কলকাতার ২৪৫ তম শেরিফ মণিশংকর মুখোপাধ্যায়
কলকাতা: জন্মসূত্রে হাওড়ার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে কলকাতায় এসে প্রেমে পড়েছিলেন কল্লোলিনীর। সেই প্রেমের দৃষ্টান্ত উপন্যাস 'চৌরঙ্গী'। তিলোত্তমা অবশেষে সিলমোহর দিল সেই প্রেমে। কলকাতার ২৪৫ তম শেরিফ (Sheriff of Kolkata) হিসেবে সাহিত্যিক মণিশংকর মুখোপাধ্যায়কে (Mani Shankar Mukherjee) বরণ করে নিয়ে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে শপথ নেন সাহিত্যিক শংকর। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রাক্তন শেরিফ ড. সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। আগামী একবছর সাহিত্যিক তাঁর লেখনির পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে বসে সামলাবেন তাঁর প্রিয়তমা কলকাতার একাধিক দায়িত্ব।
দেশে তখন ইংরেজদের রাজত্ব। কলকাতার দেখভালের জন্য ১৭৭৫ সালে প্রথম তৈরি হয় শেরিফ পদ। সেই সময় এই বিশেষ পদ অলঙ্কৃত করেছিলেন ম্যাকরাবে। এরপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। ইংরেজের রাজত্ব শেষ হয়েছে এক সময়। কিন্তু এই সম্মানজনক পদটি রয়েই গেছে। প্রথম ভারতীয় হিসেবে এরপর ১৮৭৪ সালে এই আসনে বসেন মানেকজি রুস্তমজি। ১৮৭৫-এ কলকাতা প্রথম পায় বাঙালি শেরিফকে। তিনি রাজা দিগম্বর মিত্র।
শপথবাক্য পাঠ করার পর শংকর আন্তরিক ধন্যবাদ জানান শহরবাসী এবং কলকাতা পুরসভাকে। বলেন, তিনি তাঁর পূর্বসূরীদের সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাচ্ছেন। এই সম্মান পেয়ে তিনি আপ্লুত। শেষদিন পর্যন্ত চেষ্টা করবেন নিখুঁত ভাবে দায়িত্ব পালন করার। কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে তিনি স্মরণ করেন পূর্বস্মৃতি। শংকর জানান, খুব অল্প বয়সে চাকরি খুঁজতে এসে প্রথম পা রেখেছিলেন হাইকোর্ট চত্বরে। ১৯৫১ সালে বার অ্যাট ইংল্যান্ডের শেষ আইনজীবী নোয়েল বারওয়েলের 'বাবু' বা মুনসেফের চাকরি করেছিলেন তিনি।
বারওয়েল সাহেবের মৃত্যুর পরেই তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাকে কলমবন্দি করে শংকর লেখেন প্রথম বিখ্যাত উপন্যাস 'কত অজানারে।' এছাড়াও, বারওয়েলের লাইব্রেরি থেকে তিনি অনেক বিষয়ের ওপর বই পড়েছিলেন। শংকরের লেখা উপন্যাস 'সীমাবদ্ধ' আর 'জন অরণ্য'-কে পরে ক্যামেরাবন্দি করেন বিশ্ববরেণ্য পরিচালক সত্যজিত রায়। শংকরের লেখা আরও একটি বিখ্যাত উপন্যাস 'চৌরঙ্গী'ও (Chowrangee) পরে ছবি হয়। এখানে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমার।