিসেবে আমরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে সম্মান জানাতে পারলাম না”।
শেষ দফার ভোটের আগে বিজেপি-তৃণমূল লড়াই তুঙ্গে: ১০টি তথ্য
তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সমালোচনায় মুখর হয়েছে অনান্য দলগুলিও। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা ট্যুইটে লেখেন, “বিজেপির গুণ্ডাদের বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনার তীব্র নিন্দা করি। তিনি শুধু বাংলারই নন, সারা দেশের একজন আইকন। এটা আমাদের দেশের সংস্কৃতির অপমান”। নরেন্দ্র মোদীকে তিনি লেখেন, “ক্ষমতার জন্য ক্ষুদার্ত, ভারতীয়. সংস্কৃতির ওপর কোনও সম্মান নেই”।
বাংলায় আমি বহিরাগত নই, দিল্লি গেলে দিদি বহিরাগত হয়ে যাবেন নাকি? অমিত
সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি লেখেন, “শুধুমাত্র একটা মূর্তিই নয়, বাংলার ওপর ধারাবাহিক আক্রমণ। বাংলার সবচেয়ে বড় নবজাগরণের প্রতীকের ওপর হামলা। এরা সবময় বিদ্যাসাগরের চিন্তাধারার বিরোধিতা করবে। কিন্তু বাংলার মানুষ তাতে পা দেবে না”
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরাই মূর্তি ভেঙে তাঁদের কর্মীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয় ট্যুইটে তোপ দাগেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ট্যুইটে লেখেন, তিনি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে, মূর্তি ভাঙার বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের “নোংরা রাজনীতির প্রকাশ”।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে শেষ দফার ভোটপ্রচারে ঝড় উঠেছে, ১৯ মে শেষ দফার ভোটে রাজ্যের ৪২ আসনে ভোটগ্রহণ।
কলকাতার এক বাসিন্দা বলেন, “বিদ্যাসাগর একজন আইকন।বাংলাকে তিনি বর্ণমালা দিয়েছেন। বিধবা বিবাহের প্রচলন করেছিলেন তিনি। বাংলার নবজাগরণের একজন প্রতীক বিদ্যাসাগর”। তাঁর কথায়, “গতকালের ঘটনা খুবই দুঃখজনক---সংস্কৃতির সংঘাত এবং বাংলার রাজনৈতিক অধ্যায়ের কাল অংশ”।