লাদাখে সীমান্তরেখা বরাবর উত্তেজনা বেড়েছে ভারত ও চিনের। (ফাইল)
নয়া দিল্লি: ইউএস মধ্যস্থতার প্রস্তাব খারিজ করে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা (Indo-China standoff) সমাধানে জোর দিল নয়া দিল্লি। ইন্দো-চিন সীমান্ত রেখা বা এলএসি (LAC) বরাবর উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সম্ভার বাড়িয়েছে সুই দেশের সামরিক বাহিনী। এই এলাকায় শান্তি ও স্থিতি বজায়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইউএস প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার সেই প্রস্তাব প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানে সীমান্তরেখায় সক্রিয় দুই দেশের বাহিনী। যেহেতু এটা দ্বিপাক্ষিক সমস্যা, তাই মধ্যস্থতার দরকার নেই। এমন ভাবেই ঘুরিয়ে সেই প্রস্তাব ফিরিয়েছে নয়া দিল্লি (New Delhi)। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, "কূটনৈতিক স্তরে দিল্লি ও বেজিং আলোচনা চালাচ্ছে। পাশাপাশি সামরিক স্তরে উত্তেজনা কমাতে আলোচনা করছে দুই দেশের বাহিনী। সীমান্তে শান্তি ও স্থিতি বজায়ে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এই দুই পড়শি দেশ।"
ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই সেনা সম্মেলন, নেতৃত্বে সেনাপ্রধান
আমাদের বাহিনী দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে সীমান্তে সমস্যা মোকাবিলা করছে। আর প্রোটোকল মেনে ব্যবস্থা নিচ্ছে।আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব আর ভূখণ্ডের অধিকার রক্ষা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছি। এদিন এমন দাবিও করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। এদিকে, বুধবার মতপার্থক্যের ছায়া যাতে ইন্দো-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে না পড়ে। বুধবার এমন আবেদন করেছেন চিনা রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েডং। সম্প্রতি ভারত-চিন সীমান্তে এলএসি বরাবর সামরিক সম্ভার বাড়িয়েছে দুই দেশ। সীমান্ত বিতর্ক উসকে দিয়ে ডোকলামে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে পিএলএ বা চিনা সামরিক বাহিনী। কিন্তু এই উত্তেজনা সামরিক মতপার্থক্য নয়, এদিন দাবি করেছেন সুন। তিনি বলেন," আলোচনা করেই এই সমস্যার সমাধান করা হবে।
দুই দেশ নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষায় সক্রিয় হবে। এবং সীমান্তে স্থিতি বজায়ে উদ্যোগী হবে।" তিনি বলেছেন, "দুই দেশের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু সেই পার্থক্যের ছায়া যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে না পড়ে। পারস্পরিক বোঝাপড়া যাতে নষ্ট না হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা আশাবাদী আলোচনার মাধ্যমে পার্থক্য মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।"
একদিনে কলকাতায় আক্রান্ত ৫৭, এখনও পর্যন্ত দৈনিক সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি
তিনি বলেন, "আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে, কেউ কারও কাছে হুমকির কারণ নয়। ইন্দো-চিন একে-ওপরের কাছে সুযোগ তৈরির ক্ষেত্র। দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করতে হবে।" এদিকে, ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে, আর এরমধ্যেই আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়ে বসল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেদেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটের মাধ্যমে ওই প্রস্তাব দিয়েছেন যে, প্রয়োজনে আমেরিকা ভারত-চিন বিরোধের মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত। সিকিম ও লাদাখ সীমান্তে হঠাৎই চিন এবং ভারতীয় সেনার মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে যে বেজিং লাদাখের কাছে তাদের বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চালাচ্ছে। এমনকী বেশ কিছু চিত্রে এও দেখা গেছে যে, কয়েকটি যুদ্ধবিমানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বুধবারই টুইট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, "আমরা ভারত ও চিন দুই দেশকেই জানিয়েছি যে আমেরিকা তাদের মধ্যেকার ক্রমবর্ধমান সীমান্ত বিরোধের মধ্যস্থতা বা সালিশি করতে প্রস্তুত, ইচ্ছুক এবং সক্ষম। আপনাদের ধন্যবাদ!"