This Article is From May 23, 2020

‘‘সব শেষ’’: আমফানের ধাক্কায় সুন্দরবনের ভবিষ্যৎ রাতারাতি অন্ধকারে, শঙ্কায় বাসিন্দারা

আয়লার আঘাত সামলে সবে নতুন করে উজ্জ্বল হতে শুরু করেছিল সুন্দরবন। হঠাৎই আমফান এসে তার মারণ আঘাত হানল। রাতারাতি আবারও সমস্যার অতলে সুন্দরবনবাসীরা।

‘‘সব শেষ’’: আমফানের ধাক্কায় সুন্দরবনের ভবিষ্যৎ রাতারাতি অন্ধকারে, শঙ্কায় বাসিন্দারা

আমফানের ধাক্কায় সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য টলে গিয়েছে। (ফাইল)

সুন্দরবনের (Sundarbans) কাকদ্বীপ (Kakdwip) অঞ্চলের বাসিন্দা প্রণব বিশ্বাস মহারাষ্ট্র থেকে ছেলে ফিরে আসায় খুশিই হয়েছিলেন। সেখানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তাঁর ছেলে। প্রণববাবুর ইচ্ছা ছিল‌, ছেলে ফিরে এলে দু'জনে মিলে মাছের ব্যবসা শুরু করবেন। কিন্তু সব হিসেব বদলে গেছে গত বুধবার। ঘূর্ণিঝড় আমফানের (Cyclone Amphan) দাপটে ভেসে গেছে ৫০ বছরের প্রণববাবুর যা কিছু সঞ্চয়। বাড়ি ও গবাদি পশুর সঙ্গে ভেসে গিয়েছে তাঁর স্বপ্নরাও। আপাতত ছেলের সঙ্গে তিনিও মুম্বইয়ে ফিরে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতে চান। তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘২০০৯ সালে আয়লার পর আমি নাসিকে গিয়ে সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতাম। কিন্তু বয়স হয়ে যাওয়ায় আমার জায়গায় ছেলেকে কাজে লাগিয়ে দিই বছর চারেক আগে। ১০,০০০ টাকা জমিয়েছিলাম মাছের ব্যবসা শুরু করব বলে। ছেলে ফিরে এলে দু'জনে মিলেই ব্যবসা করার পরিকল্পনা করি। কিন্তু সব শেষ। আমার বাড়ি, আমার সঞ্চয়, আমার গবাদি পশু।''

আমফান-দুর্গত বাংলায় জল, বিদ্যুতের মতো পরিষেবা ফেরাতে সেনার সাহায্য চাইল রাজ্য সরকার

প্রণববাবুর দুই কন্যা বিবাহযোগ্যা। তাঁদের বিয়ে দেওয়ার জন্যও প্রচুর টাকার দরকার। আপাতত তাই তিনি শ্রমিক সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। লকডাউন শেষে যাতে বাবা-ছেলে মিলে ফিরে যেতে পারেন মুম্বইয়ে। রোজগার করতে।

সাইক্লোন অধ্যুষিত এলাকায় যেতে দিলীপ ঘোষকে বাধা

মনে করা হচ্ছে, এভাবেই পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে যাবে সুন্দরবন এলাকা থেকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ উঁচু হয়ে যাওয়ায় ক্রমশ আতঙ্ক বাড়ছে সুন্দরবনকে ঘিরে। বুধবারের ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সেই আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

রাজ্যের সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা জানাচ্ছেন, সব কিছু আবার নতুন করে শুরু করতে হবে এই এলাকায়।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অফ ওশিয়ান অর্গ্যানিক সায়েন্সেস'-এর ডিরেক্টর সুগত হাজরা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানাচ্ছেন, ‘‘যেভাবে এলাকার পরিকাঠামো ধাক্কা খেয়েছে, তার ফলে মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। আগামী মাসগুলিতে আমরা দেখব এখান থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ অন্যত্র চলে যাবেন এলাকা ছেড়ে। আয়লার পরে যা কিছু পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল, সব শেষ হয়ে গেল আমফানে।''

আয়লার প্রকোপে সমস্ত শস্যক্ষেত্রে নোনতা জলে ভরে যাওয়ায় হাজার হাজার তরুণ ও যুবকরা গ্রাসাচ্ছেদনের জন্য অন্য চিন্তাভাবনা করা শুরু করেন। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য রমেশ গিরি জানাচ্ছেন, ‘‘গত তিন-চার বছরে সেই সব যুবকরা আবার ফিরে এসে নিজেদের মতো করে ছোটখাটো ব্যবসা করা শুরু করেন। সবে যখন সবকিছু উজ্জ্বল হতে শুরু করেছে আমফান এসে তার মারণ আঘাত হানল।''



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.